Featured Post
নিবন্ধ ।। বর্ণময় বঙ্কিম-জীবন ।। শংকর ব্রহ্ম
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
বর্ণময় বঙ্কিম-জীবন
শংকর ব্রহ্ম
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম নৈহাটির কাঁঠালপাড়ায় ২৭ জুন, ১৮৩৮ অর্থাৎ ১৩ আষাঢ় ১২৪৫। রামহরির পৌত্র যাদবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের তৃতীয় পুত্র বঙ্কিমচন্দ্র,মাতা দুর্গাসুন্দরী দেবী।
ছয় বছর বঙ্কিমচন্দ্র কাঁঠালপাড়াতেই কাটান। পাঁচ বছর বয়সে কুল-পুরোহিত বিশ্বম্ভর ভট্টাচার্যের কাছে তার হাতেখড়ি হয়।
১৮৪৪ সালে মেদিনীপুরে তার প্রকৃত শিক্ষার শুরু হয়। মেদিনীপুরের ইংরেজি স্কুলের প্রধান শিক্ষক F.Teed - এর কাছে দেড় বছর ইংরেজি পড়েন।
১৮৪৯ সালে বঙ্কিমচন্দ্র কাঁঠালপাড়ায় ফিরে আসেন। সেখানে শ্রীরাম ন্যায়বাগীশের কাছে বাংলা ও সংস্কৃত পড়েন।
এরপরে ১৮৪৯ সালে হুগলি কলেজে (অধুনা মহসিন কলেজ) ভর্তি হন। এখানে তিনি সাত বছর পড়াশোনা করেন। এখানে ১৮৫৩ সালে জুনিয়র স্কলারশিপ পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে মাসিক আট টাকা বৃত্তি পান। এই বছরেই সংবাদ প্রভাকরে কবিতা প্রতিযোগিতায় কুড়ি টাকা পুরস্কার পান।
হুগলি কলেজ পড়াকালেই বঙ্কিমচন্দ্র ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের সংবাদ প্রভাকর ও সংবাদ সাধুরঞ্জন পত্রিকায় গদ্য-পদ্য লেখা শুরু করেন। তার বহু লেখা এখানে বের হয়। হুগলি কলেজ ১৮৫৬ সালে সিনিয়র বৃত্তি পরীক্ষায় সব বিষয়ে বিশেষ কৃতিত্ব দেখিয়ে তিনি দুই বছরের জন্য কুড়ি টাকা বৃত্তি পান। সে'বছরই হুগলি কলেজ ছেড়ে আইন পড়ার জন্য প্রেসিডেন্সিতে ভর্তি হন এবং প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। পরের বছর ১৮৫৮ সালে তিনি বি.এ. পাশ করে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন, ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টার পদে। সারা জীবন তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে কাজ করে স্ব্রিটিশ সরকারের দুটি খেতাবে পান - ১৮৯১ সালে রায় বাহাদুর এবং ১৮৯৪ সালে কম্প্যানিয়ন অফ দ্য মোস্ট এমিনেন্ট অর্ডার অফ দ্য ইন্ডিয়ান এম্পায়ার ।
তবে তিনি লেখক হিসেবেই বিখ্যাত।
তার প্রথম বিয়ে হয় ১৮৪৯ সালে মাত্র ১১বছর বয়সে নারায়নপুর গ্রামের এক ১৫বছরের বালিকার সাথে। চাকুরিতে যশোর থাকাকালীন ১৮৫৯ সালে সেই পত্নীর মৃত্যুর পর ১৮৬০ সালের জুন মাসে রাজলক্ষী দেবীকে তিনি আবার বিয়ে করেন।
তার কর্মজীবন ছিল বর্ণময়।
যশোর - ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর - ১৮৫৮, ৭ আগস্ট
নেগুয়া (মেদিনীপুর) - ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর - ১৮৬০, ৯ ফেব্রুয়ারি
খুলনা - ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর - যোগদানের সালঃ ১৮৬০, ৯ নভেম্বর
বারুইপুর (২৪ পরগনা) - ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর - ১৮৬৪, ৫ মার্চ
মুর্শিদাবাদ - ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর - ১৮৬৯, ১৫ ডিসেম্বর।
মুর্শিদাবাদ- কালেক্টর - ১৮৭১, ১০ জুন।
কলিকাতা - বেঙ্গল গভর্নমেন্টের অ্যাসিটেন্ট সেক্রেটারি - ১৮৮১, ৪ সেপ্টেম্বর।
আলিপুর - ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর - ১৮৮২, ২৬ জানুয়ারি।
জাজপুর (কটক) - ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর - ১৮৮৩, ৮ আগস্ট।
হাবড়া - ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর - ১৮৮৩, ১৪ ফেব্রুয়ারি।
ঝিনাইদহ - ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর - ১৮৮৫, ১ জুলাই।[১২]
অবসরগ্রহণের তারিখ: ১৮৯১, ১৪ সেপ্টেম্বর।
শেষ জীবনে তার স্বাস্থ্য বিশেষ ভালো ছিল না। ১৮৯৪ সালের মার্চ মাসে তার বহুমূত্র রোগ বেশ বেড়ে যায়। এই রোগেই অবশেষে তাঁর মৃত্যু হয়, এপ্রিল ৮, ১৮৯৪ (বাংলা ২৬ চৈত্র ১৩০০ সাল)।
=======০০০=======
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন