google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re সুখের পায়রা ।। শিউলী ব্যানার্জী (মুখার্জী) - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫

সুখের পায়রা ।। শিউলী ব্যানার্জী (মুখার্জী)

নবপ্রভাত

সুখের পায়রা

শিউলী ব্যানার্জী (মুখার্জী) 



"একটু মন দিয়ে শুনুন ......ডাক্তার রায় ভিজিটে আসছেন .....সকলে একটু এলার্ট থাকবেন ....আর হ্যাঁ যাদের যা অসুবিধা সব ভালো করে বলবেন আর ওষুধ গুলো ঠিক মতো বুঝে নেবেন ..........।"
 নিভা দি ...হ্যাঁ সিটি হটপিটালের হেড নার্স নিভা দত্ত জেনারেল ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া রুগী দের একটু বেশ জোর গলাতেই  এই নির্দেশ দিয়ে গেলেন । নিভা দত্ত ভীষন ভালো মানুষ,  ব্যবহার ভীষন ভালো,  বিশেষ করে রোগীদের সাথে খুব যত্নে ও স্নেহের সাথে কথা বলেন সেবা যত্ন করেন। এক ডাকে নিভা দি কে সবাই চেনে। মুখে  সব সময় তার হাসি লেগে থাকে। সদা হাস্যময়ী নিভা দি। যাই হোক যথা সময়ে ডাক্তার রায়  জেনারেল বেডের রুগী দেখছেন তাদের সমস্যা শুনছেন আর ওষুধ লিখে দিচ্ছেন।  জেনারেল ওয়ার্ডের পাশেই 17 নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন আর এক পেসেন্ট মনরমা সেন। উনার বয়স  চুয়াত্তর বছর। সাতদিন হোল একই অবস্থায় আছে অক্সিজেন চলছে। আসলে উনি ব্রেন স্টোকে আক্রান্ত হয়েছেন। বাকশক্তিও চলে গেছে। ডাক্তার রায় উনাকে দেখছেন সঙ্গে নিভা দি। ডাক্তার জিজ্ঞাসা করলেন উনার বাড়ির লোক কেউ আছেন বা এসেছেন। নিভা দি উত্তর দিল স্যার উনার বাড়ি থেকে আজও কেউ আসেনি। সেই প্রথম দিনে একজন এসে ভর্তি করে দিয়ে গেছে তার পর আজও কারো দেখা নেই। সেদিনকার মতো ডাক্তার রায়ের  রাউন্ড শেষ হল। পরের দিন ভোর বেলায় নিভা দি  17 নম্বর ওয়ার্ডে মনরমা দেবীকে দেখতে এলেন। এসে দেখেন এক অবাক কান্ড একটা সাদা পায়রা মনরমা দেবীর গায়ের উপর বসে আছে।  খোলা জানালা দিয়ে এসে ঢুকেছে। অনেকক্ষণ ধরেই গায়ের উপর বসেছিল। সেদিনের মতো পায়রাটি নিভা দিকে দেখা মাত্রই উড়ে চলে গেল । পরের দিন আবার যখন নিভা দত্ত মনরমা দেবীর কাছে এসেছেন এমন সময় ঐ সাদা পায়রাটিকে আবার দেখলেন মনরমা দেবীর গায়ের উপর বসে আছে ঠোঁট ঘষছে গায়ে। তাকে দেখেই ফুড়ুত করে পালিয়ে গেল।  নিভা দি কয়েক জন স্টাফ কে জিজ্ঞাসা করাতেই বললো দিদি সাত দিন ধরে একই ভাবে পায়রাটি আসে আর মনরমা দেবীর গায়ে বসে কিছু সময় থেকে উড়ে চলে যায় ।   খোঁজ নিয়ে জানা গেছে  হাসপাতাল লাগোয়া কাছের পার্কেই মনরমা দেবী মর্নিংওয়াক করতেন আর ঐ সাদা পায়রাটিকে খেতে দিতেন রোজ। পায়রাটি খুব প্রিয় ছিল ওনার। নিভা দি বললেন...... দেখো.. সবাই..." মনরমা দেবীর বাড়ির মানুষেরা উনাকে ফেলে রেখে চলে গেছেন, কিন্তু পাখিটা ভুলে নি অসময়ে ঠিক ওনার খোঁজ নিয়ে যাচ্ছে"।কথাই বলে  সুখের পায়রা ,কিন্তু আজ  মনরমা দেবীর  দুঃখের দিনের সাথী হয়েছে। এ ভাবেও ভালোবাসার ঋন শোধ হয়! ....নিভা দির মুখে সেই হাসি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন