Featured Post

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

ছবি
   মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি মুদ্রিত  নবপ্রভাত  বইমেলা ২০২৫ সংখ্যার জন্য  প্রবন্ধ-নিবন্ধ, মুক্তগদ্য, রম্যরচনা, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া পাঠান।  যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে।  শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন  নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা ১২-১৪ লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি ৩০০/৩৫০শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। তবে একই মেলেই দেবেন। একজন ব্যক্তি একান্ত প্রয়োজন ছাড়া একাধিক মেল করবেন না।  লেখা  মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। লেখার সঙ্গে দেবেন  নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) ১) মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন 'মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা সংখ্যা ২০২৫-এর জন্য'।  ২) বানানের দিকে বিশেষ নজর দেবেন। ৩) যতিচিহ্নের আগে স্পেস না দিয়ে পরে দেবেন। ৪) বিশেষ কোন চিহ্ন (যেমন @ # *) ব্যবহার করবেন না। ৫) লেখার নীচে একটি ঘোষণা দিন:  'লেখাটি স্বরচিত ও অপ্রকাশিত'। মেল আইডি :  printednabapravat@gm

গল্প ।। সফলতাই শেষ কথা বলে ।। মিঠুন মুখার্জী

সফলতাই শেষ কথা বলে

মিঠুন মুখার্জী 


গ্ৰামের নাম গোবিন্দপুর। গ্ৰাম ছোটো হলেও বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা ছিল অবাক করার মতো । বহু বছর আগে বিহারী নামের একটি ছেলে এখানে বাস করত। অনেক পড়াশুনা করেও একটি চাকরি পায় নি সে। সংসারে ছিল বাবা - মা ও এক বোন। বাবার যা উপার্জন ছিল তাতে সংসার চলত না। বোনের বিয়েও দিতে পারে নি তারা। একটা কাজের জন্য অনেক মানুষের কাছে গিয়েছিল বিহারী। কিন্তু বিহারীর করুণ আর্তি কারো কানে পৌঁছায় নি। একসময় হতাশায় আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় সে। সে পাহাড়ের, থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নেয়। বাবা-মাকে বলেছিল --- " আমি একটি কাজ পেয়েছি। মাসে তিন হাজার টাকা দেবে খাওয়া-দাওয়া সমেত। তবে প্রথম একবছর আমাকে মালিকের বাড়ি থেকে কাজ করতে হবে। আমি মাসে মাসে তোমাদের টাকা পাঠাব। কাজটা শহরে।" বিহারীর মা বলেছিলেন --- "মাসে একবারও আসতে পারবি না? মালিকের সঙ্গে একবার কথা বলে দেখিস।" মায়ের কথা চুপচাপ শুনে বিহারী লাগেজ  নিয়ে চোখের জলে বাড়ি ছাড়ে। বাড়ির কেউই তার আসল উদ্দেশ্য বুঝতেই পারে না। বিহারী বাড়ি থেকে বেরিয়ে সোজা পাহাড়ে ওঠে। চোখে-মুখে হতাশার ছাপ, মনের মধ্যে জীবনে কিছু না করতে পারার যন্ত্রনা, দুচোখ ভিজে। ঝাঁপ দেওয়ার আগে অস্ফূট স্বরে বলে --- " মা, তোমরা আমায় ক্ষমা করো। জীবনে আমি তোমাদের জন্য কিছুই করতে পারি নি। বার বার ব্যর্থ হয়েছি। এ জগতের মানুষের কাছে আমি মূল্যহীন। তাই আমি আত্মহত্যার পথ বেঁছে নিলাম। তোমরা আমায় ক্ষমা করো। জানি লোকে আমায় কাপুরুষ বলবে। বলবে মরে পালিয়ে গেল, বেঁচে থেকে লড়াই করলো না। কিন্তু বেঁচে থেকে লোকের কথা শোনার থেকে মরে যাওয়াই ভালো। পিছনে অনেকেই অনেক কথা বলে।"
        যখন পাহাড় থেকে বিহারী ঝাঁপ দেবে তখন হঠাৎ সে দেখে একটি কাকের বাচ্চা বার বার ওড়ার চেষ্টা করছে, কিন্তু পারছেনা। তবে সেই পাখিটি চুপচাপ থাকছে না। না পারলেও পুনরায় চেষ্টা করছে। একসময় সেই কাকের বাচ্চাটি সত্যি সত্যি উড়ে চলে গেল। এটি দেখে বিহারী চিন্তা করল--- " এইটুকু পাখি যদি বার বার চেষ্টা করে সফল হতে পারে, তবে আমি কেন হতাশ হব, আমি কেনো হেরে যাব! বেঁচে থেকে বার বার চেষ্টা করতে হবে। সফলতা একদিন আসবেই। ব্যর্থতাকে কেউ মনে রাখে না। সফল হতে পারলে সকলে মাথায় তুলে নাচে। এটাই পৃথিবীর নিয়ম।" এরপর বিহারী চোখের জল মোছে। মৃত্যুর চিন্তা মাথা থেকে দূর করে সিদ্ধান্ত নেয়, সত্যি সত্যি সে শহরে চলে যাবে। সেখানে গিয়ে কঠোর পরিশ্রম করবে। একদিন গ্ৰামে ফিরে এসে সকলকে দেখিয়ে দেবে মানুষ চাইলে অনেককিছুই করতে পারে। যারা তাকে আজ অবহেলা করছে, তুচ্ছ মনে করছে, তারাই একদিন তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হবে।
         দেখতে দেখতে দশটি বছর কেটে যায়। এই দশ বছরে অনেক কিছুই পাল্টে যায়। শহরে গিয়ে বিহারী প্রথম দুই বছর একটি মটর সাইকেলের শোরুমে ম্যানেজারি করে। সামান্য যা মাইনে পেত তার বেশিরভাগটাই গ্ৰামে মায়ের কাছে পাঠিয়ে দেয়। মালিকের বিশ্বস্ত হয়ে ওঠে সে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত ব্যবসাটি বুঝে নেয় সে। মালিকের কোনো ছেলে - মেয়ে না থাকায় তিনি বিহারীকে একদিন বলেন--- " দেখো বিহারী, আমার বয়স হয়েছে, এখন আর শোরুমে যেতে পারি না। আজ থেকে পুরো ব্যবসা তোমায় দেখতে হবে। তোমাকে আমার ব্যবসার ত্রিশ শতাংশ মালিক করে দিলাম। তুমি এগিয়ে যাও।" কথায় বলে কাছা খুলতে সময় লাগে ভাগ্য খুলতে সময় লাগে না। এরপর পাঁচ বছরে ব্যবসায় অভাবনীয় উন্নতি করে বিহারী। শহরে আরও তিনটি শোরুম খোলে। শুধু দুচাকা নয় চার চাকার গাড়িও বিক্রি করে সে। ত্রিশের বেশি কর্মচারী নিয়োগ করে সে। তার ব্যবহারে মালিক থেকে শ্রমিক সকলেই খুব খুশি হয়। এরই মধ্যে বাবার কাছে টাকা পাঠিয়ে চকমকি বাড়ি বানায় বিহারী, সুপাত্র দেখে শহরে বোনের বিয়ে দেয়। কিন্তু দশবছরের মধ্যে কখনো বিহারী গ্ৰামে যায় না। বোনকে শহরে এনে বিয়ে দিয়েছিল। পাড়ার সকলে জানে বিহারী শহরে একটি ভালো কাজ পেয়েছে, তার দরুণ এসব হচ্ছে।
         দশবছর পর একদিন নিজস্ব চার চাকার গাড়ি নিয়ে বিহারী গ্ৰামে আসে। তার সাজ পোশাক পুরো পাল্টে গেছে দেখে সবাই অবাক হয়ে যান। গ্ৰামের ত্রিশ জন দরিদ্র মানুষকে বিহারী বস্ত্র দান করে। সকলে তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে ওঠে। সে গ্ৰামের মানুষদের জানায় ----" এই গ্ৰামে আজও দুটি জিনিসের অভাব। ভালো স্কুল ও পরিষ্কার হাসপাতাল। আমি আপনাদের কথা দিলাম আগামী একবছরের মধ্যে শ্রীহরির কৃপায় এই গ্ৰামে এই দুটিই হবে। আপনারা আমায় আশীর্বাদ করুণ।"গ্ৰামের মানুষেরা দুহাত তুলে বিহারীকে আশীর্বাদ করেন। যারা বিহারীকে একদিন অবজ্ঞা করত, একটি কাজও দিতে রাজি ছিল না, তারা এই খবর পেয়ে অবাক হয়ে যান। নিজেদের ভুল তারা বুঝতে পারেন। তারা বোঝেন কোনো মানুষকেই অবজ্ঞা করতে নেই। সময় কথা বলে। সময় ও ধৈর্য্য এ জগতে সবচেয়ে শক্তিশালী। বিহারীর কথা মতো একবছরের মধ্যে গোবিন্দপুর গ্রামে ভালো হাসপাতাল ও একটি স্কুল গড়ে ওঠে। গ্ৰামের মানুষ বিহারীকে মাথায় তুলে নাচে। তারা উপকৃত হন। বিহারীর সেদিন সেই কাকের বাচ্চার কথা মনে পড়ে। 

================

মিঠুন মুখার্জী
C/O-- গোবিন্দ মুখার্জী
গ্ৰাম : নবজীবন পল্লী
পোস্ট+থানা -- গোবরডাঙা
জেলা -- উত্তর ২৪ পরগণা
পিন-- 743252


মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪

লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি : মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা ২০২৫

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

মুদ্রিত নবপ্রভাত উৎসব ২০২৩ সংখ্যার ডাউনলোড লিঙ্ক