google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re রিক্তা মুখার্জির গল্প - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

বুধবার, ১৮ জুলাই, ২০১৮

রিক্তা মুখার্জির গল্প

শ্রাবণের ধারার মতো



শ্রাবণ....গত ২২টা শ্রাবণ এই শহরের কাছে নানা অভিমান, অভিযোগ, পিছুটান বুকে
জমিয়ে বড়ো হয়েছি। না এই শহর আমার জন্ম দেখেনি,শৈশবের স্মৃতি গুলোও এই শহরের
কাছে অজানা। তবে এই শহরের এক কোণে আভিজাত্য আর নিয়মের শিকলে বেঁধে থাকা এই
ছোট্ট রুমটা আমার অসময়ের দৃশ্যগুলি মনে রেখেছে, মনে রেখেছে যখন অনেক দেরি হয়ে
গেছে জেনেও পিছুটান থেকে যাওয়াটা,মনে রেখেছে সেই রাত যেদিন তুমি চিরদিনের মতো
অন‍্যকারোর, যেখানে ম‍্যাসেঞ্জারে সবুজ আলোয় দুজনের দূরত্ব টা বাড়িয়েছে অনেক
টা।
দেখ.....ওই যে......ওই খাটের কোণায় বসে থাকা ছেলেটা আজ ও বলে সেই গল্প যেদিন
তোমার শরীর ও মন,দুটোর অধিকারে হাত বসালো কেউ।সত্যিই সেদিন তুমি ছিলে
নিরূপায়।ফেসবুক ম‍্যাসেঞ্জারে আলাপ হওয়ার পর যেদিন আমার ফিলিংস টা বুঝতে পারো
ততদিনে তোমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।
এখন......শ্রাবণ.....তোমার এই অজস্র জলের ধারা নামিয়ে এই শহরকে প্রশ্ন করতেই
পারো...."বিয়ে তো ঠিক ছিল.... হয়ে তো যায়নি"।আছে....উত্তর গুলো এই শহরের
প্রতিটি শ‍্যাওলা জমা ইটের কাছে আছে।
কি হিসেবে জোর করতাম তোমায়?তুমি ও যে ভালোবাসো এটা ছিল অপ্রকাশিত, আর আমার
ভালোবাসা বেকার, আর মাত্র৬মাসের বড়ো একজন বেকার মিউজিসিয়ান কীভাবে নেবে তোমাকে
রাণী করার দায়িত্ব।তখন আমি২১ সবে,ইঞ্জিনিয়ার এ সেকেন্ড ইয়ার।
আজ ও এই ২২টা শ্রাবণ, প্রতিটা রাত তোমার চ‍্যাটবক্স জ্বলে ওঠে নীলচে আলোর ওই
স্ক্রিনে, আজ ও কারোর ব্লক আর আনব্লকের মাঝের ঝগড়া, অভিমান, খুনসুটি জড়ানো
চ‍্যাট গুলো শ্রাবণের ধারার মতোই নেমে আসে গাল বেয়ে, একসময় সেটাও শুকিয়ে যায়,
লেগে থাকে নোনা জলের দাগ,যেমনি ভাবে আজও অক্ষত হয়ে আছে ভালোবাসা।
প্রতিটি শ্রাবণের মতো একবার...অন্তত একবার তোমার নামের পাশে অনলাইন দেখতে
চাই,যেখানে সেই মেসেজ টা ডেলিভারড্ হওয়ার অপেক্ষা,"-এই যে তুমি রাতে ঘুমাও না
কেন?
-ঘুমাই তো!
-তাহলে আমার স্বপ্নে কি করো?"
●হমমম এরপরই বলেছিলে বেশি স্বপ্ন দেখো না,আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে, কষ্ট
পেতে হবে।
এক নিমেষে এলোমেলো হয়েছিলাম,বাইরে চলছিল প্রচণ্ড ঝড় সহ বৃষ্টি আর তার সাথে
মনেও।উড়ন্ত পর্দা আর তার বৃষ্টির ঝিটে অনেক টা শান্ত হতে
চেয়েছিলাম,বুঝিয়েছিলাম......পারিনি।
তোমার সাথে তারপরও একটা বছর কথা হয়েছে, বারবার সরে যেতে বলেছো,আমি বলতাম
"বিয়েটা হোক...চলে যাব।"
চলে গেলে আজ ও প্রতিটা শ্রাবণ আমাকে তছনছ কেন করে দেই?
শ্রাবণ.... তোমার বৃষ্টি, শার্সি বেয়ে নেমে আসা জলের ধারা,বিদ্যুৎ এর চমক
সবগুলো আমাকে তার কথা মনে পড়াই....।হ‍্যাঁ.... সেই সময় ও ছিল শ্রাবণ মাস আর
নাম টা ছিল শ্রাবণী।কি অদ্ভূত তাই না?
●শ্রাবণ....!তোমার কাছে এই শহর সাহায্য প্রার্থী....তোমার এই ঝোড়ো হাওয়া
আনতে পারবে তার খবর?বলতে পারবে সেও এখনো আমায় মনে রেখেছে কিনা?সেও রোজ তার
ছোট্ট অমিত কে ঘুম পাড়াতে পাড়াতে ভাবে কি না আমাকে?
জানি পারবে না....কারন আমার মতোই তুমি ও জানো না তার কোলে ছোট্ট অমিত আছে নাকি
শ্রাবণী ফিরে এসেছে,আর যদি অমিত আসে তবে সে হয়তো বড়ো হচ্ছে তাদের ভালোলাগার
কোনো নামে, অমিত নাম রাখার প্রতিশ্রুতি টা হয়তো ম‍্যাসেঞ্জার আনইনস্টল হওয়ার
মতো আজ মৃত।
থাক!সেসব থাকুক.....সেসব বেঁচে থাক এই শ্রাবণেয় বৃষ্টি, বেঁচে থাক এই
শহর..তোমার বুকে মাথা রেখে,বেঁচে থাক সেই হোস্টেল রুম টায় একটা ছেলের করা
ভুলগুলো র মধ্যে, বেঁচে থাক ছেলেটা
জীবনের সেই ৬টা তারের মধ্যে,যার মধ্যে ছেলেটা জীবিত,আর লেখা থাক Blocked।
আর শ্রাবণ... তুমি এই ২২টার মতোই আরো ২২টা বর্ষাতে ফিরে এসো এই জীবিত স্মৃতি
গুলো নিয়ে।।
==========শেষ===========

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন