জিজিবিষা
অদিতি চক্রবর্তী
"একদিন খোলা মাঠে গিয়ে চিৎকার করে বলবো, একদিন নদীর পারে গিয়ে চিৎকার করে বলবো, চিৎকার করে বলবো আর কোনো ভয় নেই আর, কোনো ভয় নেই!"বলতে বলতে হাঁপিয়ে ওঠে কস্তুরী , কলকাতায় তার আত্মীয় স্বজন তেমন কেউ নেই ! জলপাইগুড়ির থেকে স্টেটব্যাঙ্কে চাকরি নিয়ে কলকাতায় আসার পর থেকেই সে এই সুনীতি দির বাড়িতে পেয়িং গেস্ট হয়ে আছে, ষাট ছুঁই ছুঁই সুনীতি দির সাথে যে আত্মীয়তা গড়ে উঠেছে তা নিকট কোনো আত্মীয়র সাথেও হয়ে ওঠে না,ওর কথা শুনে হেসে ওঠেন সুনীতি দি বলেন" সত্যি কবে যে এই দিন আসবে?" "কী জানি!" " জানো দিদি আমাদের ব্রাঞ্চের অর্ধেকের বেশি এমপ্লয়ি পজেটিভ!" এক নিঃশ্বাসে বলতে থাকে কস্তুরী।
অনেক কথা, অফিস,কলিগ, সংক্রান্ত নানা কথা , সুনীতি রায়, কস্তুরীর সুনীতি দি , বলে ওঠেন" আচ্ছা বেশ বেশ, যাও এবার স্নানে যাও, আমি ময়না কে বলি খাবার গুলো গরম করতে" , কস্তুরী হাসতে হাসতে ওর নিজের ঘরে চলে যায়, ফ্রেশ হয়ে খাবার টেবিলে ফিরে আসে, সুনীতি দি ফোনে কার সাথে কথা বলছেন, কিন্তু কিছু বলছেন না শুধু শুনেই যাচ্ছেন,আর মুখ টা থমথম করছে! তারপর আস্তে আস্তে ফোন অফ করে এসে বসেন ডাইনিং টেবিলে, হঠাৎ করে সুনীতি দির এই পরিবর্তন কস্তুরীর চোখ এড়ায় না ," কার ফোন দিদি"? কস্তুরীর জিজ্ঞাসু দৃষ্টি র দিকে তাকিয়ে সুনীতি দি আস্তে করে বলেন মেয়ের," "ও"কস্তুরী একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে" তোমাকে বলছে তো যে আমাকে আর এখানে রাখা ঠিক হবে না"! সুনীতি দি মুখ টা ফিরিয়ে নেয়! পরদিন সকালে ই কস্তুরী লাগেজ গুছিয়ে ই বেড়িয়ে পড়বে এমন সময় সুনীতি দি এসে দাঁড়িয়েছেন তাঁর চোখে মুখে বিষন্নতা" তুই চলে যাবি , আমি তো আবার একা "" কিন্তু তোমার মেয়ে তো" সুনীতি দি বলে ওঠেন" চায়না কিন্তু ও তো কোনো দিন ও এসে থাকবে না!" "কিন্তু আমি তো বাঁচতে চাই রে" কস্তুরী বসে পড়ে ডাইনিং টেবিলের চেয়ারে!
------------------------------
অদিতি চক্রবর্তী
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন