আত্মহনন
দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় সুরেশ মায়ের কাজ বাড়াতে একটা গাছ লাগিয়েই ফেলল বাড়ির উঠানে! এই গাছ লাগাতে তাকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। তবে অনেক দিনের চেষ্টাটা অবশেষে পরিনতি পাওয়ায় ও খুব খুশি। কিন্তু মা রেগে আগুন, বার বার সাবধান করে করেছেন গাছ গাছ করে যেন পড়া না নষ্ট হয়। সুরেশ তাই লুকিয়ে লুকিয়েই গাছের সাথে কথা বলে। এইভাবে আড়ালে আবডালেই বেশ জমে ওঠে ওদের আড্ডা, গাছও দিব্যি বেড়ে উঠতে থাকে। একদিন হঠাৎ সুরেশের বাবার মাথায় আসে গাছটির যত্ন করার কথা, নানান রকম সার দিয়ে জল দিয়ে চলতে থাকে গাছের পরিচর্যা। বাবা মায়ের নিত্যদিনের ঝগড়াও বাড়ে তার সাথে পাল্লা দিয়ে।
-"কাজের লোক রাখার মুরোদ হয় না, সার আনা হচ্ছে টাকা নষ্ট করে। "বাবা ছেলের আলোচনা বেড়ে চলে গাছ নিয়ে। কি সার দেবে, কিভাবে যত্ন নেবে তার একটা লিস্ট করে ফেলে দুজনে। মা এর রাগের পারদ চড়তে থাকে ক্রমশ। শান্তির সংসারে অশান্তি ডেকে আনে এই গাছ!হঠাৎ একদিন সকালে উঠে সুরেশ দেখে গাছের এক অদ্ভুত পরিবর্তন কেমন যেন শুকনো মনমরা ভাব, অসময়ে পাতাগুলো শুকিয়ে ঝরে পড়ে যাচ্ছে। সার দিয়ে যত্ন করেও সবুজ সতেজ গাছটির লালিত্য আর ফিরে আসে না। অভিমানে নিজেকে শেষ করে দিতে চায়, কেমন যেন মিশে যেতে চায় সে মাটির সাথে। তার মনে যেন কি এক ব্যামো, যা বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই। সুরেশ বললো - "রোগটা যখন মনের তখন তো সারানো মুশকিল। বাঁচার ইচ্ছেটাই যার নেই তাকে বাচাঁয় কার সাধ্যি! "
================================
সুতর্না সিংহ, কাটোয়া,পূর্ব বর্ধমান,