google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re পায়েল খাঁড়ার অণুগল্প - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

বুধবার, ১৮ জুলাই, ২০১৮

পায়েল খাঁড়ার অণুগল্প

*বর্ষার অতিথি*




কপাটটা দড়াম করে খুলে গিয়ে এক আঁচলা বৃষ্টি এসে পড়ল মন্দাকিনীর গায়ে। কোলে
পাতা বর্ষামঙ্গলটা ভাঁজ করে রেখে বাইরের দিকে তাকালো সে।তার হাই পাওয়ারের
চশমার কাঁচেও মেঘ জমেছে—স্মৃতির মেঘ! এমনই এক আষাঢ়ের গোধূলি তার জীবনের সব রঙ
মুছে দিয়েছিল।চলে গেছিল হিমাদ্রী তাকে ছেড়ে, বাদলাবেলার পরম নিশ্চিন্ত ঘুমে
ঢলে পড়েছিল চিরকালের জন্য...

ওয়াকিং স্টিকটায় ভর দিয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো, এক পা ক'রে এগিয়ে গেল
জানালার আরও কাছে।দীর্ঘ ৪৮ বছর কেটে গেছে, তবু আজও যেন বর্ষার মেঘে সেই প্রিয়
মুখশ্রীটাকে খোঁজে তার ঝাপসা দৃষ্টি।

-দিদুন, দেখ কাকে এনেছি...

গলার স্বরটা বিশেষ পরিচিত মন্দাকিনীর।ওর সবচেয়ে প্রিয় স্টুডেন্ট পলশ্রীর
একমাত্র মেয়ে পারমিতা।অনেক বড় অব্ধি মন্দাকিনীর কাছে গান শিখেছিল পলশ্রী—বিয়ের
পরও প্রায়ই আসা-যাওয়া করত আর সাথে নিয়ে আসত ছোট্ট পারমিতাকে।নিজের নাতনির মতই
তাকে স্নেহ করত মন্দাকিনী।তাকেও বেশ কয়েক বছর গান শিখিয়েছিল তার পর আর পারেনি,
বয়সের ছাপ তার গলার স্বরেও পড়েছে।

মাস ছয়েক আগেই পরিণীতা হয়েছে পারমিতা।বিয়েতে আদরের দিদুনকে নিয়ে যাবার জন্য সে
অনেক জোরাজুরি করেছিল—মন্দাকিনী যায়নি, এ বয়সে শোরগোল আর ভালো লাগে না
তার।আশির্বাদ স্বরূপ নিজের সীতাহারটা পাঠিয়ে দিয়েছিল পলশ্রীর হাত দিয়ে।

মন্দাকিনী ঘুরে দাঁড়ালে পর দুজনেই পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করল তাকে।একটা জরুরী
কাজে বিয়ের পরের দিনই নবদম্পতিকে ইউএসএ চলে যেতে হয়েছিল, আজ সকালেই ফিরেছে ওরা
তাই এখন এসেছে নতুন জোড়ে দিদার আশির্বাদ নিতে।একটা লাজুক হাসি হেসে পারমিতা
বলল,

-দিদুন ও শৈল, তোমার নাতজামাই।

বিস্মৃতভাবে কাঁপা হাতে শৈল'র মুখাবয়ব ছুঁয়ে দেখল মন্দাকিনী।কি অদ্ভুত মিল—মেঘ
সরে গিয়ে দু'ফোঁটা নোনা জল গড়িয়ে পড়ল তার আবছা দৃষ্টিকোণ বেয়ে।

=================================================



PAYEL KHANRAH
C/O- BALARAM KHANRAH
AKRA DUTTA BAGAN
P.O- BARTALA
P.S- RABINDRANAGAR

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন