google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re কবিতাঃ সুজাতা মিশ্র (সুজান মিঠি) - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

রবিবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৯

কবিতাঃ সুজাতা মিশ্র (সুজান মিঠি)

 

বন্দে মাতরম



ছুটতে ছুটতে দোকানে এলো বুলি, হাঁপাতে হাঁপাতে 
বললো, "উ লালুদাদা, এক কিলো সাদিনতা দাও দিকিন
মুর বুন ভাইগুলান খাচ্ছেক, আমু চাইলম,তো বলে 'যা,
কিনে লিয়ে আয়।' দাও তো মুকে, খাই বেসটি করে।"
লালু দেখলো, অনেকদিন পর সুযোগখান পেয়েছে সে,
বলে, "উটা তো দুকানে পাওয়া যায় লা কিনা, চল মুর 
সাথে, লিয়ে আসবি। আর গুরমা গরম খাবি।"

স্বাধীনতার স্বাদ পেতে বুলি লালুর পিছন পিছন গিয়ে 
ঠেকলো গ্রামের শেষ প্রান্তের ভাঙা মন্দিরে, লালুর
শক্ত দুটো হাত বুলিকে টু ফ্যা করতে দিল না। 
রক্ত আর কান্না কাদার সঙ্গে মিশে বয়ে যেতে লাগলো 
সারা শরীর জুড়ে তার। লালু স্বাধীনতা খায়িয়ে চলে গেল।

সন্ধেবেলায় টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গেল বাপমায়ে, আর 
তারপর উদুম মার। নিস্তেজ শরীরটা উল্টে পড়লো 
খড়ের বিছানায়।
দিনদশেক বাদে যখন বুলি ঘর থেকে বেরোয়, পথে
লালুর সাথে দেখা, "এ বুলি, বল কেনে, সাদিনতা কেমন
খেতে? আর খাবি লাকি?"

একদিন দুদিন তিনদিন রোজ রোজ প্রতিদিন তাকে
সাদিনতা খাওয়ার প্রস্তাব দেয় লালু। আর তারপর
কেটে গেল এক বছর। ফিরে এলো আবার সেই দিন।
স্বাধীনতা দিবস। যা বুলি জেনে গেছে, চিনে গেছে।
তার বুন টেঁপিকে নিয়ে যাচ্ছে লালু, সেই মন্দিরে।
স্বাধীনতা খাওয়াতে আবার। খানিক আগে স্কুলের
মাঠে তোলা পতাকাখানা নিয়ে ছুটতে ছুটতে গেল বুলি
টেঁপির হাতগুলো সজোরে টিপছে লালু, টেঁপির কান্না 
সাদা তখনো। সজোরে মাথায় ঘা, একটা একটা পরপর
কয়েকটা। চিৎকার করে ওঠে বুলি, 
"ই লালুর বাচ্চা, দেক কেনে, ইটা সাদিনতা, ইটা সাদিনতা, ইটা মুক্তি।
ই লালু, ইটা সাদিনতা, মরার আগে একবার শুইনে ল
বন্দেমাতরম, বন্দেমাতরম, বন্দেমাতরম।"
____________