Featured Post
নিবন্ধ ।। সোনালি সন্ধ্যা-স্মৃতিতে কাকদ্বীপে অনুষ্ঠান ও শান্তির ঠাঁই কালিকাপুর ।। অরবিন্দ পুরকাইত
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
সোনালি সন্ধ্যা-স্মৃতিতে কাকদ্বীপে অনুষ্ঠান ও শান্তির ঠাঁই কালিকাপুর
– অরবিন্দ পুরকাইত
'এত লোক কেন জানিস? সন্ধ্যা মুখার্জি তো এখানে কখনও আসেনি তাই।' সন্ধ্যাকে হাসতে হাসতে বললেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, যিনি কিনা সুন্দরবন অঞ্চলেরই জয়নগর থানার বহড়ুর জাতক। অন্য শিল্পী মানববাবু, অর্থাৎ মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়। বলা যায় মুখোপাধ্যায়ত্রয়ী!
'আরে বাবা সে যে কী লোক হয়েছিল!' তাঁর হেমন্তদার কথাই ঠিক। এর আগে অনেক শিল্পী গান শুনিয়ে গেলেও, সুন্দরবনের কাকদ্বীপে সঙ্গীত পরিবেশন করতে আসা সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের (১৯৩১ – ২০২২) সেই প্রথম। তার কিছুদিন আগেই তো প্রখ্যাত শিল্পী মান্না দে এখানেই এসেছিলেন সঙ্গীত পরিবেশনে। কী সব ডাকাতি-টাকাতি হয়েছিল, তিনিও পড়েছিলেন ডাকাতের হাতে! মান্নাবাবু তাঁদের সাবধান করে দেন।
১৯৮৬-৮৭ সালের দিক সেটা। ধান উঠে গেছে মাঠের। একটু বৃষ্টি হয়ে ন্যাড়া মাঠে একটু কাদাও হয়েছে সেদিন। সেই কাদার উপর দিয়ে চলেছে গাড়ি। 'সে এক দারুণ অভিজ্ঞতা!' সারা দেশে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের বহু আসরে অংশগ্রহণ করেছেন; উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের সঙ্গে সঙ্গে যে কাব্যগীতি, আধুনিক, ছায়াছবির গান গাওয়াও অত্যন্ত প্রিয় তাঁর এবং আমশ্রোতার কাছে তাতেই তাঁর অধিক জনপ্রিয়তা ও পরিচিতি – তাও গেয়েছেন অনেক জায়গায়; কিন্তু সেই গীতশ্রীর কাকদ্বীপের মতো সুন্দরবনের এক গ্রামে গাওয়ার অন্যরকম আনন্দের কথা তাঁর আত্মস্মৃতির পাতায় যেভাবে স্থান লাভ করেছে, ৪০৬ পাতার বইটিতেই (৪০৭ থেকে ৪৩২ পাতায় অন্যান্য তথ্য) তার অন্য দৃষ্টান্ত দুর্লভ।
সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় অনুষ্ঠান-কৃপণ। এই নিয়ে সারাজীবনই অনুযোগ শুনতে হয়েছে তাঁকে। কিন্তু অনুষ্ঠান নিয়ে সন্ধ্যা নিজে কোনোদিন সেইভাবে মাথা ঘামাননি। বহুদিন তা দেখতেন তাঁর দুই দাদা। সন্ধ্যার মোটামুটি একটা মত নেওয়া হত এবং সেটা মূলত দাদাদের বন্দোবস্তের অনুকূলেই যেত। সন্ধ্যা নিশ্চিন্তে গানেই মনোযোগ দিতে পারতেন। প্রেমিক বামুন নয়, তাই পরিবার মত না দেওয়ায় আঠারো বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে সন্ধ্যাকে, বলা বাহুল্য – সেই সঙ্গে, বহু বিখ্যাত গানের গীতিকার শ্যামল গুপ্তকেও! বয়সকালে বিয়ে বলে, আমন্ত্রণই জানাননি বহু মানুষকে! বিয়ের পরেও অনুষ্ঠান-টাকাপয়সা ইত্যাদি ব্যাপার দাদারাই দেখতেন। সন্ধ্যার সেটা ভাল লাগত না, শেষে বিয়ের ন'বছর পরে, কান্নাকাটিতে অগত্যা রাজি হয়েছিলেন তাঁর 'শ্যামলবাবু'। শ্যামলবাবু ভালভাবেই বুঝতেন তাঁর স্টার গায়িকা-স্ত্রীর গুরুত্ব, যাঁর পেশাগত জীবনের কিছুই প্রায় তিনি জানতেন না। সাধারণ মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে তিনি, সেলিব্রিটি বউয়ের টাকাপয়সা নিয়ে নাড়াচাড়া করতে চাননি। পরে ধাতস্থ হয়ে উঠেছেন। সন্ধ্যার মনে হত যে তাঁর স্পষ্টবাক, অর্থলোভহীন স্বামীর জন্যই কেউ তাঁকে 'এক্সপ্লয়েট' করতে পারেনি। শ্যামলবাবুকে অত্যন্ত ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ও জেদি বলেছেন সন্ধ্যা। 'শ্যামলবাবু আমাকে বলেন ওঁর মানসিকতা অন্যরকম হলে, অন্যরকম বলতে আমি টাকাপয়সার কথাই বলছি, অর্থের লোভে উনি আমাকে অনেক জায়গায় গাইতে বলতে পারতেন। সেটা উনি করেননি। এটা ওঁর একটা বিরাট গুণ।' – লিখেছেন সন্ধ্যা। সন্ধ্যা জানিয়েছেন যে অনুষ্ঠানের ব্যাপারে, 'অর্গানাইজারদের সঙ্গে শ্যামলবাবু প্রথমে কথাবার্তা বলেন। কোথায় ফাংশন, কারা এসেছেন আমাকে জানান। তারপর আমার সেক্রেটারির সঙ্গে অর্গানাইজাররা বাকি কথা বলেন। কোথায় ফাংশন হচ্ছে সেই জায়গার ব্যাপারেও আমি ভাল করে খোঁজখবর নিতে বলি।' এখানে এসবে আর বেশি বিস্তৃতিতে দরকার নেই আমাদের, মোদ্দা কথা হল, তারকা সঙ্গীতশিল্পী হিসাবে সন্ধ্যার অনুষ্ঠানের সংখ্যা কম। আর কাকদ্বীপের ক্ষেত্রেও নিশ্চয়ই খোঁজখবর নিয়েই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে বাড়তি সহায়ক হয়েছিল – আন্দাজ করা যায় – সঙ্গী হিসাবে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়কে পাওয়া।
মঞ্চে উঠেছেন সন্ধ্যা গান গাইতে। চারদিক খোলা। যেদিকে তাকান খালি মানুষের মাথা চোখে পড়ে, তিলধারণের জায়গা নেই! দু-রকম বসার ব্যবস্থা – চেয়ার ও মাটিতে। 'কত বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে দেখলাম। তাঁদের মুখের চামড়া কুঁচকে গেছে, ঝুলে পড়েছে। কিন্তু চোখে-মুখে কী উৎসাহ। গ্রামের লোক, অনেকেই পুঁটলিতে বেঁধে মুড়ি-চিঁড়ে নিয়ে এসেছেন। কেউ কেউ সঙ্গে হ্যারিকেনও এনেছেন। আমি সব দেখেশুনে অবাক।' শুনেছিলেন হাজার পঞ্চাশেক লোক হয়েছিল। তো সন্ধ্যা যথারীতি মঞ্চে উঠে বসে গাইতে শুরু করলেন। হঠাৎ দেখেন অন্তত হাজারখানেক মহিলার দল দাঁড়িয়ে বলতে শুরু করল, 'আমরা কিছু দেখতে পাচ্ছি না, আমাদের দিকে মুখ করে গাইতে হবে।' কী আর করেন! পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ চারদিক, তাঁদেরই একজন এসে বললেন, 'আপনাকে আমরা ডায়াসের ওপর একটা চেয়ার দিচ্ছি। চেয়ারে বসে যদি গান সকলেই আপনাকে দেখতে পাবে।' তাই হল। মঞ্চের উপর ডায়াস, তার উপরে চেয়ারে বসে আবার গান শুরু করলেন তিনি। দাঁড়িয়েও গাইতে হয়েছিল শেষে।
নিশ্চয়ই এসব তিনি ভালই উপভোগ করেছিলেন। জানিয়েছেনও তা অকুণ্ঠচিত্তে।
এইখানে, কলকাতালগ্ন আমাদের এই জেলার সঙ্গে সন্ধ্যার আর এক নিবিড় যোগের কথা মনে করতে পারি আমরা, যা তিনি তাঁর আত্মস্মৃতিতে উল্লেখ করেছেন। তার আগে মনে করে নিই যে কলকাতার ঢাকুরিয়ার ষোলো নম্বর ব্যানার্জি পাড়া লেনের জাতিকা ডাকনামে দুলদুল সন্ধ্যার বেড়ে-ওঠা অনেকটাই যেন গ্রামীণ পরিবেশে! ত়াঁদের দেশ ছিল জিরাট-বলাগড়ে, যদিও সেখানে কোনোদিন যাননি তিনি। ঢাকুরিয়ায় তাঁদের বাড়িটি ছিল প্রায় এক বিঘে জমির উপরে এবং গত শতকের তিনের দশকে সেই জায়গাটি গাছপালা-পাখিপক্ষ অধ্যুষিত। 'চারদিকে আম, জাম, কাঁঠাল, পেয়ারা, সুপারি আর নারকেল গাছে ভরা। যেদিকে তাকানো যায় শুধু সবুজ আর সবুজ। মাঝে মাঝে টলটলে জলের বড় বড় পুকুর। সারা বছর ধরে ছ'টা ঋতু যে তাদের রূপ-রঙ আর অজস্র বৈচিত্র্য নিয়ে আসছে আর চলে যাচ্ছে, বুঝতে কোনও অসুবিধেই হত না।' সামনে দুটো বিরাট মাঠ। বাড়িতে গোয়াল ছিল, গরু পোষা হত ঠাকুরদার আমলে। বাড়ির ভিতরের জমিতে বেশ বড় কালো কালো তরমুজ হত। পাখির গানে তাঁদের ঘুম ভাঙত। 'বাতাসে গাছের পাতার ঝিরিঝিরি মিষ্টি একটানা শব্দ ঘুম পাড়াত। এরকম এক নৈসর্গিক পরিবেশে দু'চোখ ভরে আকাশ দেখে আর মাটির বুকে কারণে অকারণে ছোটাছুটি করে আমি বড় হয়েছি। এই পরিবেশে গ্রামের সকলকে আপন ভাবতে পারতাম।' আসলে খুব ঘরোয়া আর নিরহঙ্কারী ছিলেন সন্ধ্যা। বলতে দ্বিধা করেননি, 'আজ থেকে প্রায় সত্তর বছর আগে ঢাকুরিয়া গ্রামই ছিল।' জ্ঞান হাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকুরিয়াকে ভালবেসে ফেলেছিলেন তিনি, ভালবেসে ফেলেন কলকাতা শহরকে। 'তবে আমাদের ছোটবেলার কলকাতা তো আর এতবড় ছিল না। গড়িয়াহাটের পর ঢাকুরিয়া সহ দক্ষিণ কলকাতার এদিকটা একদম পাড়া-গাঁ ছিল।' জানিয়েছেন যে তাঁদের ছোটবেলায় যাদবপুর, গড়িয়া ইত্যাদি অধিকাংশ জায়গাই বেশ নিচু ছিল, বেশির ভাগ জলা জায়গা। 'আমরা যে যোধপুর পার্ককে দেখি এখন, সেই জায়গা এতই নিচু ছিল যে মাটি কেটে ভরাট করে উঁচু করতে হয়েছিল।' কালবৈশাখীর দাপাদাপি গ্রামের ছেলেমেয়ের মতোই উপভোগ করেছেন, আম কুড়িয়েছেন। নানারকম আমের গাছ ছিল তাঁদের – তপ্ত বৈশাখে গাছ থেকে আম পেড়ে নুন-লঙ্কা, তেল, চিনি দিয়ে তারিয়ে তারিয়ে খাওয়া। নুন-লঙ্কা আর তেঁতুল সহযোগে খেতেন কাঁঠালের মুচিমাখাও! বড় এক পুকুর ছিল এবং তাতেই স্নান (মা-জেঠিমারা কোঁচড়ভরা কড়াইশুঁটি খেতে খেতে স্নানে যেতেন!)। গয়না হারিয়ে যাওয়া এবং পরে মাটি কাটানোর সময় পাওয়া – একেবারে গ্রামের প্রতিরূপ! ১৯৫০ সালে শচীন দেববর্মণের ডাকে বোম্বাই গিয়ে, বছর-দুই কোনও প্রকারে কাটিয়ে, নাম-যশ-অর্থের হাতছানি উপেক্ষা করে শচীনকর্তাকে না জানিয়ে চলে এলেন আজন্ম প্রিয় ঢাকুরিয়ার টানে!
তাঁর বড়দি সরসীর বিয়ে হয়েছিল বর্তমান দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার কালিকাপুরে। বয়সে অনেকটাই বড় সেই দিদি খুব ভালবাসতেন সন্ধ্যাকে। মাঝে মাঝেই বেড়াতে যেতেন সেখানে তিনি। সন্ধ্যা লিখেছেন যে সেখানে সম্ভবত পদ্মরাজ বলে এক জাত ছিল এবং তাঁর দিদিকে যিনি দুধ দিতেন তিনিও পদ্মরাজ। তাঁর দিদিকে তিনি বউমা সম্বোধন করতেন। একবার কালিকাপুর গিয়েছেন সন্ধ্যা, তাঁকে একদিন দেখে তিনি বলেছিলেন, 'দেখো বউমা, এই যে তোমার বোন না, একদিন দেখো কী যে এ হবে।' কী হবে জিজ্ঞেস করায় দিদিকে বলেছিলেন তিনি, 'দেখে নিও ভাগ্য ওকে কোথায় নিয়ে যাবে।' দিদির প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছিলেন সন্ধ্যার কপালে কী একটা চিহ্ন দেখেই নাকি বুঝতে পেরেছিলেন তিনি। দুই বোনে হেসেছিলেন সেদিন।
প্রতিবার ঢাকুরিয়ার বাড়ি থেকে দিদির কালিকাপুর যাওয়ার সঙ্গী হতেন সন্ধ্যা। মনখারাপ বাঁচাতে, দিদিই সঙ্গে যাওয়ার কথা বলতেন আর সেখানে যাওয়ার কথায় নেচে উঠতেন তিনি। অকালবিধবা-দিদির ভাসুর, জা, দেওরের সঙ্গেও যেতেন। কালিকাপুর স্টেশনে নেমে মেঠো পথে খানিকটা গেলে দিদির বাড়ি, খুব ভাল লাগত তাঁর হেঁটে যেতে। বড় হয়ে, অজস্র কাজে হাঁপিয়ে উঠলে – ভাল না লাগলে, একটু শান্তির জায়গার কথা মনে হলে প্রথমেই মনে পড়ত এই কালিকাপুরের কথা! শীতকালে ভোরের ট্রেনে কালিকাপুর নেমে (ক্যানিং লাইনে, সোনারপুরের পরের স্টেশন) গরম চাদর মাথায় দিয়ে বা মাফলার জড়িয়ে বোনপোর সঙ্গে আলের উপর দিয়ে গল্প করতে করতে যেতেন দিদির বাড়ি। তখনও হয়তো গ্রামের অনেকেই ঘুম থেকে ওঠেনি, নিস্তব্ধ চারদিক। 'মেয়েরা কেউ কেউ উঠে তাদের বাড়ির উঠোন গোবর দিয়ে সুন্দর করে নিকোচ্ছে। ভোরের কী যে একটা অদ্ভুত শান্তির পরিবেশ! ফল-ফুল-ধানগাছ সব কিছু মিলিয়ে পাখিডাকা গ্রামের একটা ভাল লাগা গন্ধ আমি নিতাম আমার বুক ভরে। ততক্ষণ পুবের আকাশ রাঙিয়ে সূর্য উঠছে ধীরে ধীরে।' দিদির বাড়িতে গিয়েই হাত-পা ছড়িয়ে বসতেন তিনি। কোনওদিন হয়তো সারারাত ধরেই ক্যারাম খেলছেন! কালিকাপুর হাইস্কুলের হেডমাস্টারমশাই দিদির ভাসুর সতীশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ও ক্যারাম খেলতে ভালবাসতেন। লুডো খেলতেও ভাল লাগত সন্ধ্যার।
'সেদিন আমার গাইবার মুডটাই অন্যরকম ছিল। অজস্র গান গেয়েছিলাম।' – লিখেছেন সন্ধ্যা। সঙ্গী বাদ্যকররা বাজিয়েছিলেনও সুন্দর। কিন্তু বাজনায় কখনও কখনও চাপা পড়ে যাচ্ছিল তাঁর গলা। তাঁর গাওয়ার সময় একটাই বেহালা থাকে, সেদিন ছিল বাড়তি আরও একটি। কখনও কখনও বাজনা একটু জোরে হয়েই থাকে, কিন্তু শ্রোতারা চেঁচামেচি করে উঠলেন। সন্ধ্যার কানে এল শ্রোতারা বলছেন, 'এত বাজনা কীসের রে বাবা!' সঙ্গে সঙ্গে তাঁর বাজনদারদের একটু আস্তে বাজাতে বললেন তিনি।
ঠাকুর-দেবতার গান শুনতে ভালবাসেন গ্রামের মানুষ। 'জয়া' ছবির 'হরেকৃষ্ণ নাম দিল প্রিয় বলরাম' গাওয়ার সময় শ্রোতাদের একটা অংশ তাঁর সঙ্গে গলা মেলালেন, 'দাবি' ছবির 'এসো মা লক্ষ্মী বোসো ঘরে'র বেলাও একই ব্যাপার! শিল্পীও গাইতে গাইতে 'চার্জড' হয়ে গেলেন।
'সত্যি, কাকদ্বীপের ওই ফাংশনে গিয়ে আমি ভীষণ আনন্দ পেয়েছিলাম।' – লিখেছেন সন্ধ্যা তাঁর আত্মস্মৃতিতে।
মেয়েটার মনে হত যে, কালো মেয়ের যাতে ভাল পাত্র জোটে, তার জন্যই তাঁর সঙ্গীতশিক্ষার ব্যবস্থা! এটা তো সামাজিক অন্যতম একটা বৈশিষ্ট্যই ছিল তখন, কিন্তু এই মেয়ে পৌঁছে গেলেন এই বাংলা থেকে দেশের গর্বের আসনে! বড়ে গোলাম আলির প্রিয় এই ছাত্রীটি আজীবন শিক্ষার্থীই ভেবে গেছেন নিজেকে, যে কারণে গান শেখাতেনও না কাউকে। ভাবতে গর্ব অনুভূত হয় যে, যুগন্ধর এই শিল্পীর জীবনস্মৃতিতে এমনভাবে উজ্জ্বল হয়ে রইল কাকদ্বীপ ও কালিকাপুর!
অবলম্বন : ওগো মোর গীতিময় – সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, অনুলিখন – সুমন গুপ্ত+, সাহিত্যম্, ২০০১
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন