Featured Post

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৬তম সংখ্যা ।। আষাঢ় ১৪৩১ জুন ২০২৪

ছবি
  সূচিপত্র  প্রবন্ধ-নিবন্ধ-মুক্তগদ্য-ভ্রমণকথা মেল্লক গ্রামের মদনগোপাল জীউর মন্দির ।। সায়ন মণ্ডল কথাসাহিত্যিক ও ঔপন্যাসিক সমরেশ মজুমদার ... হেমন্ত মুখোপাধ্যায় : জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি ।। উজান... আমার রবীন্দ্রনাথ ।। সত্যেন্দ্রনাথ পাইন বৈকালিক বৈশাখ ।। ছন্দা দাম বিশ্ব পরিবেশ দিবসে আমাদের সম্মিলিত অঙ্গীকার ।। পাভ... মে দিবস : অধিকারহরণ ।। শ্যামল হুদাতী শরীর ও মনের সুস্থতা ।। রতন বসাক মানুষ কী প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের নিকট ভৃত্যমাত্র? ।।... আমাদের পরিবেশ ভাবনা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত বিশ্বপ্রেম ।। আরতি মিত্র টান ।। মনোরঞ্জন ঘোষাল স্রষ্টার নিষ্ঠা ।। শংকর ব্রহ্ম বেগুনিয়া : বাংলার মন্দির স্থাপত্য ।। সু... ।। গল্প ।। বিকেল বাঁচাও আন্দোলন ।। সুবীর ঘোষ রাখে হরি তো মারে কে ।। সমীর কুমার দত্ত বিভ্রান্ত ।। রানা জামান সম্পর্ক ।। মাখনলাল প্রধান  ধারা মাস ঝরা মাস ।। প্রদীপ কুমার দে গল্পের মত অবিশ্বাস্য সত্য ।। বন্দনা সেনগুপ্ত ধর্মরাজ, লাখাই আর ডমরু সর্দারের গল্প... ভূতের বাচ্চা ।। নবী হোসেন নবীন গোধূলিবেলায় ।। সুচন্দ্রা বসু বিয়ে ।। রেজাউল করিম রোমেল ঘোড়ার ডিমের গল্প ।। প্রবোধ কুমার মৃধা নাত জামাই ।। সুদামক

ভ্রমণ কাহিনি ।। মার্বেল প্যালেসে ।। অগ্নিমিত্র

মার্বেল প্যালেসে

অগ্নিমিত্র 


   প্রাচীন শহর কলকাতা। তার রন্ধ্রে রন্ধ্রে, পরতে-পরতে ইতিহাস।  আর এই কলকাতায় আছে অনেক ঐতিহ্যবাহী ইমারত। .. তারই মধ্যে একটি মার্বেল প্যালেস। 

 

  ১৮৩৫ সালে বাবু রাজেন্দ্র মল্লিক  এই প্রাসাদ গড়ে তোলেন। একশো ছাব্বিশ ধরনের মার্বেল পাথর দিয়ে গড়ে তোলা হয় এই সুবিশাল অট্টালিকা, যা কলকাতার এক অন্যতম দ্রষ্টব্য মিউজিয়াম। এর অবস্থান মধ্য কলকাতার জোড়াসাঁকো অঞ্চলে, মুক্তারামবাবু স্ট্রিটে।

 

   এখানে প্রবেশ করতে এখন কোনো মূল্য বা কোনো অনুমতি লাগেনা। সরকারি যেকোনো পরিচয়পত্র হলেই ঢোকা যাবে ভিতরে। সময় সকাল দশটা থেকে বিকেল চারটে। যদিও সোমবার ও বৃহস্পতিবার বন্ধ থাকে মার্বেল প্যালেস। 

 

  ভিতরে ফটো তোলা সম্পূর্ণ বারণ। ভিতরে গেলেই দেখা যাবে সাদা রঙের জগন্নাথ মন্দির। তার সামনে বাবু রাজেন্দ্র মল্লিকের শ্বেত মর্মর মূর্তি। এই মন্দিরে নিত্যপূজা হয় তবে দর্শনার্থীদের এতে প্রবেশাধিকার নেই। মন্দিরটি তৈরী করেন রাজেন্দ্র মল্লিকের পিতা নীলমণি মল্লিক।  তারপর বাগান ও বুদ্ধমূর্তি দেখে দেখে নেওয়া যায় একটি পুকুর ও তার মাঝে এক ছোট্ট দ্বীপে মার্বেলের সুন্দর ভাস্কর্য।  দেখলাম, সেখানেই বসে ডানা শুকোচ্ছে একজোড়া পানকৌড়ি। ..

 

  এর পর দেখা যাবে মল্লিকদের ব্যক্তিগত জন্তু-জানোয়ারের সংগ্রহ বা মিনি-zoo । যেখানে আছে ময়ুর, বাঁদর, টিয়াপাখি বা Parakeet, বার- হেডেড গুজ, গোল্ডেন ফেজ্যান্ট ইত্যাদি। খাঁচাবন্দি পশুপাখিরা যে যার নিজের মতো খাচ্ছে ও ঘুরছে। তাদের জল খাবার জন্য জল ধরে রাখা আছে সুবিশাল ঝিনুক বা shell-এ।  গাছগাছালি অনেক। মাঝে মাঝেই দেখে মেলে নানা মর্মর মূর্তির ও সিংহের মূর্তির। খাস কলকাতার বুকে এরকম পরিবেশ ভাবাই যায় না।

 

   তারপরে মাঠ আর বাগান পেরিয়ে মূল প্রাসাদে পৌঁছনো যাবে। প্রবেশ করতে হলে চটি বা জুতো বাইরে রাখতে হবে। আর দেখা যাবে প্রবেশপথের দুপাশে দুটি বিরাটকায় সম্বর হরিণ বা Moose deer-এর স্টাফ করা শিংসমেত মাথা।

 

   এই মল্লিকেরা সোনার ব্যবসা করতেন। কলকাতা শহরে এদের তিনশো পঁয়ষট্টিটি জমি-বাড়ি ইত্যাদি রয়েছে।...এমনকি আলিপুর চিড়িয়াখানাও এঁদের দান করা জমিতেই গড়ে উঠেছিল।

 

  প্রথমে ভিতরে দেখা যাবে বিলিয়ার্ডস টেবল্ ও পুল টেবল্। তার সাথে রঙ-করা বিভিন্ন মার্বেলের মূর্তি। মেঝে ইটালিয়ান মার্বেলের। বেলজিয়ান কাঁচের এক সুবিশাল আয়না দেখলাম। এরপর আছে মিউজিক রুম, যেখানে পন্ডিত রবিশঙ্করের দান করা সেতার, তবলা ও হাতির দাঁত রাখা আছে। আছে এককোণে পড়ে থাকা একটি পিয়ানো। আছে বিদেশী অতিথিদের দান করা নানা বই ও অন্যান্য জিনিস। আর এই বিশাল ঘরের দুপাশে আছে  idiot, imbecile, summer, winter, spring, autumn ইত্যাদির প্রতীকী মূর্তি। আছে সুদৃশ্য বিদেশি ফুলদানি ও কিছু ব্রোঞ্জের মূর্তি । পরের ঘরটিতে কাঠের কারুকার্য করা বীম ও রাণী ভিক্টোরিয়ার মূর্তি দৃশ্যমান।  একপাশে গুটিয়ে রাখা আছে এক বিরাট কার্পেট, যাতে মার্বেলের মেঝের মতোই হুবহু কারুকাজ করা।...

 

   ভিতরের অংশ কিছুটা দেখা গেল। দেখি একটা বিরাট খোলা অংশ, যেখানে মন্ডপে আজও কালীপুজো ও সরস্বতী পুজো হয়। দুপুরে আজও কাঙালি ভোজন করানো হয় এখান থেকে। এখানেও মার্বেলের নানা জিনিস দেখলাম। একপাশে কাঠের ও ধাতব খাঁচায় আছে কাকাতুয়া, ম্যাকাউ ( Macaw), বদরিকা, লাভ বার্ড, African grey parrot প্রভৃতি পাখি। ছোলা ও মুগডাল খুঁটে খুঁটে খাচ্ছে তারা।

 

  কাজ চলছে বলে উপরে যাওয়া গেল না।... নীচ থেকেই আমরা দেখলাম বিভিন্ন দুষ্প্রাপ্য তৈলচিত্র ও ঝাড়লন্ঠন। 

 

  সময় যেন এখানে এসে থমকে দাঁড়িয়েছে। সেই সময়কার ' বাবু'-দের বিলাস-বৈভব ও প্রতিপত্তি কোন মাত্রায় পৌঁছেছিল , তা বোঝা যায় এখানে এলে। একবেলার অবসরে যাওয়াই যায় মার্বেল প্যালেসে।।..

🌸🌸🌸🌸🌸🌸





মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৬৭তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৬তম সংখ্যা ।। আষাঢ় ১৪৩১ জুন ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৫তম সংখ্যা ।। জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ মে ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৬৬তম সংখ্যা ।। ভাদ্র ১৪৩০ আগস্ট ২০২৩

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত