শ্রাবণ
বাইরে ঝমঝম বৃষ্টি। শ্রাবণ তার সবটুকু বিষাদ ঢেলে দিয়েছে শহরের বুকে।
জানালায় বসে প্রতীতি। নিজে উঠে বানাতে হবে বলেই কফির কাপটা নেই সাথে। রবি
ঠাকুরের সুর ছড়িয়ে পড়েছে ঘরময়। বাদলা বাতাস কেমন যেন তাকে অলস করে দেয়।
আশ্চর্য! এত বৃষ্টির মধ্যে সামনের বাড়ির পুচকিটা বেরিয়ে এসেছে দরজা
খুলে। রীতিমত জেদী হয়েছে মেয়েটা, কোনো কথা না শুনেই বাবার হাত ধরে টান
দিয়ে নিয়ে এসেছে দরজার কাছে। হলুদ ছাতা মাথায় মেয়েটার হাতে কাগজের নৌকো।
ভেতর থেকে ওর মা এসে জোর করে নিয়ে যাচ্ছে তাকে। বাবার মুখে অনাবিল হাসি।
মেয়ের হলুদ ছাতাখানি এখন তার হাতে। ছোট্ট প্রতীতিও একদিন ভিজেছিল বাবার
হাত ধরে। স্কুল থেকে আনতে যেত বাবা। ফিরতি পথে দুজনে ইচ্ছে করে ভিজে ফিরে
মায়ের বকুনি খেয়েছে অনেকবার। বাবার জন্যেই বাড়িতে জমে উঠত প্রতিটি
বৃষ্টির সন্ধ্যা... চা-পকোড়া-রবীন্দ্রসঙ্গীত-আড্ডা
দুটো বছর বিয়ের হয়ে গেল,তার একটা দিনও বৃষ্টি ভেজা নয়! বাবাও হয়তো আর
ভিজে ফেরেনা। মায়ের কাছে বোকা বোকা মুখ করে বকুনিও খায় না। বৃষ্টিটা
বড্ড পাজি তো! বাইরে ঠিক আছে, এখন তো বৃষ্টির ধারা সমান্তরালে ভাগ করে
ফেলেছে প্রতীতির গাল দুখানি। রবিঠাকুর তখনও সুর তুলেই চলেছে, 'শ্রাবণের
ধারার মত.....'
====================================================
মৌমিতা ঘোষাল
বেলিয়াতোড়,
বাঁকুড়া
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন