সেই বলছে
না
হৃদয়ে
সাগর শপথ ঢেউ তুলে
যখনি
যাকে বলেছি এই কুমার তীরে এসো
সেই বলেছে
না
তারপর
থেকে এই আমি সেই আমি নেই
সদাশয়
অমানুষ হয়ে গেছি
রক্তে
পশুবৎ সারেঙ্গী বেজে চলেছে একটানা
খাই খাই
ভাব লেগে আছে সারাক্ষণ
ভালো
আছি কি মন্দ আছি
ভেতরে
শিক্ষিত বেকার যুবকের হাউকাউ
সমকালীন
অন্ধকূপ হত্যাকে
বলছে
সাবধান! শেষ দেখে নেবো
আর যে
কিছুই বলার নেই বাকি
যখনি
যাকে বলেছি লাল নদীর দেশে যাবো
সেই বলেছে
না
এই ভাবে
একটি যুগ পালিয়েছে
বেগমতি
হারিয়েছে গঙ্গায়
গঙ্গা
লুকিয়েছে পদ্মায়-আর আমি
কোথায়
পালাবো, পালাবার পথ নেই কোন ?
লোক ভয়ে
ভীত নই সে কথা সবার জানা
তবুও
অজানা কামনার কাছে
তা না
হলে এই তুমুল ডাকাডাকি
কেউ না
কেউ শুনতে পেতো, শুনেনি তাইতো
বলেনি
কেউ এসেছি ফিরে
অসীম
পাওনা সবটা বুঝে নিতে।
বিলাশ
বিক্ষোভ আমার কাছে
নব জাতকের
সংগ্রাম বুকে বাড়ছে বিক্ষোভ
জীবনের
মুখে এসে গেছে রাত জল ছবি তাই
দুয়ারে
দাঁড়িয়ে অবাক চোখের শিকার হচ্ছে
বিদায়ী
প্রহর প্রভা সব
বিলাপ
ছড়িয়ে যেতে যেতে কি যেন বলছে
আবার
বলছে এবার তাহলে যাই ফিরে যাই
অচেনা
অনাদি অতীতের কাছে যাই
ভালোবাসা
যেখানে নাই যাই সেখানে যাই
যেখানে
আদিম ইচ্ছেরা বাড়াবে না হাত
ছোঁবে
না হৃদয় টানবে না চিরহরিৎ অমল প্রাণে
ডাকবে
না কেঁপে কেঁপে ওঠা বৈশাখী কণ্ঠমালা
তরল পবনে
বিজলী ছটায় গোলাপ বাগানে ঝড়
তুলবে
না বলবে না এসো আমার ভিতরে যাই
এই সব
ছেড়ে এখন অনেক দূর এসে গেছি
ফিরে
যাবার সমূহ লোভ পালিয়েছে
ছড়িয়ে
গেছে বারুদ কণা পথে পথে
সেই পথ
আজ আমার কাছে সা-রে-গা-মা-রে
ধা-ধি-না-নাতিন
নারে জীবনকে জ্বালিয়ে যাই।
কথা হোক
বা না হোক
অবহেলা
ভুলে গিয়ে দেখে আসি
বলা আছে
তাও জানি যেতে চাই
কেন যেতে
যেতে তবু ফিরে আসি
বাধা
নেই তাও জানি, যেতে চাই
যাবার
বেলা আগুন খেলা শুরু হয়
ভেতরে
জ্বলে উঠে দেখি খাঁ খাঁ মাঠ
শুকনো
নদী, অবাক চোখে কি যেনো কি
বলতে
গিয়ে থমকে যাই, যেতে হয়
কত যে
অভীরু অসহায় সারাক্ষণ
এইতো
সেদিন থেকে কত কাছাকাছি
সাধ নেই
দেখার তা নয় দেখতে যাইনে
তুমি
আজ ডাইনে সে কথা বলতে চাইনে
শুধু
চোখের দেখা দেখে আসতে চাই
কথা হোক
বা না হোক দেখা যদি পাই।
একেলা
আরো
শুদ্ধ
মানুষ আমাকে বলুক কেউ
এমন বাসনা
কখনো করুক কেউ
সাগরে
খড়গ কৃপাণ নদীর ঢেউ
শুদ্ধ
মানুষ আমাকে বলুক কেউ
দরকার
নেই ; চাইনে, চাইছি শুধু
একেলা
থাকার বিনীত সাহসাবলী
স্মৃতির
আগাছা উপড়ে ফেলার কথা
এখনি
বলতে চাইনে, চাইছি শুধু
একেলা
থাকতে এইতো দিনের মতো
শুদ্ধ
মানুষ আমাকে বলুক কেউ
মাইল
মাইল দূরের পুরনো ছবি
নীলক্ষেত
ফেরা জীবন নয়তো সে যে
আকাশ
কাননে উদাসী যাওয়া আসা
কেবলি
বুকের ব্যথাটা বাড়িয়ে তুলে
ক্ষমা
নেই তার, মাথায় চড়েছে খুন
শুদ্ধ
মানুষ আমাকে বলুক কেউ
সকাল
হারিয়ে বিকেলে দাঁড়িয়ে আছি
সাগরে
খড়গ কৃপাণ নদীর ঢেউ।
ঘুরে
যাই
ঘুরে
যাই ঘুরে যাচ্ছি
তোমাদের
দেখে ঘুরে যাই যেতে হয়
যথাক্রমে
রক্ষণশীল মানব
রমণীর
চোখ, সাপের ছোঁবল
কুকুরের
বিলোল দাঁতের কারুকাজ দেখে
হঠাৎ
অন্যপথে ঘুরে যাই
যেতে
যেতে ভাবি পথ পালটে বেঁচে গেলাম
ভাবতে
ভাবতে একডালা দুর্গ
অবরোধ
হয়ে যাবার খবর এলো
ঘাঘর
নদী ফতেহাবাদ শিবির থেকে
বেরিয়ে
আসছে কারা অচেনা পৃথিবী
লজ্জা
হারিয়ে ছুটছে বৈশাখ হৃদয়ে
সেই পৃথিবীর
মানুষ আমরা
হাজার
রকম দোষের বোঝায়
নেই সোজা
তবু মাঠের ফসল
ঘর বাড়ি
সরল রূপের বঙ্গনারী
নদীর
সোহাগ আকাশ উজাড় আলো
কেড়ে
নিতে পারে এমন বুকের পাটা
নেই কারো,
যদি থাকে কারো মন!
আজীবন
বাঁচা মরার খড়গ হাতে
তৈরী
আছি আসুক শকুন বিভূঁইর।
===================================
শেখ সামসুল হক
কবি, সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধা।
ঢাকা, বাংলাদেশ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন