Featured Post
নিবন্ধ ।। রবি ঠাকুর ।। হারান চন্দ্র মিস্ত্রী
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
রবি ঠাকুর
হারান চন্দ্র মিস্ত্রী
ক্ষুদ্র বুদ্ধি দিয়ে রবীন্দ্রনাথকে আর কতটুকু চেনা যায়! তাঁকে নিয়ে যত আলোচনা করা হবে তত আলোচনার দিগন্ত খুলে যবে, আলোচনার পরিসর প্রসারিত হবে। তবে তাতে লাভ ছাড়া ক্ষতি নেই।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এমন প্রথিতযশা ব্যক্তি তাঁকে নিয়ে বাঙালীদের উত্তেজনা আছে। যাঁরা তাঁর লেখা সেই অর্থে পড়েননি, তাঁরাও তাঁকে নিয়ে গর্ববোধ করেন। দেবতা জাগ্রত হলে সেই দেবতার ইতিহাস গভীরভাবে কারো জানার প্রয়োজন হয় না, সেই দেবতার তুষ্ট করার জন্য পূজা দেওয়াই মুখ্য হয়ে ওঠে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তেমনই মন্দিরের প্রতিমা হয়ে উঠেছেন।
প্রতি বছর পঁচিশে বৈশাখ স্কুলে, ক্লাবে ঘটা করে রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন করা হয়। এই দিনটি রবীন্দ্র শিক্ষার একটি উল্লেখযোগ্য দিন। ছাত্র-ছাত্রী, ক্লাবের সদস্য, সাহিত্যসভায় উপস্থিত ব্যক্তিবর্গ রবীন্দ্রনাথের নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। তাঁকে জানেন, বোঝবার চেষ্টা করেন। রবি ঠাকুরের কবিতা পাঠ ও আবৃতি হয়, গান গাওয়া হয়। সেগুলি ধরাবাঁধা কিছু গান ও কবিতা। জন্ম-মৃত্যুর তারিখ আর বাবা-মায়ের নাম উল্লেখ করে অনেক বক্তা মঞ্চ থেকে নেমে পড়েন। এদের বেশিরভাগই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। আমি নিশ্চিত, রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে খুব কমই জানেন। আর এঁরাই বলার সুযোগ পান সবচেয়ে বেশি।
শ্রোতার শোনার মানসিকতাও কমে গিয়েছে। টিভি সিরিয়াল আর মোবাইলের শর্ট ভিডিও মানুষের জীবনের অধিক সময় খেয়ে ফেলছে। তাই তাত্বিক কথা এবং রবি ঠাকুরের গুরুগম্ভীর জীবনের তথ্য জানার মতো সময় ও স্পৃহা কোনটিই নেই বাঙালীর কাছে। তিনি বঙালীর কাছে বৃথা প্রাণের ঠাকুর হয়ে আছেন।
তবে রবীন্দ্রনাথ শৈশবে আমাদের হাতে দুখানা সহজপাঠ তুলে দিয়ে গেছেন। কী নেই সহজপাঠে। ছোটো খোকা কথা কওয়া শেখেনি। নিস্তারিণীর বিয়ের গল্প। ডাক্তারবাবুর রোগী দেখতে যাওয়া। ছোটো নদী সবই আছে সহজপাঠে। মহাকবির লেখা সহজপাঠ সহজে মুখস্থ হয়ে যায়। তাঁর লেখার এমনই কাব্যগুণ ও সাহিত্যমূল্য। বাঙালীর হৃদয়ে আমৃত্যু বেঁচে থাকে সহজপাঠের দর্শণ। রবীন্দ্রনাথকে মনে ঠাঁই দেওয়ার জন্য এটাই কম কী!
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন