একটি তৃতীয় শ্রেণীর গল্প
বিদ্যাসাগর আবাসনের তিনতলার সাতাস নম্বরে জন্মদিনের পার্টি চলছে। প্রফেসর সুকুমার বোস আর শিক্ষিকা কুহেলি বোসের একমাত্র ছেলে পাঁচ বছরের সুদীপ্তর জন্মদিন আজ।
কুহেলী তাঁর নতুন কেনা কাঞ্জীভরম পরেছেন, সুকুমার পরেছেন নামী বুটিকে তৈরি পাঞ্জাবী-পাজামা।
"মেনি মেনি হ্যাপি রিটার্ন অফ দ্য ডে সুদীপ্ত। দিস ইস ইয়োর গিফট মাই বয়।"
"ওমা সুদীপ্ত, তোকে কি মিস্টি লাগছে রে সোনা।"
নানা কথার গুলতানিতে ভেসে যাচ্ছে সাতাশ নম্বর। ওদিকে ট্রে-তে পাণীয় সাজিয়ে ঘরময় ঘুরে বেড়াচ্ছে পুতুল। সাতাশ নম্বরের কাজের মেয়ে।
"পুতুল, মিস্টার সরকারকে একটু কোক দিও।"
"দরজার কাছে যাঁরা আছেন তাঁদের কোল্ডড্রিঙ্কস দিয়েছ পুতুল?"
"এই শুনছ, হাতের সিগারেটটা ফেলে ভেতরে এসো। সুদীপ্ত কেক কাটছে।"
"মাম্মা, আমি কেক কাটা দেখব।"
কাটা কেকের সুগন্ধ আর শুভেচ্ছার বন্যায় ভেসে যাচ্ছে ঘর। ওদিকে রান্নাঘরে প্লেটে প্লেটে পুতুল খাবার সাজিয়ে রাখছে পুতুল। নান, মাংস, মিস্টি আরও কত কি।
"চললাম মিস্টার বোস। খুব খেলাম।"
"কুহেলীদি আসি গো। দেরি করলে আর ট্যাক্সি পাবোনা।"
"বাই সুদীপ্ত, বাই আণ্টি।"
"পুতুল, বাসনগুলো কিন্তু মেজে দিয়ে যেও।"
রাত এগারোটা। এখনো একটা বড় হাঁড়ি মাজা বাকি। পুতুল মনে মনে হিসেব করে নেয়। তারমানে আরো মিনিট কুড়ি। তারপরই সে বাড়ি যেতে পাবে। আর পাবে একবাটি মাংস আর সুদীপ্তর কাটা কেকের একটা টুকরো।
পুতুল জোরে জোরে হাত চালায়। বিনু কি এখনো জেগে আছে! যদি ঘুমিয়েও যায়, তবু পুতুল জোর করে ওর ঘুম ভাঙাবে। বলবে, "ওঠো বিনু সোনা, ওঠো। দেখো, মা তোমার জন্য কত খাবার এনেছে। মাংস, কেক। আজ তো তোমার জন্মদিন। ওঠো।"
একটা মোমবাতিও কি খুঁজলে ঘরে পাবে না পুতুল!
---------------------------------------------------
বাবলু কুমার ঘোষাল
গ্রাম: ওলতোড়া, পো: বেলিয়াতোড়
জেলা : বাঁকুড়া
পিন : ৭২২২০৩
কথা : ৭০০১৩১২৬৬১
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন