চিরভাস্বর জীবনপথিক
মানস কুমার সেনগুপ্ত
এক সুরসাধক এসেছিলেন এই ধরাধামে, যার বিশ্বজনীন সুরের ধারায় আমরা স্নাত হয়ে চলেছি অবিরত। এই তপ্ত বৈশাখে যে মানুষটির জন্ম , তাঁর কথা আর সুরের অনুষঙ্গে আমরা শুনতে পাই , ' চোক্ষে আমার তৃষ্ণা, ওগো তৃষ্ণা আমার বক্ষ জুড়ে, আমি বৃষ্টি বিহীন বৈশাখী দিন, সন্তাপে প্রাণ যায় যে পুড়ে'। সেই চিরায়ত কথা আর সুরের ধারা যেন মিলেমিশে যায় আমাদের প্রাত্যহীক জীবনের নানা বোধগম্যতায়।
তাঁর মৃত্যুর পর প্রায় তিরাশিটি বছর পেরিয়েও সেই সৃষ্টিশীল মানুষটির কথা আর সুরের ধারা মিলেমিশে থাকে আমাদের জীবনের সুখ- দুঃখ, আনন্দ - বেদনার নানা অনুভূতিতে। ২৫শে বৈশাখ দিনটি আমাদের কাছে বিশেষ করে বঙ্গজীবনে এক আলোকবর্তিকা । কারণ সেই দিনটিতে আপামর বাঙালি পেয়েছিল সুরের গুরু বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথকে। তাই তিনি আমাদের অহংকার। 'গীতাঞ্জলির' বিশ্বজনীন স্বীকৃতি আপামর ভারতবাসীকেও গর্বিত করে। বিশ্বকবি তাঁর গানের বাণীতে যখন বলেন, ' তোমার সুরের ধারা ঝরে যেথায় তারি পারে , দেবে কি গো বাসা আমায় একটি ধারে'? তখন বিশ্বকবির আত্ম উন্মোচনের নিরন্তর সাধনা মিলেমিশে আমাদের নিয়ে যায় এক ঐশ্বরিক সুরবোধের জগতে। তাঁরই রচিত গানে আমাদের এক আর্তি যেন গুঞ্জরিত হতে থাকে -'সুরের গুরু দাওগো সুরের দীক্ষা '। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ তাঁর আমিত্ব থেকে উত্তরণের নিরন্তর সাধনায় কথায়-সুরে এক ভিন্নতর জীবনবোধের পাঠ দিয়ে গেছেন আমাদের - 'কাঁদাও যদি কাঁদাও এবার, সুখের গ্লানি সয় না যে আর।' সুখেরও যে আবার গ্লানি হতে পারে একথা বোধহয় তিনিই বলতে পারেন। তাঁর কথা আর সুরের ধারা আমরা সত্যিই কি মিলিয়ে দিতে পারি আমাদের জীবনবোধের সার্থক উদযাপনে?
=============
মানস কুমার সেনগুপ্ত, ১৭/৮, আনন্দ মোহন বসু রোড, দমদম, কলকাতা ৭০০০৭৪,
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন