পোস্টগুলি

Featured Post

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

ছবি
  "নবপ্রভাত" সাহিত্যপত্রের ৩০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে আমরা নির্বাচিত কয়েকজন কবি-সাহিত্যিক ও পত্রিকা সম্পাদককে স্মারক সম্মাননা জানাতে চাই। শ্রদ্ধেয় কবি-সাহিত্যিক-নাট্যকারদের (এমনকি প্রকাশকদের) প্রতি আবেদন, আপনাদের প্রকাশিত গ্রন্থ আমাদের পাঠান। সঙ্গে দিন লেখক পরিচিতি। একক গ্রন্থ, যৌথ গ্রন্থ, সম্পাদিত সংকলন সবই পাঠাতে পারেন। বইয়ের সঙ্গে দিন লেখকের/সম্পাদকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি।  ২০১৯ থেকে ২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত গ্রন্থ পাঠানো যাবে। মাননীয় সম্পাদকগণ তাঁদের প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠান। সঙ্গে জানান পত্রিকার লড়াই সংগ্রামের ইতিহাস। ২০২৩-২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠানো যাবে। শুধুমাত্র প্রাপ্ত গ্রন্থগুলির মধ্য থেকে আমরা কয়েকজন কবি / ছড়াকার / কথাকার / প্রাবন্ধিক/ নাট্যকার এবং সম্পাদককে সম্মাননা জ্ঞাপন করে ধন্য হব কলকাতার কোনো একটি হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে (অক্টোবর/নভেম্বর ২০২৪)।  আমন্ত্রণ পাবেন সকলেই। প্রাপ্ত সমস্ত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকার পরিচিতি এবং বাছাই কিছু গ্রন্থ ও পত্রিকার আলোচনা ছাপা হবে নবপ্রভাতের স্মারক সংখ্যায়। আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য। ঠিকানাঃ নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদকঃ নব

খেপুত সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারের কালীপুজো ।। সুস্মিতা রায় চৌধুরী

ছবি
  খেপুত সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারের কালীপুজো  সুস্মিতা রায় চৌধুরী আমি  সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারের কন্যা।  আমি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার খেপুত গ্রামে আমাদের সাবর্ণ রায়চৌধুরী বাড়ির কালীপুজো সম্পর্কেই এখানে লিখব। কালের সঙ্গে যিনি রমন করেন তিনিই তো মা কালী । না, একেবারেই ভাবার কোন কারন নেই যে  ,বংশপরিচয়ের গর্বে গর্বিতা হয়ে আমি এই লেখা লিখছি  কারণ আমি মনে করি মানুষ পরিচিত হয় তার  কর্মের জন্য ,মনুষ্যত্বের জন্য ,মানবিকতার জন্য তাই এখন আমি  লিখছি  যে এই প্রযুক্তি নির্ভরতার যুগেও আমাদের কয়েক শতাব্দী  প্রাচীন এই কালীপুজো কে কেন্দ্র করে অক্ষুন্ন থাকা  আমাদের বাড়ির সমস্ত সদস্যদের ঐক্যবদ্ধতাকে  নিয়ে, ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার ইচ্ছে টাকে নিয়ে । আমাদের বাড়ির কালীপুজো হল ঐতিহ্যে এবং ইতিহাসের মেলবন্ধনের এক সুন্দর নিদর্শন। যখন বর্তমান যুগে একান্নবর্তী পরিবার ভেঙ্গে গিয়ে তৈরি  হয়েছে নিউক্লিয়ার ফ্যামিলি ,সিঙ্গেল মাদার, সিঙ্গেল ফাদার, লিভটুগেদারের মতো  এইসব ধারণা, যেখানে আমরা আই, মি এন্ড মাইসেল্ফ এর বাইরে গিয়ে কিছু ভাবতেই পারি না ,যেখানে ফ্ল্যাটবাড়িতে একই দেওয়ালের উল্টো দিকে থাকা পরিবারটি কেমন আছে তা

নিবন্ধ।। পাহাড় মারা, কালীপুজোর অঙ্গ- আবদুস সালাম

ছবি
পাহাড় মারা, কালীপুজোর অঙ্গ    আবদুস সালাম সংস্কৃতি শব্দটি দিন দিন তার ব্যাপকতা হারাচ্ছে। সংস্কৃতি শব্দটির  সাথে যে ধর্ম বিশ্বাস অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। ধর্ম ও সংস্কৃতি দুটি বিপরীত অর্থবোধক শব্দ নয় বরং সমানুপাতিক শব্দ।একে অপরটি থেকে বিচ্ছিন্ন নয়। তবে সংস্কৃতির সংজ্ঞা বিশ্লেষণ  করলে আমাদের নানা মত পার্থক্য চোখে পড়ে । তবে যতই পরস্পর বিরোধী মতবাদ থাক না কেন ধর্মীয় বিশ্বাস যে সংস্কৃতির অঙ্গ তার আমাদের মেনে নিতে কারো আপত্তি থাকার কথা নয়। আর এই মতামত ১৯৮২ সালে ইউনেস্কো মেক্সিকো শহরের সম্মেলনে নীতি মালা রচিত হয়। এখানে  যে সংজ্ঞা টি সর্বজনের স্বীকৃতি লাভ করে তার হলো একটি জাতির সংস্কৃতির  ঐতিহ্য হিসেবে যে সকল বিষয় গণ্য করা হবে তা মোটামুটি এই রকম    ____শিল্প , সাহিত্য , স্থপতির নির্মাণ কার্য, বিজ্ঞানী গণের আবিস্কার, মানুষের ধর্মবোধ এবং যে সকল মূল্যবোধ সমগ্র জীবন কে অর্থবহ করে তোলে। মানুষের ভাব প্রকাশের ভাষা, সামাজিক  রীতিনীতি, বিশ্বাস , ঐতিহাসিক নিদর্শন, নৃতত্ত্ব, গ্রন্থাগার এগুলো  সবই সংস্কৃতির অঙ্গ এবং অন্তর্ভুক্ত।   এখানে আরও একটি বিষয়ের উপর জোর দেওয়া হয় যে এতে 

পায়েস উৎসব ।। মধুসূদন লাটু

ছবি
পায়েস উৎসব  মধুসূদন লাটু        'মা, এতো উনুন কী হবে?' পাঁচ বছরের একটি ছোট্ট ছেলের জিজ্ঞাসা আজ থেকে প্রায় ষাট বছর আগে পৌষের এক দুপুরে। মায়ের উওর ছিল 'তিন দিন পরে দেখতে পাবি"। দেখছিলাম মা, মাসী, মামী, পাড়ার আরো অনেকে তিন চার জনের দলে ভাগ হয়ে, সবুজ মাঠে কৎবেল আর আমড়া গাছের ফাঁকে ফাঁকে, মাটি খুঁড়ে মাটির উনুন গড়ছে। অবাক চোখে তাকিয়েছিলাম, আর মনের ভিতর তোলপাড় করছিল এতগুলো ছোট্ট ছোট্ট উনুন দিয়ে এরা কি করতে চাইছে?  যাই হোক্, সত্যিই তিনদিন পর অবসান হলো সেই কৌতূহলের। দেখলাম, সবাই যে যার ঘর থেকে হাঁড়ি-কড়া-খুন্তির সাথে কেউবা আতপ, কেউবা গোবিন্দ ভোগ চাল, ঘী, দুধ, নলেন গুড়, নারকেল, কর্পূর ইত্যাদি নিয়ে একে একে জড়ো হয়েছে সেই সবুজ মাঠের কৎবেল আর আমড়াতলায়। শুকনো কাঠের ধোঁয়া ভেদ করে বাতাসে ম ম করছে ঘরে তৈরী নলেন গুড়, ঘী আর নতুন চালের এক সম্মিলিত সুবাস। তারপর খেজুর তালপাতার চাটাই পেতে একে অপরকে পায়েস পরিবেশন। সে এক অনাস্বাদিত পরমান্নের পরম স্বাদ আজ ও জিভের ডগায়। পায়েসের তারিফ করার সাথে সাথে  মা মাসিদের হাসি ঠাট্টা আমার বোধের বাইরে। আমার নয়নে শুধু এক সুন্দর দৃশ্যের

স্মৃতিকথা: আলোকোৎসবের দিনে ।। সুবীর ঘোষ

ছবি
              আলোকোৎসবের দিনে                                   সুবীর ঘোষ     শ্যামাপুজো নিয়ে আমার প্রত্যক্ষ স্মৃতি একবারের । যে নিঝঝুম শান্ত গ্রামটিতে আমি শৈশব কাটিয়েছি সেখানেও যথোচিত সমারোহে এই পুজো অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে । মধ্যরাতের পুজো । অল্পবয়সিদের কাছে এত রাত পর্যন্ত জেগে থাকা খুব কষ্টকর তবু একবার জোর করে জেগে রইলাম । মন্দিরেই কাটালাম পুজোর মুহূর্তগুলি । পূজাপাঠ চলছে , কাঁসর ঘণ্টা বাজছে । হয়তো বলিও হয়েছিল , ঠিক খেয়াল নেই। মন্দিরে মহিলাদের ভিড়, আমরা নিজের বন্ধুদের নিয়ে ছুটোছুটি হুল্লোড়েই মেতে । এর পর থেকে প্রতি বছরই পুজো এসেছে, চলেও গেছে। পূজাপর্বটি টের পাই দূর থেকে শব্দের সূত্র ধরে , আমার প্রত্যক্ষ যোগাযোগ গড়ে ওঠেনি। এ তো গেল ধর্মীয় দিকটি। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে দেওয়ালি বা দীপাবলি। আলোকোৎসব বলতে পারলে খুশি হতাম । কিন্তু আলোর সঙ্গে জড়িয়ে যে শব্দ-বিভীষিকা তার উল্লেখ না করে থাকা যায় না। ছোটোবেলায় আমাদের সীমিত করে রাখা হয়েছিল তারাবাতি,  চরকি আর রঙমশালের মধ্যেই। একটু বড়ো যারা দোদমা, রকেট,  চকলেট বোম ইত্যাদি ফাটাতে পারত তারা আমাদের চোখে হিরো ছিল। তখনও শব্দ-নিয়ন্ত্রণের ডেসিবেল বাঁধা ব্যবস্থা চা

কবিতা ।। সম্প্রীতি সেতু ।। রতন নস্কর

ছবি
সম্প্রীতি সেতু রতন   নস্কর উৎসব আনে আলোরাঙা ভোর মানুষের মুখে  হাসি হিজলের শাখে মায়া রোদ নাচে লাল ফুল রাশি রাশি । ভোরের বাতাস গায়ে মেখে নদী কুলু কুলু রবে ছোটে জোয়ারের জলে  শিশিরের ঘ্রাণ খিল খিল হাসি ঠোঁটে । উৎসব ঘিরে মাঠে বসে  মেলা মানুষের  ঢল নামে আলো  রোশনাই  ভাব বিনিময় বিকিকিনি  দরদামে । কামরাঙা মেঘে  রামধনু  চিঠি ছেলেবেলা মনে পড়ে মাটির পুতুল বেচে সোনা  দাদু বাঁচার জন্য লড়ে  । ভেঙে যায় বেড়া জাতপাত ভেদ মহা মিলনের মেলা সাড়া  পড়ে  যায়, যাত্রা   নাটক বসে সার্কাস খেলা । প্রিয় পরিজন  আসে  ঘরে ঘরে আনন্দে  মেতে  ওঠা । উৎসব  গড়ে   সম্প্রীতি   সেতু কুসুমের  মতো  ফোটা । মানুষে মানুষে  ভাব  ভালোবাসা আনে  একমুঠো  সুখ মনের  ডানায়  জল ছবি আঁকে বাংলা  মায়ের   মুখ । ************************ রতন  নস্কর গ্রাম +পোস্ট : সরিষা  (বোস পাড়া ) থানা :ডায়মন্ড হারবার জেলা :দঃ ২৪পরগনা সূচক :৭৪৩৩৬৮ ফোন নম্বর :৭০০১১৬৩৯৭০ **************************

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

ছবি
  উৎসবের সৌন্দর্য:  সেকালে ও একালে   সৌরভ পুরকাইত বাংলার উৎসব বাংলার প্রাণ। প্রতিদিনের জীবনযাপনের মধ্যে যখন মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন তাকে বেঁচে থাকার রসদ যোগায় এই উৎসব। কথায় বলে 'বারো মাসে তেরো পার্বণ'।মন আনন্দই চায়।তাই তাকে সজীবতা দিতে,পরিবারের,সমাজের ভালো-মন্দের কথা মাথায় রেখে মানুষ নিজেই সৃষ্টি করে নিয়েছে নানাবিধ উৎসবগুলিকে। একেবারে প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ কখনোই উৎসব বিমুখ ছিল না।উৎসবই তাকে ঘর থেকে বাইরে টেনে এনেছে,চিনতে শিখিয়েছে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার আনন্দকে। উৎসব আসলে প্রাণের সাথে প্রাণের যোগ, হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের যোগ।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন 'সত্য যেখানেই সুন্দর হয়ে প্রকাশ পায় সেইখানেই উৎসব'।হৃদয়ের সেই সুকোমল বৃত্তির জাগরণ যেন ফুটে ওঠা ফুলেরই মতো সত্য ও সুন্দর।এই জাগরণই উৎসব। তাই নানা কিছুর মধ্য দিয়ে,নানা উপলক্ষ্যে এই উৎসব প্রকাশ পায়। প্রাচীনকালে মানুষের হাতে না ছিল পসার, না ছিল পসরা।ছিল মনের আন্তরিকতা,মানুষকে কাছে টেনে নেবার ক্ষমতা।সেটাই ছিল উৎসবের সৌন্দর্য। তাই সেদিনের উৎসবে ক্ষুদ্র,তুচ্ছ উপকরণও প্রাণের উচ্ছ্বাসে মহৎ হয়ে উঠত।সেকালের উৎসবে লোক দেখানো ব্যাপার কিছু

অণুগল্প।। দুলেপাড়ার দুর্গাদাসদের কথা- গোবিন্দ মোদক।

ছবি
দুলেপাড়ার দুর্গাদাসদের কথা  গোবিন্দ মোদক      পুজোতে ওদের যতো না আনন্দ, তার চেয়ে ঢের বেশি আনন্দ প্রতিমা বিসর্জনের সময়। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি --- কেননা, ঠাকুর বিসর্জনের পরই শুরু হয় দুর্গাদাসদের কাজ। দুর্গাদাসরা 'হরিজন পল্লী'র বাসিন্দা। দুর্গাদাস, লক্ষ্মণ, সিধু,  বিশুয়া, হাঁড়িরাম, ভরত, গুপিনাথ, বুধন, রতনা --- এরা কেউ দুলে,  কেউ বাগ্দী, আবার কেউ হাঁড়ি বা ডোম। সমাজ এদেরকে যেমন অচ্ছ্যুৎ করে রেখেছে, ওরাও তেমনি তথাকথিত বাবুদেরকে থোড়াই কেয়ার করে। ওরা নিজেদের সংস্কৃতি নিয়ে থাকে। চোলাই খেয়ে, নর্দমা পরিষ্কার করে, পায়খানা সাফা করে দিন গুজরান করে। ওদের উপরি রোজগার পুজোর শেষে।           ঝপাৎ ! ঠাকুরটা জলে পড়তেই নদীর উপর থেকে লাফ দিয়ে জলে পড়ে দুর্গাদাস, হাঁড়িরাম, বিশুয়া আর রতনা। তারপরে সাঁতরে এসে বিশেষ কায়দায় প্রতিমার কাঠামোটাকে টেনে নিয়ে যায় আঘাটায়। এবার সবাই মিলে কাঠামোটাকে ডাঙ্গায় তোলা চাড্ডিখানা কথা নয় ! তবুও ওরা তা করে। ততক্ষণে প্রতিমার মাটি গলে যায়। এবার খড়-বিচুলির বাঁধন খুলে ওগুলোকে মুক্ত করতেই কাঠ আর বাঁশের পরিষ্কার কাঠামো --- বেশ ভালো দামেই বিক্রি হয়

দীপাবলির এখন তখন ।। সুব্রত দাস

ছবি
দীপাবলির এখন তখন সুব্রত দাস         দুর্গা পুজো শেষ হলো কী, সাথে সাথেই শুরু হয়ে যেত দীপাবলির প্রস্তুতি। আমাদের ছেলেবেলায় এলিডি তো দূর অস্ত, সাধারণ টুনি লাইট দিয়ে আলোকিত করবার প্রতিযোগিতাও ছিল না। যেমনটি এখন দেখা যায়। বাড়ির মহিলারা এক আশ্চর্য উৎসাহে লেগে পড়তেন মাটির প্রদীপ বানাতে। বাড়ির কাছেই রয়েছে গঙ্গা নদী। তার পাড় থেকে পলি মাটি এনে বানানো হতো দীপাবলির প্রদীপ। কোনো কোনো বাড়িতে অবশ্য আকাশবাতির আয়োজনও থাকত। আর এখন ! মানুষের কাছে এত কিছু করবার সময় কোথায় ? চটজলদি বাজার থেকে কিনে আনা হয় প্রদীপ (সংখ্যায় অবশ্য খুবই কম), মোমবাতি, রকমারি টুনি লাইট ইত্যাদি।              দীপাবলির আরেকটি মজাদার ব্যাপার হলো চোদ্দশাক। আমরা বাড়ির চুনোপুঁটিরা ছিলাম একাই একশো ! বড়দের সাথে রীতিমতো পাল্লা দিয়ে চোদ্দশাক জোগাড় করতাম। বলা বাহুল্য, প্রতিবার অন্তত এই বিভাগটিতে ছোটদেরই জয় হতো। এখন তো বাজার থেকে কিনে আনা হয়। এদিক সেদিক ঘুরে যখন শাক নিয়ে বাড়ি ফিরতাম রীতিমতো হই হুল্লোড় পড়ে যেত আমাদের নিয়ে। এখনকার ছেলেপুলেরা চোদ্দ তো দূর অস্ত, ছয়খানা শাকের নাম বলতে গেলে বই বা মোবাইলের সাহায্য নিতে হবে।

স্মৃতিকথা।। আবার পূজো, কিছু স্মৃতি -শর্মিষ্ঠা ঘোষ ব্যানার্জী

ছবি
আবার পূজো, কিছু স্মৃতি  শর্মিষ্ঠা ঘোষ ব্যানার্জী   খুব ছোট বেলায় মহালয়া থেকেই শুরু হত দুর্গাপুজো। ঠাকুমা বলতো "বড় পূজো"। মহালয়ার ভোরে বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের গমগমে কণ্ঠস্বরে মাকে দেওয়া দাদুর  মারফি রেডিও তে মহালয়া শুনবার ফাঁকে যখন দেখতাম ভোরের আলো ফুটে উঠেছে, উঠোন থেকে সাজি ভরে কুড়িয়ে আনতাম শিশিরে ভেজা একরাশ শিউলি। অন্যদিন এত ভোরে ওঠা হত না তাই এত ফুলও পাওয়া যেত না,পাড়ার লোকে সব কুড়িয়ে নিয়ে যেত। সেদিন এত শিউলি দিয়ে বৈঠক খানায় থাকা পূর্ব পুরুষদের বড় বড় ছবিতে মালা দেওয়া হত। তার মধ্যেই মা স্টোভ জ্বালিয়ে তৈরি করত গরম গরম পরোটা আর ঘন দুধের সর ওঠা চা,আগের দিনের কেনা ইয়া  বড়বড় ক্ষীরের গজা। মহালয়া বা স্তোত্র কিছুই বুঝতাম না ,সুরটাই মনে ধরতো বেশ। মন মুখিয়ে থাকতো এই ভোরের আলো গায়ে মেখে কাঁসাইয়ের তীরে ব্রিজের ওপর দাঁড়িয়ে নদীর কুলকুল করে বয়ে যাওয়া,বা নদীর ধারে আদিগন্ত বিস্তৃত কাশের বন দেখার জন্য। প্রভাতের প্রথম সূর্য অরুণ আলোয় রাঙিয়ে দেবে নদীর জল ,এক সুখানুভূতি,এক অনির্বচনীয় আনন্দে ভরে উঠবে মন। ফেরার সময় অবধারিত ভাবে কাশের গুচ্ছ বাড়িতে নিয়ে আসা। মহালয়া

বদলে যাওয়া দুর্গোৎসব ।। সুদর্শন মণ্ডল

ছবি
বদলে যাওয়া দুর্গোৎসব   সুদর্শন মণ্ডল উৎসব কথাটা শুনলে বাঙালি মন ঢাকের তালে নাচতে থাকে। উৎসব হল এক সামাজিক বন্ধন। পহেলা বৈশাখ থেকে চৈত্র সংক্রান্তির দিন পর্যন্ত চলে সে উৎসব। এই জন্যই বোধহয় সকলে বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। কি নেই এই পার্বণের মধ্যে। বসন্ত উৎসব, নবান্ন উৎসব, বর্ষা উৎসব, শরৎ উৎসব আরও কত কি।  বাঙালির সেরা উৎসব দুর্গা পূজা।শুধু সেরা নয় এ পূজা প্রকৃত অর্থেই সার্বজনীন উৎসব। একটা উৎসব কেবল মাত্র আকারে বড় হলেই যে সার্বজনীন হবে, তেমনটা কিন্তু নয়। সার্বজনীন হতে গেলে সকল মানুষকে এক ছাতার তলাই নিয়ে আসার সতন্ত্র বৈশিষ্ট্যটাও থাকা প্রয়োজন। দুর্গা পুজাতে সেটা ষোলো আনাই লক্ষ্য করা যায়। আসলে জাতি ভেদের ঠুনকো কাঁচের দেওয়াল ভাঙতে সক্ষম এই দুর্গোৎসব। এই দুর্গোৎসব রাতারাতি এক দিনেই সার্বজনীন উৎসব হয়ে ওঠে নি। একটা সময় এ পূজা ছিল পারিবারিক পূজা। সে সময় জমিদার ও ধনবান ব্যাক্তিরাই দুর্গা পূজা করতেন। আজকের মতো পাড়াই পাড়াই পূজার প্রচলন ছিল না। তবে ধনবান ব্যাক্তিদের পূজার পাশাপাশি তপশিলি হিন্দু গোষ্ঠীর লোকেরা সমবেত ভাবে একটা দুর্গা পূজার আয়োজন করতেন। বেশ কিছু কাল পর

কালীপুজোর স্মৃতি ।। চম্পা পণ্ডিত গোরাই

ছবি
কালীপুজোর স্মৃতি  চম্পা পণ্ডিত গোরাই  দুর্গাপুজো শেষ হলেই আমরা ছোটরা দিন গুনতাম।  কালী পুজো আসতে আর কতো দেরী ।  কালীপুজো মানেই মামাবাড়ি।  কতো আনন্দ,কতো উচ্ছ্বাস ।  মাামাতো ভাইবোন,  মাসি, মাসির ছেলেমেয়ে ।  সবাই মিলে নানারকমের দুষ্টুমি, খেলার মধ্যে দিয়ে দিনগুলো কি ভাবে যে কেটে যেতো খেয়াল ই থাকতো না । মনে হতো এই দিনগুলো যেন কোনোদিন, ফুরিয়ে না যায় ।  মামাবাড়ির আবদার, সে তো বলার নয়।  কেউ ধমক দিতো না, বাধা দিতো না ।  মামা আসতো আমাদের নিতে ।  একদিন সকালবেলা সকলে মিলে বেরিয়ে পড়তাম মামাবাড়ির উদ্দেশ্যে ।  পৌঁছাতে পৌঁছাতে বিকেল হয়ে যেতো ।  বাসরাস্তা থেকে অনেকটা দূরে মামাদের গ্রাম ।  আমাদের নিতে গরুর গাড়ি আসতো ।  ছই দেওয়া গরুর গাড়ি টি দেখলেই, আমার মন আনন্দে নেচে উঠতো ।  মনে হতো এই তো পৌঁছে গেলাম।  গাড়িতে যাওয়ার সময় লাল রাস্তার দুপাশে, দিগন্ত বিস্তৃত ধানের জমি ।  হেমন্তের সূর্যাস্তের সোনালী রঙ পাকা ধানের উপর পড়ে চকচক করছে ।  নয়নমুগ্ধকর সেই দৃশ্য ভরিয়ে দিতো প্রাণ, মন।  আমাদের বাড়ির পরিবেশ ও মামাবাড়ির পরিবেশ সম্পূর্ণ আলাদা ।  কোথাও কোনো মিল নেই ।  মাঝে মাঝে ঝোপঝাড়, বাঁশবন, মাঠের মধ্যে দু-একজন লোক । 

স্মৃতিচারণ।। উৎসবের আনন্দ---তখন এখন ।। সাইফুল ইসলাম

ছবি
  উৎসবের আনন্দ-- তখন এখন সাইফুল ইসলাম উৎসব মানেই আনন্দ। আর এই আনন্দের প্রকাশ নতুন নতুন জামাকাপড়, রকমারী খাবার,হৈ-হুল্লোড়,একে অপরের সাথে মিলেমিশে একাকার এর মধ্যে। কোন উৎসব হয় নিভৃতে আবার কোন উৎসব হয় প্রকাশ্যে। কোনো উৎসবে ভরে উঠে আলোর রোশনাই আবার কোনো উৎসব হয় আলোকোজ্জ্বলহীন।         আমি যেখানে থাকি, এখানকার অধিকাংশ মানুষই উৎসব বলতে বোঝেন ঈদ, দুর্গাপূজা আর কালীপূজা। এই সকল উৎসবে মানুষ আনন্দে মেতে ওঠেন; তবে সে আনন্দ কোনটা ক্ষণস্থায়ী আবার কোনটা দীর্ঘস্থায়ী। দীর্ঘস্থায়ী আনন্দের ভিড়ে ক্ষণস্থায়ী আনন্দ চাপা পড়ে যায়। আর সেই আনন্দোৎসব পেতে অনেক আগে থেকেই সকলের প্রস্তুতি শুরু হয়। সেই রকমই একটা উৎসব দীপাবলী, যাহা এখানকার প্রতিটা মানুষ অপেক্ষায় থাকেন। কারণ দীপাবলী পূজো উপলক্ষে এখানে যে মেলা বসে তাহা অতি সুপ্রাচীন এবং তার স্থায়িত্ব হয় প্রায় পনের দিন।              এখন গ্রাম বদলে গেছে। মাটির রাস্তা প্রায় নেই বললেই চলে। এমন একটা সময় ছিল যখন মেলা প্রাঙ্গনে যেতে একমাত্র ভরসা ছিল গোরুর গাড়ি। কালীপূজোর পরের দিন মেলা তাই ছোটদের আনন্দের শরীক হতে হত বড়দেরকেও। কারণ ছোটদের আনন্দেই বড়দের আনন্দ। পূর্ব প্রস্ততি অনু

গদ্য: বেপথু উৎসব ।। সঞ্জীব সেন

ছবি
হ্যাঁ, আমরা পথ হারিয়েছি     সঞ্জীব সেন "পথিক তুমি  পথ হারাইয়াছ?" বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কপালকুন্ডলা উপন্যাসের সময়কাল সপ্তাদশ শতক সেখানে দেখি নবকুমারকে সবাই ছেড়ে গেলে বনের ভিতর থেকে কপালকুন্ডলা ডাক দেয় "পথিক, তুমি  পথ হারাইয়াছ?," শুধু নবকুমার নয় সে পথ আমরাও হারিয়েছি তা আজও খুজে পাইনি । সপ্তদশ শতকে সাহিত্যে তান্ত্রিকদের সুনজরে কেউ দেখেনি উনিশ শতকে বঙ্কিমবাবুর লেখনিতে তার প্রমাণ পাওয়া গেছে "তন্ত্র মাত্রই ভৌরবী  চর্চার নামে অজাচার ।" আমার মনে হয় তার আর একটা কারণ হিসাবে দেখা যায় ,তখন মানুষ চৈতন্য প্রেমে আচ্ছন্ন । উপনিষদে কিন্তু মৃত্যুর পর অমরতার কথা লেখা আছে । যেভাবে মানুষ পুরোনো জামা ছেড়ে নতুন জামা পরে সেভাবে একটা শরীর অন্য একটা শরীর পায় । এভাবেই আত্মা হয়ে ওঠে অবিনাশী । নতুন শরীর পেতে নেমে আসে মর্তে । আবার চাঁদকে দেবতারা পান করতে করতে লুপ্ত হয় এবং অমাবস্যায় পুরো লোপ পায় । আবার দুদিন পর আবার ফিরে পায় । কোন কিছুর বিনাশ নেই । কপালকুণ্ডলা উপন্যাসের নবকুমার যখন বলিপ্রদত্ত। সন্ধ্যার আলোর এক নিরাভরণ রমণীদেহ কপালকুণ্ডলা আর ভৈরবীতান্ত্রিক । বলছে ভৌরবী পুজোয় তোমা

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪