শুনি পদধ্বনিঃ ভ্রষ্ট জীবনে চেতনার ছায়াপথ পিন্টু অধিকারী
'শুনি পদধ্বনি' কবি কান্তিলাল দাসের এক অনবদ্য শিল্পসত্তার কব্যিক সম্ভার যার প্রত্যেকটি কবিতা পাঠন্ত কবিকে নিয়ে যায় ধর্ম শিক্ষা , নীতি শিক্ষা, পাপ পুন্য সামজ্ঞস্য বোধের সেই সাহিত্য বাসরে যেখানে দাঁড়িয়ে পাঠক
সহজেই চিনে নিতে পারে ভ্রষ্ট জীবনে চেতনার ছায়াপথ ।
কবিকে ধন্যবাদ সেখানেই - ধৈর্য্য, প্রতীক্ষা ও সংযমের যে কাব্যরূপ তিনি বর্ণদানায় অঙ্কন করেছেন তা ব্যক্তিগত জীবন ও জগতের মাঝে একটা সেতু রচনা করে । গভীর অনুভূতির মাঝে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে । চিন্তার জগত ও কল্পনার জগতের মাঝে সমন্বয় সাধন করে । যার পদধ্বনি পাঠক ও সমাজ যে ভ্রষ্ট পথেই থাক না কেন ঘন্টা, আওয়াজ, সিগন্যাল সব একত্রিত করে চেতনার দ্বারি হয়ে দাঁড়ায় যা কবিকে ও তাঁর কাব্যগ্রন্থকে স্বার্থকতায় তুলে ধরে । যেমন - ''প্রতিটা নম্র ভোর জীবন কে ডেকে নিয়ে যায় ;'' / ''কেবল বৃষ্টিই পারে মাটির অনুপম ঘ্রাণে হৃদয় প্রকষ্ঠ খুলে দিতে'' / যে মানুষ ব্যবহৃত হয় ; জীবনের আঘ্রাণ তার থেকে দূরে থাকে সহস্র যোজন"/ "হনন বিদ্যা কে শেখালো মানুষ তোমাকে ? উত্তর আকাশে দেখো ; প্রশ্ন চিহ্ন ঝুলে রয় সপ্তর্ষিমন্ডলে "/ "মৃত সব ইচ্ছাগুলি আমিও ওড়াতে চাই "/ "এ পৃথিবী মহা ডাক ঘর ; প্রতিটি মানুষ চিঠি , বার্তা বুকে নিয়ে সমতলে, সমুদ্রে পর্বতে কেবলই বেড়ায় ঘুরে ; পড়ে নিতে হয় "।
বাস্তবিক এই কবিতায় কবির আত্মউপলব্ধি এক বিরামহীন আত্মদীক্ষার ভাষ্য বা জীবনদর্শনও বটে। জীবনের এই ডাকঘরে যা কিছু জীবনীয় রসদ তা আমাদের জীবনে ভাবের বৈচিত্র নিয়ে আসে মণি ও মুক্তোদানার মতন, আর তাতে চেতনা বিশুদ্ধ হয় ।
প্রণাম কবিকে এই হৃদয়হীন, নির্বিবেকী জীবন যাপনের সঠিক গতিময়তার প্রভেদটাই এই কাব্যগ্রন্থে তুলে ধরেছেন যে জীবনের সাথে আরেক জীবনের কোনো ভেদাভেদ এখানে নেই । অন্তরের বাইরের সমস্ত কোলাহল থেকে নিজেকে মুক্ত করলে তবেই প্রতিটি মানুষের জীবনে এক বিশুদ্ধ চেতনার পদধ্বনি অনুরণিত হবে যা এক অপার মুগ্ধতার বার্তা বয়ে আনবে এ শুধু কবির একার বিশ্বাস নয় এ আমাদেরও বিশ্বাস।
=======================
শুনি পদধ্বনি
কবি কান্তিলাল দাস
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন