google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re সন্তু চ্যাটার্জির অণুগল্প - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

বুধবার, ১৮ জুলাই, ২০১৮

সন্তু চ্যাটার্জির অণুগল্প


চকিত চমক


বৃষ্টিটা বেশ জোরে নামতেই বঙ্কিম স্যার বলে ওঠেন, "বুঝলি আজ এই পর্যন্তই থাক। তোরা এবার আয়। আর হ্যাঁ রে সুদিন, তোর বাসের তো বেশ কিছু সময় বাকি তাই না? তুই বাবা সুদেষ্ণাকে আজ একটু ওর বাড়িতে পৌঁছে দিস কেমন?"

      পাড়াগাঁয়ের আপন ভোলা সুদিন অন্যমনস্ক হয়ে কি যেন ভাবছিল, স্যার এর হঠাৎ এই প্রস্তাব তার জোয়ান বুকের স্পন্দন বাড়িয়ে দেয়। কেমন যেন ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যাওয়া সুদিন আড়চোখে সুদেষ্ণাকে একবার দেখে নিয়ে সম্মতি জানায়।

        শাওন রাতের প্রায় নির্জন রাস্তায় তারা  পাশাপাশি  হেঁটে চলে । ছাতা একটাই, সুদিনের হাতে। কিন্তু তার প্রায় পুরোটাই সুদেষ্ণার দিকে । থেমে থেমে দু একটা হাল্কা কথা ও বলছে ঠিকই, কিন্তু তা যেন সুদিনের কানে ঢুকছে না, আর ঢুকবেই বা কি করে, এখন সে যে আর তাতে নেই, সব কিছু তার গোলমাল হয়ে যাচ্ছে, সে কিছুতেই তার বর্তমানকে বিশ্বাস করতে পারছে না । হঠাৎ করে মনের মাঝে  ফুটে ওঠা শতশত গোলাপের সুভাস তাকে যেন কোন স্বপ্নময় জগতে ভাসিয়ে
নিয়ে চলেছে, এখন তার শুধু একটাই বাসনা এই পথ যেন শেষ না হয়। সম্বিৎ ফেরে সুদেষ্ণার ডাকে "এ কি রে সুদিন তুই তো প্রায় ভিজে যাচ্ছিস। চল দোকানের ওই শেডটার তলায় একটু দাঁড়াই। বৃষ্টিটা ধরলে না হয় যাব।"

         শেডের আলোআধারীতে সুদিন খুব কাছ থেকে সুদেষ্ণার মুখের দিকে চায়। নবারুণ মাধুরীতে সিক্ত ফর্সা মুখের স্মিত হাসি, দোল খেলানো মাথার চুল, মায়াবী চাওনি এক নিমেষে সুদিনকে নিঃস্ব করে দেয়। তার মনপ্রাণ কোন এক অচেনা মাদকতায় মত্ত হয়ে ওঠে । বিশ্ব সংসারে আজ তার আর কোনো দাবি নেই, সে আজ প্রকৃতই পূর্ণ।
       
       বৃষ্টিটা খানিক ধরতেই, সুদিনএর মন বিষাদে ভরে ওঠে। সুদেষ্ণা ওর বাড়ির কাছে আসতেই বলে "নে সুদিন এবার তুই আয় রে । আজ জল ঝড়ে তোর বেশ কষ্ট হল বল?" সুদিন কোন কথা বলে না । ঠোঁটের কোণে জোর করে একটু হাসি এনে মাথা নাড়ায়। মনে মনে ভাবে "হে গ্রীকদেবী আজ এই ভরা শ্রাবণের সন্ধ্যায় যে বহ্নিশিখা তুমি আমার বুকে জ্বালালে তা যে আর কোনোদিনই নেভার নয়।"

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন