কবিতা
আমি উজানি। আপনাদের মত কোন ভালোবাসার ডাকনামটি আমার নেই । মাকে মৃত্যুসম যন্ত্রণা দিয়ে জন্ম আমার । আমার জন্মানোর পর মায়ের খুব শরীর খারাপ হয়ে যায়। ঠাম্মা তো আমায় বাড়িতেই তুলতে দেয়নি ।
সবাই বলতো আমি খুব অপয়া । আমার এসব শুনতে ভাল লাগতো না । তাও নিজের মনকে শান্ত করতাম অনেক যুদ্ধ করে।
এই দু বছর আগে আমি বাংলা সাহিত্যের ওপর মাস্টার্স এর পর পিএইচডির জন্য থিসিস জমা করতে যাব এমন সময়টায় আমার ক্যান্সার ধরা পড়ে । ডাক্তার আমার আয়ু দুইটি বছর বেঁধে দেয়। এই দুটো বছর আমায় জীবন কাকে বলে শেখাচ্ছে প্রতিনিয়ত এই অসুখ। নিজের পরিণতি কী হবে জেনেও, চিকিৎসার জন্য দেদার খরচ করে যাচ্ছি। মা-বাবার চোখে সব সময় সন্তান হারানোর ভয় দেখা কি যে দুঃসহ কষ্টের তা বলে বোঝানোর নয় ! আমি যে এককালে লেখালেখি করতাম সেটাই ভুলতে বসেছি ।
আমার এই ধূসর জীবনে সোনালী আলোর রেখা এসেছিল বৈকি, সঞ্জয় ! ছেলেটা খুব ভালো আমার রূপের ঘাটতি, আর্থিক অবস্থা সবটা জেনেই আমাকে মেনে নিয়েছিল। বরং আমি জড়াতে চাইনি এই সবে। আমি জানি এই অভাগীর কপালে ঈশ্বর স্বর্গের আস্তানা লেখেনি।
যা ভেবেছিলাম তাই হল! আমাদের বিয়ের কথা চলছে এমন সময় আমার অসুখ ধরা পরল।
সব ভেঙে গেল মুহূর্তের মধ্যে! যাকে ভেবেছিলাম আজীবন পাশে থাকবে , সেই চলে গেল খুব সহজেই । বুঝলাম লড়াইটা সবার একারই হয় । নিজের শেষ পরিণতিতে চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি তাও লড়ে যাচ্ছি আমি ।
আমি এখন কোমাতে, শরীরে একুশটা নল । সারাক্ষণ আমার চারপাশে ভেন্টিলেটরের আওয়াজ আর প্রিয়জনদের কান্না।
এত কষ্ট এত বাধা সত্বেও আমি আমার লেখাকে কোনদিনও ছাড়িনি । ওটাই আমার অলংকার,
আমার বাঁচার শেষ আশা ।
সেই কিশোর বয়সে অবসন্ন মনে একটা সুইসাইড-নোট লেখার থেকে যাত্রা শুরু তারপর আর থামিনি, থামতেও চাইনি।
কিন্তু এই অসুখ সব থামিয়ে দিল, জীবনরেখা শেষের পথে । আমি অবচেতনে বুঝতে পারছি আমার জীবন মরণের এত কাছাকাছি এসেও সার্থক ।
সেই কলেজ জীবনের লেখা উপন্যাসের জন্য বছরের সেরা পুরস্কারটা বাবা মায়ের হাতে তুলে দিচ্ছেন আমারী প্রিয় সাহিত্যিকরা। মৃত্যুর এত কাছ থেকে উপভোগ করছি বেঁচে থাকার অসীম আনন্দ। এই অভাগীর জীবনের প্রথম আর সর্বশেষ প্রাপ্তি। অনেক বছর পর এই সাহারা মরুভূমিতে বৃষ্টি এলো!
সবাই বলতো আমি খুব অপয়া । আমার এসব শুনতে ভাল লাগতো না । তাও নিজের মনকে শান্ত করতাম অনেক যুদ্ধ করে।
এই দু বছর আগে আমি বাংলা সাহিত্যের ওপর মাস্টার্স এর পর পিএইচডির জন্য থিসিস জমা করতে যাব এমন সময়টায় আমার ক্যান্সার ধরা পড়ে । ডাক্তার আমার আয়ু দুইটি বছর বেঁধে দেয়। এই দুটো বছর আমায় জীবন কাকে বলে শেখাচ্ছে প্রতিনিয়ত এই অসুখ। নিজের পরিণতি কী হবে জেনেও, চিকিৎসার জন্য দেদার খরচ করে যাচ্ছি। মা-বাবার চোখে সব সময় সন্তান হারানোর ভয় দেখা কি যে দুঃসহ কষ্টের তা বলে বোঝানোর নয় ! আমি যে এককালে লেখালেখি করতাম সেটাই ভুলতে বসেছি ।
আমার এই ধূসর জীবনে সোনালী আলোর রেখা এসেছিল বৈকি, সঞ্জয় ! ছেলেটা খুব ভালো আমার রূপের ঘাটতি, আর্থিক অবস্থা সবটা জেনেই আমাকে মেনে নিয়েছিল। বরং আমি জড়াতে চাইনি এই সবে। আমি জানি এই অভাগীর কপালে ঈশ্বর স্বর্গের আস্তানা লেখেনি।
যা ভেবেছিলাম তাই হল! আমাদের বিয়ের কথা চলছে এমন সময় আমার অসুখ ধরা পরল।
সব ভেঙে গেল মুহূর্তের মধ্যে! যাকে ভেবেছিলাম আজীবন পাশে থাকবে , সেই চলে গেল খুব সহজেই । বুঝলাম লড়াইটা সবার একারই হয় । নিজের শেষ পরিণতিতে চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি তাও লড়ে যাচ্ছি আমি ।
আমি এখন কোমাতে, শরীরে একুশটা নল । সারাক্ষণ আমার চারপাশে ভেন্টিলেটরের আওয়াজ আর প্রিয়জনদের কান্না।
এত কষ্ট এত বাধা সত্বেও আমি আমার লেখাকে কোনদিনও ছাড়িনি । ওটাই আমার অলংকার,
আমার বাঁচার শেষ আশা ।
সেই কিশোর বয়সে অবসন্ন মনে একটা সুইসাইড-নোট লেখার থেকে যাত্রা শুরু তারপর আর থামিনি, থামতেও চাইনি।
কিন্তু এই অসুখ সব থামিয়ে দিল, জীবনরেখা শেষের পথে । আমি অবচেতনে বুঝতে পারছি আমার জীবন মরণের এত কাছাকাছি এসেও সার্থক ।
সেই কলেজ জীবনের লেখা উপন্যাসের জন্য বছরের সেরা পুরস্কারটা বাবা মায়ের হাতে তুলে দিচ্ছেন আমারী প্রিয় সাহিত্যিকরা। মৃত্যুর এত কাছ থেকে উপভোগ করছি বেঁচে থাকার অসীম আনন্দ। এই অভাগীর জীবনের প্রথম আর সর্বশেষ প্রাপ্তি। অনেক বছর পর এই সাহারা মরুভূমিতে বৃষ্টি এলো!
=============
অর্ণব মিত্র
সত্যজিৎ রায় সরণি, কলকাতা 700060
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন