google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re নিবন্ধ: শেফালী সর - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

রবিবার, ১৮ আগস্ট, ২০১৯

নিবন্ধ: শেফালী সর

 

 কেমন আছেন আমার দেশের মানুষ 


      আমি বৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ভারতের একজন সাধারণ নাগরিক ও পশ্চিম বঙ্গের অধিবাসী। দীর্ঘ পরাধীনতার নাগপাশ থেকে ভারত মুক্ত ১৯৪৭সালের ১৫ই আগষ্ট। একদিকে সাম্প্রদায়িকতা অন্যদিকে ক্ষমতা লিপ্সা অখন্ড ভারতবর্ষের স্বাধীনতার অন্তরায় হয়ে দাঁড়ালো।আর তাই অখন্ড ভারতবর্ষের স্বাধীনতার পরে পেলাম খন্ডিত ভারতবর্ষের স্বাধীনতা। শুরুতেই সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্তের শিকার হলাম,যার যন্ত্রণা আজ ও বহন করতে হচ্ছে ভারতীয় নাগরিকদের।
    স্বাধীন ভারতবর্ষের রাষ্ট্র পরি চালনায় দিকনির্দেশনার জন্য যে লিখিত সংবিধান গৃহীত হলো, সেই সংবিধানে শিক্ষার মৌলিক অধিকারের অন্তর্ভূক্তি হল না। শিক্ষা ক্ষেত্রে তাই টালমাটাল অবস্থা। এই বিষয়ে নানান সমীক্ষা নানান পরিবর্তন ও পরিবর্ধন হয়েছে। তবুও সঠিক নিশানা পায়নি দেশের মানুষ। এতো গেল শিক্ষার কথা।
       হঠাৎ এক সময়ে দেখা গেল দেশের কিছু মানুষ দলবদ্ধ হিংসায় উন্মত্ত হয়ে উঠছে। পঞ্চায়েতি শাসন ব্যবস্থা ও তার থেকে উৎপন্ন নূতন গণ নেতৃত্ব ই আমাদের এই রাজ্যে দলবদ্ধ হিংসার প্রকাশ ঘটাচ্ছে। গ্রাম ও আধা শহরাঞ্চলে প্রায়ই দৃশ্যমান। গণপিটুনি, তাৎক্ষণিক বিচার ইত্যাদি হিংসাত্মক ও দলবদ্ধ কার্যকলাপের পিছনে যে পঞ্চায়েতি রাজনীতি ও কায়েমী শক্তির সমর্থন অথবা উস্কানি আছে তা বহু আলোচিত বিষয়। হিংসার মূল উৎস ও অনেকাংশ পঞ্চায়েতি  শক্তির মধ্যে এবং পুলিশের হাত থেকে নিরাপদ থাকার রক্ষাকবচ ও এখানে।একথা এদেশের মানুষের মুখে মুখে ঘুরে ফিরে আসে। এজন্য এদেশের মানুষ জন ক্ষমতার কাছে ঘেঁষে থাকতে পছন্দ করে মনে প্রাণে,না চাইলে ও বাধ্য হয়। বিশেষতঃ পুলিশ নিষ্ক্রিয় থাকার জন্যই তাদের মধ্যে আইন হাতে নেওয়ার প্রবৃত্তি বাড়ছে।আর এই পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার কারণ হচ্ছে পঞ্চায়েত নেতৃত্ব মানে ক্ষমতাসীন দল ও দলপতিরাই  এজন্য দায়ী। যে কোন ও  হিংসাত্মক গণরোষের পিছনে যে অসহিষ্ণুতা দেখা যায় তার প্রকৃত কারণ ভোগ বাদ ও বিষয় লিপ্সা। আবার এর প্রসব ক্ষেত্র হচ্ছে জঙ্গি রাজনীতি।এর ফলভোগ করছে আমাদের দেশের মানুষ।
      এই গণপিটুনি তে কারা প্রাণ হারাচ্ছে? দেশের সাধারণ মানুষ। মারমুখী জনতা পিটিয়েছে ডাকাত,তোর,ঠগ, প্রতারক, পকেটমার, গুণ্ডা, মস্তান প্রভৃতি অভিযোগে সন্দেহ বশতঃ।এই যে গণপিটুনির প্রবনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে তার কারণ পুলিশের অপদার্থতা, বিচার ব্যবস্থা ও আইনের দীর্ঘসূত্রতা। এছাড়া সমাজ বিরোধীদের সঙ্গে প্রশাসনের ওঠা বসা আর ক্ষমতার লোভে কেষ্ট বিষটুদের সাথে অন্তরঙ্গতা।
      বর্তমানে দেশের মানুষ আর আগের মতো অন্যের উপর নির্ভরশীল নয়।সে বাধ্য নয় এই একতাবদ্ধ জীবন যাপনে। তাই সে সমাজ কে আঁকড়ে না থেকে একলা চলতে আগ্রহী।যার জন্য সমাজের ভিত আলগা হয়ে পড়েছে। আধুনিক সমাজে শিল্পায়ন ও নগরায়ন প্রভৃতি কারণেও বৃহৎ পরিবার ভেঙে ক্ষুদ্র পরিবারে পরিনত হয়েছে।আগে মানুষ নিজের প্রয়োজনে ই বৃহৎ পরিবার গড়ে তুলতো। এখন সেই প্রয়োজন আর নেই। এই অবস্থায় মানুষে মানুষে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। তার জন্য ই সমাজ আজ বিধ্বস্ত। এছাড়া ও এদেশের নারী সমাজের দুর্দশার অন্ত নেই। ঘরে বাইরে সর্বত্র তাদের বড্ড বেশি নিরাপত্তার অভাব। সর্বত্রই তারা ধর্ষনের শিকার সে যেকোনো বয়েসের নারী।এঘটনা প্রতিনিয়ত বাড়ছে,তার কারণ ও সেই রাজনৈতিক প্রশ্রয়। পুলিশ প্রশাসনের কোনো হেলদোল নেই এব্যপারে। আসলে যারা ধর্ষক তারা কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় আশ্রিত বন্ধু স্বজন। বিস্ময়ের ব্যাপার যে আমরা এ কোন স্বাধীন দেশে বাস করছি যেখানে নারীর স্বাধীনতা আজ ভুলুণ্ঠিত!!!                   
  
 ----------------------:------------------

শেফালি সর, জনাদাড়ি, গোপীনাথপুর, পূর্ব মেদিনীপুর।