অণুগল্প ।। পারলৌকিক ।। মনোরঞ্জন সাঁতরা - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

Saturday, January 15, 2022

অণুগল্প ।। পারলৌকিক ।। মনোরঞ্জন সাঁতরা


পারলৌকিক

মনোরঞ্জন সাঁতরা



রাকেশের বাবার বয়স ৭০ বছরের কাছাকাছি।এই বয়সেও তিনি বেশ কর্মঠ । শরীরে তেমন কিছু ব্যধি ছিল না। তবে মাঝে মাঝে বুকে ব্যথা অনুভব করতেন। যদিও সেটাকে  তিনি তেমন আমল দেননি। এই বুকের ব্যথায় কিন্তু  লক্ষীপূজার দিন তাঁকে চিরতরে ঘুমের দেশে নিয়ে গেল। রাকেশ বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। মৃত বাবার পারলৌকিক কাজের সমস্ত দায়দায়িত্ব তার উপর। মৃত দেহ সত্কার থেকে শ্রাদ্ধশান্তি সবই তাকে  করতে হবে। অবশ্যই লোকাচার মেনে । এক্ষেত্রে তার পারিবারিক চাপ আছে। তার বাবার পারলৌকিক কাজ ঘটা করে করতে হবে। তার মায়ের আবদার অন্ততঃ শ পাঁচেক লোকজন খাওয়াতে হবে। এদিকে করোনা পরিস্থিতিতে এই আয়োজন করা রাকেশের পক্ষে  কোনমতেই সম্ভব নয়। এ নিয়ে আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে  তার বিরোধ বাঁধে । রাকেশ এর উপায়  খোঁজে। তার মনে পড়ে কিছু দিন আগে দুর্গা পুজোর প্রাকালে বন্যায় কত হাজার হাজার  মানুষের  ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে, সেইভাবে কেউ পাশে দাঁড়াননি। সে ভাবলো ঐসব দুর্গত  মানুষদের জন্য সে যদি কিছু করতে পারে তাহলে তার পিতার আত্মা শান্তি পাবে । ভাবা মাত্রই রাকেশ কাজে লেগে পড়ে।এলাকার বিডিও সাহেবের সাথে সে যোগাযোগ করে।বিডিও সাহেবের পরামর্শ অনুযায়ী রাকেশ তার বাবার  পারলৌকিক কাজ  লোকাচার মেনে অতি সংক্ষেপে শেষ করল। পাড়়া পড়শি আত্মীয় স্বজনদের কটূক্তি উপেক্ষা করে  লোকজন খাওয়ানোর ও অনান্য খরচ বাঁচিয়ে পঞ্চাশ হাজার টাকা সেদিনই মুখ্যমন্ত্রীর ত্রান  তহবিলে দান করল।  সে তার বাবার পারলৌকিকের এই কাজটি  শেষ করে বাবাকে প্রণাম জানালো। মনে মনে বলল, আমাকে তুমি আশীর্বাদ করো আমি যেন তোমার স্মরণে আরো বড় বড় কাজ করতে পারি। 
     
   ************************************

No comments:

Post a Comment