অগ্নিঋতু
কোজাগরী পূর্ণিমার দিন মা ঘরে চৌকি পাততেন,
চালগুঁড়ি দিয়ে নানা নক্সা,ছোটো ছোটো পায়ের ছাপ,
মা লক্ষী আসবেন,বসবেন....বসবেন কাঠের চৌকি জুড়ে।
শরৎ এর মনকেমন এক বেগুনি বিকেলে পুজো শুরু হয়ে
শেষ হতে হতে প্রায়ান্ধকার,তারপর প্রসাদ দেওয়া,খাওয়া কত কাজ!
কোজাগরী পূর্ণিমার দিন লক্ষীমন্ত স্ত্রী মা'র পাশে বসে শিখে নিত কত খুঁটিনাটি, ভবিষ্যতে হাল ধরার জন্য
তৈরি হত মাঝি,আর পুঁচকে মেয়েটা আমার
তার ছোট্ট ছোট্ট পায়ে ছুট্টে বেড়াত সমস্ত আলপনা জুড়ে,
তার পেছনে দৌড়াত গেল গেল রব।
সেদিনও কোজাগরী,সেদিনও রব উঠল পাশের
বাড়ি থেকে,উঠল আর্তচিৎকার,পোড়া গন্ধর সাথে
পাশের বাড়ির সদ্য বিবাহিত বৌটি দৌড়ে বের হয়ে এল জ্বলতে জ্বলতে।
সেদিন কোজাগরী,অথচ সমস্ত পুজো ফেলে আমার মা,স্ত্রী হিঁচড়ে টেনে আনছে পাশের বাড়ির
পুরুষ নামের সেই কাপুরুষটিকে আর অকাল
মহালয়ায় কোথায় যেন বেজে উঠছে....
"যা দেবী সর্বভূতেষু শক্তিরূপেন সংস্থিতা....!!"
দুষ্টুমির বদলে অঙ্গারের মতো ঘৃনা ঝরে পড়ছে
আমার ছোট্ট মেয়ের দুচোখ বেয়ে....!
কোজাগরী এখন আর শরৎ নয়,কোজাগরী এখন এক অগ্নিঋতু।
================
(অমিতাভ দাস
40/এ বাকসাড়া রোড,বাকসাড়া,হাওড়া - 711110