পাত্র দেখা
সুশীল বন্দ্যোপাধ্যায়
ছেলে কি করে?
এই অল্পস্বল্প কিছু করে।
অল্পস্বল্প মানে? ঠিক কি করে বলবেন তো।
ঐ টুকটাক করে আর কি!
বুঝেছি।তা টুকটাক করে কি হবে? ওতে আর কতটুকু হবে? ওর থেকে বরং তুকতাক যদি কিছু করতো তো লাভ হতো।
তুকতাক মানে?
এই মানে লাগলে তুক না লাগলে তাক।
জ্যোতিষ বিদ্যা, বশীকরণ বিদ্যা, সম্মোহিনী বিদ্যা, তন্ত্র বিদ্যা সব এক একটা প্যাকেজ।যেটাতে লাগে।
ওতে কি হবে?
ওতেই তো হবে। টাকা হবে, পয়সা হবে,বাড়ি হবে, গাড়ি হবে, ধনসম্পত্তি, ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স সব হবে।নতুন নতুন বান্ধবীও হবে।
কি করে?
ভাগ্যকে ঘুরিয়ে দিয়ে।এইসব বিদ্যা দিয়ে ভাগ্যকে আশি থেকে একশো আশি ডিগ্ৰি পর্যন্ত ঘুরিয়ে দেওয়া যায়। ফকির থেকে আমির হওয়া যায়, জিরো থেকে হিরো হওয়া যায়।
ভ্যাগাবন্ড হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল এখন বি এম ডব্লিউ গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
ভ্যাগাবন্ড হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল এখন বি এম ডব্লিউ গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
তাহলে তো বিরাট ব্যাপার।
বিরাট ব্যাপারই তো। সেজন্যই তো 'তাক',বলে না 'তাক' লেগে গেলো, সেই তাক।তুক থেকে তাক।কি ছেলো আর কি হেলো।
তা সেটার জন্য কি করতে হবে?
ধারণ করতে হবে। শুধু ধারণা করলে এখন কিছু হয় না।এই ধরুন এমন তাবিজ আছে যেটা ধারণ করলে ধারণার বাইরে টাকার আমদানি হবে,আপনি বুঝতেই পারবেন না কোনদিকে থেকে টাকা আসছে,ব্যবসায় প্রসার হবে, পেশায় উন্নতি হবে,লটারিতে বাজিমাত হবে। চারদিক থেকে টাকা উড়ে উড়ে আসবে। হঠাৎ হঠাৎ সম্পত্তির ভাগ থেকে টাকা আসবে যা আপনি ভাবতেও পারেন না।
বা বা! সাংঘাতিক ব্যাপার।আচ্ছা শরীরের বাত ব্যথা চলে যায় এমন কিছু আছে?
আছে বৈকি।এই হরে স্যুটকেসটা দে তো।..এই যে এই দেখুন 'নৈমেষ্যি কারক রস' সতের রকম জড়িবুটি দিয়ে তৈরি।স্বর্ণচঞ্চু থেকে নাগকেশর।তিন ফাইল মাত্র একশো পঞ্চান্ন টাকা। হাসপাতালে গেলে পঞ্চান্ন হাজার খরচা হয়ে যাবে। দিনে দুবার এই রস পান করলে সব ব্যথা মন্ত্রের মতো উড়ে যাবে। ইউ টিউব খুলে দেখাবো কি কত লোকের বাত ভালো হয়েছে? বাথরুম যেতে পারতো না,আজ পাহাড় ছাড়া বেড়াতেই যাচ্ছে না। ডাকুন ছেলেকে সব বুঝিয়ে দিচ্ছি।
এটা বোঝাবেন? তাহলে আপনারা যে বললেন পাত্র দেখতে এসেছেন?
সে হবে'খন। অনেক সময় আছে। আগে পাত্র তো হোক, এখন তো পাত আছে। পাত পিটিয়ে পাত্র বানাতে হবে।
=====================
সুশীল বন্দ্যোপাধ্যায়, আসানসোল, প বর্ধমান
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন