google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re সত্যজিৎ রায়ের লেখনী ।। চন্দ্রমা মুখার্জী - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫

সত্যজিৎ রায়ের লেখনী ।। চন্দ্রমা মুখার্জী

নবপ্রভাত

প্রিয় লেখা


মন ভালো করার ওষুধ – সত্যজিৎ রায়ের লেখনী

চন্দ্রমা মুখার্জী

          "আপনাকে তো কাল্টিভেট করতে হচ্ছে মশাই" – এই কথাটার সঙ্গে পরিচয় যাঁর হাত ধরে, তাঁকেই সত্যি কাল্টিভেট করতে হয়। ছোটবেলায় এঁনার সঙ্গে যদিও প্রথম পরিচয় ঘটে 'গুপি গাইন বাঘা বাইন' সিনেমার মাধ্যমে, কিন্তু ওঁনার সাহিত্যকর্মের সঙ্গে পরিচয় ঘটে ফেলুদার মাধ্যমে।

          হ্যাঁ, আমি বিশ্ববরেণ্য চিত্রপরিচালক ও লেখক সত্যজিৎ রায়ের কথা বলছি। প্রথম ফেলুদা কবে কোন গল্প দিয়ে শুরু করেছিলাম, আজ আর তা মনে পড়ে না। কিন্তু ঐ লেখার মাধ্যমেই ফেলুদা, তোপসে ও জটায়ুকে ভালোবেসেছিলাম।

          তারপর ধীরে ধীরে সত্যজিৎ রায়ের অন্যান্য লেখার সঙ্গে পরিচয় হতে শুরু করল। ফটিকচাঁদ, সুজন হরবোলা – এই বইগুলি পড়তে আজও ভীষণ ভালো লাগে। তাছাড়া প্রোফেসর শঙ্কু, তারিণীখুড়ো এই গল্পগুলোও খুবই আকর্ষণীয়। তাছাড়াও সত্যজিৎ রায়ের লেখা অসংখ্য ছোটগল্প – পটলবাবু ফিল্মস্টার, স্পটলাইট, বঙ্কুবাবুর বন্ধু, ব্রাউনসাহেবের বাড়ি, বাতিকবাবু, ক্লাস ফ্রেন্ড, অনাথবাবুর ভয়, অনুকূল প্রভৃতি বারবার পড়লেও পুরোনো হয় না।

          সত্যজিৎ রায়ের 'একেই বলে শুটিং' পড়ে শুটিং কিভাবে হয়, তার খুঁটিনাটি – এইসব আমরা জানতে পারি। এখন যদিও শুটিং – এর অনেক ভিডিও পাওয়া যায়। কিন্তু যখন এগুলি সহজলভ্য ছিল না, তখন এই বইটি পড়েই আমরা শুটিং সম্বন্ধে অনেককিছু জানতে পারতাম।

          'যখন ছোট ছিলাম' পড়ে রায়বাড়ির কথা, সত্যজিৎ রায়ের ছোটবেলার কথা জানতে পারি। উনি যে সাহিত্য ও সিনেমা দুদিকেই কিভাবে সমানভাবে আকৃষ্ট হয়েছিলেন তাও জানতে পারি। নিজেই নিজের ছবি তোলা যা আজকে Selfie নামে পরিচিত তা কিন্তু তিনিই প্রথম তুলেছিলেন।

          সত্যজিৎ রায় বিভিন্ন ধরনের গল্প লিখেছেন, আবার বহু বিদেশি গল্প অনুবাদও করেছেন। তাঁর বিভিন্ন গল্পে বিদেশি গল্পের ছায়াও পাওয়া যায়।

          সত্যজিৎ রায় আমার প্রিয় লেখক হয়ে ওঠার মূলে ওঁনার লেখায় সহজ – সরল, প্রাঞ্জল ভাষার ব্যবহার। অত্যন্ত আধুনিকমনস্ক গল্প, ভাষাও ভীষণ ঝরঝরে। ওঁনার লেখায় না কোন অতিরিক্ত কথা থাকে, না থাকে কঠিন ভাষার বাহুল্য। ঠিক যতটা দরকার ততটাই থাকে। আর কোন একটা বিষয়কে খুব বিস্তারিতভাবে, বিষয়টার গভীরে গিয়ে বুঝিয়ে থাকেন তিনি। এইজন্যই তাঁর লেখা কখনো ক্লান্তির সৃষ্টি করে না।

          যখনই কোন কারণে মন বিক্ষিপ্ত বা খারাপ থাকে, সত্যজিৎ রায়ের লেখা পড়ে মন শান্ত ও ভালো হয়ে যায়। তাই উনি আমার প্রিয় লেখক। ওঁনার লেখা আমার যেকোনো রকম মানসিক পরিস্থিতির সঙ্গী।

==============

চন্দ্রমা মুখার্জী

বি সি ৮৩, সমরপল্লী, কৃষ্ণপুর, কলকাতা ৭০০১০২

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন