পোস্টগুলি

৩৪তম সংখ্যা: পৌষ ১৪২৭ ডিসেম্বর 2020 লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

Featured Post

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

ছবি
  "নবপ্রভাত" সাহিত্যপত্রের ৩০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে আমরা নির্বাচিত কয়েকজন কবি-সাহিত্যিক ও পত্রিকা সম্পাদককে স্মারক সম্মাননা জানাতে চাই। শ্রদ্ধেয় কবি-সাহিত্যিক-নাট্যকারদের (এমনকি প্রকাশকদের) প্রতি আবেদন, আপনাদের প্রকাশিত গ্রন্থ আমাদের পাঠান। সঙ্গে দিন লেখক পরিচিতি। একক গ্রন্থ, যৌথ গ্রন্থ, সম্পাদিত সংকলন সবই পাঠাতে পারেন। বইয়ের সঙ্গে দিন লেখকের/সম্পাদকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি।  ২০১৯ থেকে ২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত গ্রন্থ পাঠানো যাবে। মাননীয় সম্পাদকগণ তাঁদের প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠান। সঙ্গে জানান পত্রিকার লড়াই সংগ্রামের ইতিহাস। ২০২৩-২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠানো যাবে। শুধুমাত্র প্রাপ্ত গ্রন্থগুলির মধ্য থেকে আমরা কয়েকজন কবি / ছড়াকার / কথাকার / প্রাবন্ধিক/ নাট্যকার এবং সম্পাদককে সম্মাননা জ্ঞাপন করে ধন্য হব কলকাতার কোনো একটি হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে (অক্টোবর/নভেম্বর ২০২৪)।  আমন্ত্রণ পাবেন সকলেই। প্রাপ্ত সমস্ত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকার পরিচিতি এবং বাছাই কিছু গ্রন্থ ও পত্রিকার আলোচনা ছাপা হবে নবপ্রভাতের স্মারক সংখ্যায়। আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য। ঠিকানাঃ নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদকঃ নব

গল্প।। মিসিং ডায়েরি ।। সবিতা বিশ্বাস

ছবি
  হ্---শ্---শ্----চুপ | আর একটা শব্দ করলেই খুন করে ফেলব | তারপর এই দেওয়ালের মধ্যে গেঁথে রেখে দেব | এর পর থানায় একটা মিসিং ডায়েরি | ব্যাস্ তোমার মা বাবা তো দূরের কথা আরশোলা, টিকটিকি ও টের পাবে না | কি আশ্চর্য! সেই সময় দেয়াল ঘড়ির আড়াল থেকে টিকটিকিটা  টিক্ টিক্ করে ডেকে উঠল | টিকটিকির শব্দ শুনে উদ্দীপন হঠাত্ খেপে গিয়ে একটা চেয়ারে উঠে ঘড়ির পেছন থেকে টিকটিকিটাকে বাইরে আনার চেষ্টা করল | কিন্তু টিকটিকিটা তর্ তর্  করে   দেওয়াল বেয়ে উঠে গেল সিলিংয়ে | এবারে উদ্দীপনের সব রাগ গিয়ে পড়ল ঘড়ির পরে | দামী ভিনটেজ ওয়াল ক্লক যা বেলজিয়াম থেকে এনেছিলেন ওর দাদু , সেই ঘড়িটাকে আছাড় মেরে ভেঙ্গে ফেলল | তারপর চেয়ার থেকে লাফিয়ে নামতে গিয়ে কাঁচের টুকরো ফুটে রক্তারক্তি কাণ্ড | আর ওই ভাবেই বেরিয়ে গেল বাইরে | যাবার আগে অবশ্য বাইরে থেকে দরজায় তালা দিতে ভুল করল না | বেরিয়ে যাওয়ার শব্দ শুনতে পেল ইচ্ছা বিছানায় বসে বসেই | শব্দটা মিলিয়ে যেতে পা টিপে টিপে উঠল | ছড়িয়ে থাকা কাঁচের টুকরোগুলো বাঁচিয়ে কোণের দিকে ডাঁই করে রাখা বাতিল জিনিসের মধ্যে থেকে একটা পাশ বালিশ টেনে

বিশেষ রচনা ।। বাটারফ্লাই এফেক্ট বনাম ঈশ্বরের হাত ।। সঞ্জীব সেন

ছবি
জার্মানের ছোট গোঁফের রাগী লোকটা  আর্টিস্ট হতে চেয়েছিল কিন্তু সে একদিন হয়ে উঠল স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট শাসক । এর পেছনে রয়েছে বাটারফ্লাই এফেক্ট । না পেছন থেকে অদৃশ্য কেউ কলকাঠি নাড়িয়েছিল । তবে আমরাও কি সেই কলকাঠির শিকার হচ্ছি প্রতিদিন ! ।তাহলে ব্রহ্মজ্ঞান   এ যা শুনে এসেছি সেটাই ঠিক কথা যে ,এই জগৎ সৃষ্টি হয়েছে শুধুই এনটারটেনমেন্টের জন্য। সৃষ্টিকর্তা একা একা বোর হচ্ছিল, তাই! তবে কি আমরা এখানে শুধুই একজন প্লে বয় । এই যে শেষ পর্যন্ত সেখানেই আটকে থাকলাম যেখান থেকে শুরু করে ছিলাম ,বাটারফ্লাই এফেক্টটা আসলে কী?,কি হলে কি  হতে পারত,যদি সেটাই হত, তাহলে তার কারণে অনেক কিছুই ঘটত না,আবার অপরিবর্তিত থেকে যেত এমন অনেক কিছুই,সব কিছুই কিন্তু পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত । তাই আমার মত পাগলের প্রলাপকে একটু গুরুত্ব দিলে আবহাওয়াবিদের দরকার পরতোই না,কথায় কথায় মূল প্রশ্ন থেকে সরে এসেছি অনেকক্ষণ আগেই, প্রশ্নটা ছিল ব্রাজিলের কোন প্রজাপতি ডানা ঝাপটালে ট্রেক্সাসে টর্নেডো হতে পারে কিনা!  এই যে তুমি আজ ছোট কফিশপে আমার বিপরীতে বসে আছো,না আমি তোমার বিপরীতে এই নিয়ে আজ ভাবতে বসলে অনেক কথাই উঠে আসতে পারে, আমি যদি তোমার প্রেম

গল্প।। ক্কোঁকড়-কোঁ রহস্য ।। গোবিন্দ মোদক ।।

ছবি
         ক্কোঁকড়-কোঁ রহস্য !!                          গোবিন্দ মোদক          ছোটবেলায় আমরা যাকে 'জুড়ি'দা বলে ডাকতাম এবং যার মুখে-মুখে বানানো অজস্র আষাঢ়ে গল্প শুনে যারপরনাই আমোদ পেতাম, তার প্রকৃত নাম 'জুড়ি' কিনা বা প্রকৃত নাম মুছে কেন 'জুড়ি' হলো সেই ইতিহাস জানবার কথা অন্তত আমার মনে উদয় হয়নি। তবে আমাদের মধ্যে জুড়িদা'র উপস্থিতি যেমন ছিল জনপ্রিয় এক প্রতিভাবান নায়কের মতোই উজ্জ্বল  --- তেমনই এ কথা ঠিক যে, উদ্ভট কার্যকারণ সম্পর্ক এবং তার ব্যাখ্যা খুঁজে নিয়ে যে সমস্ত গল্প-কাহিনী জুড়িদা আমাদেরকে শোনাতো তার কোনও জুড়ি ছিল না। তেমনই একদিনের ঘটনা বলি।          সেদিন আমরা কয়েকজন আড্ডায় মশগুল --- আড্ডার বিষয় বস্তু মোরগ এবং তার 'ক্কোঁকড়-কোঁ' ডাক ! এমন সময় জুড়িদা'র আগমন। আমাদের আলোচনার বিষয়টা আন্দাজ করে জুড়িদা গম্ভীর স্বরে নায়কোচিত ভঙ্গিতে বললো --- তোমাদের আলোচনায় এটা পরিষ্কার যে, মোরগ সক্কাল-বেলায় 'ক্কোঁকড়-কোঁ' বলে ডাক ছেড়ে দিনের আগমনকে ঘোষিত করে। কিন্তু এর পেছনে কারণটা কি জানো তোমরা ? কেন মোরগ শুধু 'ক্কোঁকড়-কোঁ' বলেই

গল্প।। বন্ধু।। গোপেশ দে

ছবি
বন্ধু গোপেশ দে সুধীনের সাথে অখিলেশের বন্ধুত্বটা অখিলেশের স্ত্রী মাধুরীর মাধ্যমে। সুধীনের হালকা মেদ আর সুগারের একটু ছোঁয়া আসতেই ডাক্তার বলে দিয়েছিলেন, 'আপনি রোজ সকালে একটু হাঁটাহাঁটি করবেন।' সুধীন ডাক্তারের কথা মত সাদা কেডস পায়ে দিয়ে হাঁটতে শুরু করলেন প্রতিদিন ভোরবেলা।কিছুক্ষণ হাঁটার পর পার্কে বসে বিশ্রাম নিতেন।কবিতার বই সাথে আনতেন।বই খুলে কবিতা আপনমনে আবৃত্তি করতেন। সপ্তাহখানেক পর একদিন পার্কের একটা বেঞ্চিতে বসে কবিতার বই খুলে কবিতা আবৃত্তি করছিলেন। একজন ভদ্রমহিলা পাশে এসে বসলেন, 'চা খাবেন ?' সুধীন হকচকিয়ে গিয়েছিলেন মহিলাকে দেখে।অচেনা মহিলা।মহিলাটি তাঁকে চেনে বলেও মনে হচ্ছিল না।বয়েস তাঁর প্রায় সমানই।ষাটের কাছাকাছি।বেশ স্মার্ট।চোখে গগলস।মাথার মাঝখানে এক চিলতে সিঁদুর।মানে বিবাহিত। এভাবে অপরিচিত মানুষটা তাঁকে চা খেতে বলছেন কেন ? বিষয়টা ভালো লাগল না সুধীনের।একটু অস্বস্তি নিয়ে বললেন, 'চা খাব কেন ?' 'আমি দিলাম তাই খাবেন।'' 'আপনি কোন হরিদাস পাল ? 'আমি মহিলা।হরিদাস হতে যাব কেন ? বলুন হরিদাসী', মহিলাটি হাসলেন। আমি কিন্তু আপনাকে চিনি না।আপনি কি আমা

মুক্ত গদ্য ।। শব্দ বহ্ম তোমাকে প্রণাম।। মানস চক্রবর্ত্তী

ছবি
শব্দ বহ্ম তোমাকে প্রণাম   মানস চক্রবর্ত্তী  আজ সকালে স্কুলের ছাদে নির্জনে বসে আছি | কাছে কেউ নেই , পাশে কেউ নেই | শুধু রবীন্দ্রনাথ কানে কানে বলছেন : " ...দইওয়ালার হাঁক বলো আর প্রহরীর ঘণ্টা বলো কিছুই তুচ্ছ নয় | " আজ এই শুভ্র প্রভাতে সেই সুর প্রাণে বড়ো লেগে গেল | আমাকে একেবারে মাতাল করে তুলল | ঐ যে দূরে গাড়ি চলছে , মাঠে কারা যেন খেলছে , বাজারের থলি হাতে কর্তামশাই চলছে | সব চলছে | সব চলছে | দোকান চলছে , ট্রেন চলছে , বাস চলছে , পথে লোক চলছে , লোকের কথা চলছে , টাকা চলছে , পয়সা চলছে | কলসি কাঁখে মেয়েরা চলছে | ধানের গাড়ি চলছে গ্রামে , শহরে চলছে মালভর্তি লরি | পৃথিবী জুড়ে খসখস- ঘসঘস , টুং-টাং বিচিত্র আওয়াজ চলছে | আমি কিছু দেখছি না , আমি কিছু শুনছি না ; আমি শুধু অনুভব করছি চলাটা | গতিময় পৃথিবী | হে শব্দের দেবতা তোমাকে নমস্কার | তোমাকে বারং বারং নমস্কার | তোমাকে সামনে নমস্কার , পিছনে নমস্কার , উত্তরে নমস্কার , দক্ষিণে নমস্কার , পুবে নমস্কার , পশ্চিমে নমস্কার | দশদিকে নমস্কার | হে শব্দের দেবতা তোমার বাণী অমৃতময় | অনন্ত প্রবাহ জুড়ে হে শব্দের দেবতা তুমি জাগ্রত | তোমার কোনো জীবাশ্ম নেই | ত

মুক্তগদ্য ।। পথ আজ নতুন বাঁকে।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

ছবি
যে পথে হেঁটেছি আজন্ম, এটা কি সেই পথ! সজ্ঞানে বা অজ্ঞানে। তথাকথিত শিক্ষিত হবার আগে বা পরে! আসলে শিক্ষালাভ তো জন্ম হওয়া ইস্তক। প্রকৃতির কাছে, প্রকৃতির দুয়ারে। প্রকৃতির পাঠ। আর গুরুজনের শিক্ষার হাত মাথায় নিয়েই পথ চলা শুরু। বসন্ত আসা-যাওয়ার সঙ্গে বয়স বেড়ে যাওয়ার এক প্রাকৃতিক খেলা। বয়স বাড়ে প্রকৃতির নিয়মে। আপন গতিতে, নিজের ছন্দে ও তালে। পথ চলতে চলতে কোথায় নিয়ে যায় আজ! এত দিন পরে, এত চলার পরেও। মাঝেমধ্যে মনে হয় এটাই কি সেই পথ! যে পথে চলেছি যুগ যুগ ধরে। চলেছে আমার পূর্বপুরুষেরা। আমার অন্তরাত্মারা। বারবার হোঁচট খেয়ে পড়ে গিয়েও থামেনি। থামিনি। উঠে দাঁড়াব বলে আবার শক্তি সঞ্চয় করার চেষ্টায় ব্রতী হয়েছি। কখনো কোন অবলম্বনের ভরসা না করেও। তবু কেন আজ এত অচেনা লাগে এই পথ। যে পথের প্রতিটি বাঁক পরিচিত হাতের তালুর মতো, সেই পথকে কেন আজ নতুন লাগে! যে পথের প্রতিটি নুড়িতে লেখা রয়েছে আমার রক্তবিন্দুর ডাকনাম,  সেই পথ কেন ঝাপসা হয়ে আসে! এমনকি সূর্য যখন মধ্যগগনেও। সেই পথ হাতছানি দিয়ে ডাকে আজো, তবে ইশারার ভাষা যেন বদলে গেছে! নাকি পুরো পথই! ভাবি আর ভাবি। ভেবেই চলি, পথের ইন্চিতে ইন্চিতে। ইঙ্গিতে ইঙ্গিতে!

গল্প ।। একত্রিশতম দিন // অনিন্দ্য পাল

ছবি
নাহ্ , কিছুই হলো না।   চিরন্তন পাণ্ডুলিপিটা কুচি কুচি করে ছিঁড়ে বিছানার পাশে রাখা ফ্যাকাশে পলিথিন ব্যাগের মধ্যে চালান করে দিল। চোখ বন্ধ করে কপালের রগ দুটো চেপে ধরে বিছানায় বসে রইলো কিছুক্ষন। শুধুই বসে রইলো। কিছুই ভাবলো না।  বলা ভালো ভাবতে পারল না।  প্রায় মাসখানেক ধরেই চিরন্তন গল্পটা লেখার চেষ্টা করে চলেছে, কিন্তু পারছেনা। যেটা সে চাইছে সেটা হচ্ছে না কিছুতেই। অন্তত এমন লেখা হচ্ছেনা যাকে সে নিজেও গল্প বলে মনে করতে পারে। যেভাবেই লিখতে চায়, কবিতার ভাষা, কবিতার ধাঁচ চলে আসে, এবং শেষে একটা জগাখিচুড়ি হয়ে যায়। কিছুতেই গল্প হয়ে ওঠে না।                 এমন নয় যে এ গল্পের বিষয়বস্তু তার অজানা। এমন নয় যে সে এর আগে কখনো গদ্য লেখেনি। তবু গল্প লেখার এই অসহ্য তাড়নার সময় সে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে।                     হতাশায় চিরন্তন দুটো হাত মুঠো করে আকাশের দিকে ছুড়ে দিলো। তার চোখে জল।   না সেই কান্নার ধারা এমন নয় যে তারা বিছানা ভেজাতে পারে, এমনও নয় যে তার মলিন পাঞ্জাবীটা কে আরো মলিন করে দিতে পারে। তবু সে কাঁদে। দু-এক ফোঁটা জল তার চিবুক পর্যন্ত এসে থেমে যায়। শব্দহীন অশ্রুপাত লাজুক মেয়ের ম

মরীচিকা ।। সেখ মেহেবুব রহমান

ছবি
মদের গ্লাসটি টেবিলের ওপর সজোরে রেখে মাথা হেঁট করে বসলেন দেবাশিষ বাবু। পাড়া গ্রামে লোকচক্ষুর সামনে এমন মদের ঠেক প্রায়শই দেখা মেলে। উনি নিজে এক সময় এর প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। ভাগ্যের পরিহাসে আজ উনি এখানের নিয়মিত খদ্দের। বাড়ির অমত থাকা সত্ত্বেও এখানে ছুটে আসতে বাধ্য। দীর্ঘ লক ডাউনে কর্মহীন হয়ে পরা মানুষের কাছে যন্ত্রণা নিবারনের এটাই একমাত্র উপায়। আর একটা পথ অবশ্য আছে। নিজেকে সম্পূর্ণ রূপে শেষ করে দেওয়া। কিন্তু দেবাশিষ বাবু তাতে ভয় পান। নেশার ঘোরে নিজেকে নিমজ্জিত রাখাই ওনার সহজতর বলে মনে হয়েছে। উনি কলকাতার এক বেসরকারী অফিসে কর্মরত ছিলেন। ফাইল একজনের থেকে অন্য জনের কাছে স্থানান্তরিত করে দেওয়ায় ওনার কাজ ছিল। ইন্টারনেট র যুগে এ'কাজ যদিও ইমেলের মাধ্যমেই সম্ভব। তাই শেষ কয়েক বছর ওনাকে তেমন কোনো কাজ করতে হয়নি। দীর্ঘদিনের এম্প্লয় হওয়াই কোম্পানিও ওনাকে কাজ থেকে বিতাড়িত করেনি। কিন্তু এই অতিমারীর কোপে যখন সমস্ত শিল্পকর্ম লসের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, দেবাশিষ বাবুর কোম্পানিও সেই ধরার ব্যাতিক্রম নয়। তাই ওনার মত দীর্ঘ দিনের কর্মীকে ছাঁটাই করতে বাধ্য হয়। দেবাশিষ বাবু শারীরিক ভাবে দুর্বল

অণুগল্প ।। সাদা থান ।। পারমিতা রাহা হালদার (বিজয়া)

ছবি
সাদা থান   পারমিতা রাহা হালদার (বিজয়া)           ইন্সপেক্টর রুদ্রর আজ নাইট ডিউটি।পুলিশ স্টেশনে এক ভদ্রলোক এলেন রাত তখন দুটো,গম্ভীর গলায় বললেন কাইন্ডলি আমার জন্য একটা থাকার ব্যবস্থা করবেন? দেখুন রেলে কাটা বডি এসেছে এখন সেই বডি ফরেনসিক ডিপার্টমেন্টে পাঠাতে হবে। ডিপার্টমেন্টে একা আমি,ব্যস্ত আছি। বাকিরা অন্য ডিউটিতে ব্যস্ত। তাছাড়া এত রাতে কোথায় পাবো বলুন পাড়াগাঁয়ের মধ্যে থাকার জায়গা।  আমি ভীষণ বিপদে পড়েছি। আমার মানিব্যাগ-মোবাইল চুরি হয়ে গেছে। বাসায় খবর দিতে পারছি না,ওনারা চিন্তিত... ধুত্তেরি মশাই! রির্পোট লিখিয়ে ভোরের জন্য অপেক্ষা করুন। ডেড বডির তদন্ত করতে হবে। বডি কার, বাসার ঠিকানা, এখনো কিছু জানা যায়নি।  ৯৫৫৭৩৪২০০১ এই নম্বরে ফোন করুন সব সন্ধান পেয়ে যাবেন।  কিন্তু আপনি কিভাবে জানলেন মশাই ? আপনি তো বডি দেখেনও নি, তাহলে? অবাক হয়ে ভ্রু-কুঁচকে এইবার ভদ্রলোকের দিকে তাকালেন রুদ্র! সাদা অ্যাপ্রনে  আভিজাত্য প্রকাশ পাচ্ছে কিন্তু তারমধ্যেও যেন একটা অদ্ভুত ফ্যাকাসে চেহারা দেখেই হঠাত্ গা ছমছম করে উঠলো রুদ্রর। গম্ভীর গলায় আবার উওর এলো,আমি ডক্টর কৌশিক সেন। ট্রেন থেকে নামার সময় পা পিছলে পড়ে ট্রেনে কাটা

সরস গদ্য ।। তরুণ প্রামানিক

ছবি
আলুর আমি আলুর তুমি আলু দিয়ে যায় চেনা ফ্রেন্ডস অ্যান্ড বন্ধুরা ! তোমাদের সাথে আজ আমি একটু আলুগিরি করতে এসেছি। ইয়েস কালিদা ঠিকই শুনেছেন-আলুবাজি নয়,নির্ভেজাল আলুগিরি। স্ত্রী পুরুষ নির্বিশেষে প্রায় প্রত্যেকটা ব্যাচেলারের লাইফে-ই আলুর সাথে সখ্যতা সময়ের সাথে সাথে এক ধ্রুপদী পর্যায়ে পৌঁছে যায়। সে সময়ে আলু এক বিচিত্র টাইপের ছায়া সঙ্গী হয়ে  ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে থাকে জীবনের সঙ্গে। ছাত্রাবস্থায় কিম্বা ঘর ছেড়ে ভিন দেশে পড়ে থাকা চাকরি রতবস্থায়, সদা সর্বত্রই জয় জয়কার সেই আলুর-ই। যেমন ধরুন দুপুর বা রাতে খাবো কী ? ... তাই ভাতের সাথে আলু সেদ্ধ, আলু ভাজা, সরসের তেলে পেঁয়াজ কাঁচা লঙ্কা চিরে আলুর বাটি চচ্চড়ি, আলুর সাথে মাখা ডিম সেদ্ধ, কিম্বা বিশেষ বিশেষ দিনে আলুর সাথে কষা মুরগীর মাংস। আলুর সাথে আলু, আলু, আলু আর আলুউউউ। বলতে গেলে আলু ধ্যান আলু জ্ঞান আলু চিন্তা মণি,আলু ছারা আমি যেন এট সেটরা... এট সেটরা । শ্রীমান আলু বাবাজি আবার ধনী নির্ধনের প্রকারভেদ মানেন না। সবার গৃহেই অবাধ যাতায়াত তার। গরীবের পাতে আলু ভাতে, মধ্যবিত্তের টেবিলে আলু ভর্তা, ধনীর প্লেট পটেটো স্মাশ উইথ ফ্রাইড অনিয়ন রূপে প্রক

গল্প: জীবনের জলছবি ।। শেফালী সর

ছবি
   "জীবনের জলছবি"                 শেফালী সর    বাড়ির সকলে যখন আসন্ন বিবাহ অনুষ্ঠানের আলোচনায় মশগুল তখন দীপা ম্লান প্রদীপের আলোর সামনে বসে ভাবনার অতল গহ্বরে নিমজ্জমান। অতীত ও বর্তমানের সাথে মিলিয়ে দেখ ছিল কতখানি খাপ খায়।সে শুধু বারবার চেষ্টা করছে কিন্তু কিছুতেই যেন মেলাতে পারছে না। বিশেষতঃ পরেশের সাথে বাড়ীর লোকজনের মেলামেশা। তখন বাবা ছিল, বাড়ীর কেউ পরেশকে এ বাড়ির চৌকাঠ ডিঙোতে দেয়নি।অপরাধ, চাষী ঘরের ছেলে সে কিনা ব্রাহ্মণ বাড়ীর মেয়েকে ভালবেসে বিয়ে করতে চায়! আর আজ বাবা নেই, দাদা সেই পরেশের সঙ্গে বোনের বিয়ের ব্যবস্হা করছে। তা-ও আবার বিধবা বোন।  তখন সবে বিধবা বিবাহের প্রচলন হয়েছে।পাড়া প্রতিবেশী সমাজ তীব্র বিরোধিতা করছে। কিছুতেই তারা মেনে নিতে পারছে না। শুধু পরেশের দাদা ও কিছু গণ্যমান্য ব্যক্তির ভরসায় এই বিবাহের আয়োজন। পরেশের দাদা আর দীপার দাদা পরস্পর বন্ধু। দীপার সাথে বিয়ে হয়েছিল অরুণের। বছর পাঁচেক আগে অরুণ কর্কট রোগে মারা যায়। এই পাঁচ বছরের বৈধব্য জীবনের যাবতীয় অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে।পরেশ সেদিন কথায় কথায় বলেছিল দীপাকে-দীপা, তুমি আমার সামনে ও ই বেশে এসো না। দী

ভ্রমণ কথা : মন্দিরনগরী বিষ্ণুপুর ।। নির্মল কুমার সিংহ

ছবি
মন্দিরনগরী বিষ্ণুপুর   নির্মল কুমার সিংহ                "আমি চঞ্চল হে, আমি সুদূরের পিয়াসী"। বিশ্বকবির এই উক্তি সকল ভ্রমণ পিপাসুর মনে নূতন প্রাণের সঞ্চার করে। বাড়িয়ে দেয় ভ্রমণ পিপাসা। অজানাকে জানার, অচেনাকে চেনার উৎকৃষ্ট উপায় ভ্রমণ। মনের অদম্য বাসনা মেটাতে, কয়েকজন বন্ধুর সাথে পরামর্শ করে ঠিক করে ফেললাম বাস যোগে বাঁকুড়া জেলার মন্দির নগরী বিষ্ণুপুর যাওয়ার। দিন স্থির করে বাস সংরক্ষণ করা হলো সাথে সাথে। নির্দিষ্ট দিনে বাস ভর্তি মানুষ নিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু হলো বিষ্ণুপুরের উদ্দেশ্যে। পঁচিশে ডিসেম্বরের সকাল ৮ টায় দেওয়ানগঞ্জ হাটে আমাদের সংরক্ষিত বাসটি গর্জন করে উঠল। সুদক্ষ চালকের হাতে বাসের স্টিয়ারিংটা হলো বন্দী। একরাশ ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে বাস আগিয়ে চললো। মাত্র পঁচিশ মিনিটেই পৌঁছে গেল কালীপুরে। বাসের গতি বেড়ে গেল। এক এক করে গোঘাট, কামারপুকুর, জয়রামবাটী অতিক্রম করে বাস পৌঁছে গেল জয়পুরে। মানুষদের কোলাহল বাড়লো। আর কিছুক্ষণ। তারপরই পৌঁছে যাব আমাদের ইপ্সিত স্থানে। হঠাৎ বাসটা দাঁড়িয়ে গেল লাল বাঁধের কোলে। জানলার ফাঁকে দেখলাম প্রকান্ড জলাশয়ে অসংখ্য স্নানার্থি স্নান করছেন।

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪