Featured Post

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৬তম সংখ্যা ।। আষাঢ় ১৪৩১ জুন ২০২৪

ছবি
  সূচিপত্র  প্রবন্ধ-নিবন্ধ-মুক্তগদ্য-ভ্রমণকথা মেল্লক গ্রামের মদনগোপাল জীউর মন্দির ।। সায়ন মণ্ডল কথাসাহিত্যিক ও ঔপন্যাসিক সমরেশ মজুমদার ... হেমন্ত মুখোপাধ্যায় : জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি ।। উজান... আমার রবীন্দ্রনাথ ।। সত্যেন্দ্রনাথ পাইন বৈকালিক বৈশাখ ।। ছন্দা দাম বিশ্ব পরিবেশ দিবসে আমাদের সম্মিলিত অঙ্গীকার ।। পাভ... মে দিবস : অধিকারহরণ ।। শ্যামল হুদাতী শরীর ও মনের সুস্থতা ।। রতন বসাক মানুষ কী প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের নিকট ভৃত্যমাত্র? ।।... আমাদের পরিবেশ ভাবনা ।। মানস কুমার সেনগুপ্ত বিশ্বপ্রেম ।। আরতি মিত্র টান ।। মনোরঞ্জন ঘোষাল স্রষ্টার নিষ্ঠা ।। শংকর ব্রহ্ম বেগুনিয়া : বাংলার মন্দির স্থাপত্য ।। সু... ।। গল্প ।। বিকেল বাঁচাও আন্দোলন ।। সুবীর ঘোষ রাখে হরি তো মারে কে ।। সমীর কুমার দত্ত বিভ্রান্ত ।। রানা জামান সম্পর্ক ।। মাখনলাল প্রধান  ধারা মাস ঝরা মাস ।। প্রদীপ কুমার দে গল্পের মত অবিশ্বাস্য সত্য ।। বন্দনা সেনগুপ্ত ধর্মরাজ, লাখাই আর ডমরু সর্দারের গল্প... ভূতের বাচ্চা ।। নবী হোসেন নবীন গোধূলিবেলায় ।। সুচন্দ্রা বসু বিয়ে ।। রেজাউল করিম রোমেল ঘোড়ার ডিমের গল্প ।। প্রবোধ কুমার মৃধা নাত জামাই ।। সুদামক

কবিতা ।। আমি পৃথিবী বলছি ।। অনিন্দ্য পাল

আমি পৃথিবী বলছি 

অনিন্দ্য পাল


হ্যালো হ্যালো 
পরম ব্রহ্ম 
শুনতে পাচ্ছ? 
আমি পৃথিবী বলছি! পৃথিবী! 
ঠিকানা সৌরগ্রাম, মিল্কিওয়ে। 
শুনতে পাচ্ছ তো? হ্যাঁ আবার বলছি
আমি পৃথিবী বলছি - 
মনে আছে তোমার সেই কবে বানিয়েছিলে
আগুনের গোলার মত আমাকে
ছেড়ে দিয়েছিলে বনবন চক্করের রাস্তায়
মনে আছে? মনে আছে তোমার? 
তপ্ত দহনে জ্বলেছি কোটি কোটি বছর
বিস্ফোরিত করেছি নিজেই নিজেকে
যন্ত্রণায় কেঁদেছি লক্ষ লক্ষ দিন
আসেনি কেউ সান্ত্বনা দিতে
দেখায়নি কেউ ভালোবাসার স্বপ্ন রঙিন

জমে গেল দেহতলে 
যত ঝরেছিল কান্নাজল 
ক্ষত-বিক্ষত শরীরের নষ্ট-উঠোনে কষ্টস্রোত
বয়ে গেল রয়ে গেল চিহ্নসকল 
 বয়ে গেলাম আমিও
পাহাড় পর্বত আর সমস্ত গোপন গুহা ছুঁয়ে
দিন আর রাতের পানসি বেয়ে একদিন পৌঁছে গেলাম
যেখানে তুমি একলাটি ছিলে শুয়ে; 
 
ওই অত আগুন যখন নিভে গেল ঝুপ করে
আমার শরীরে এল বসন্ত 
সেই স্রোতে তুমিও দিলে ডুব
গর্ভে এল আমার "জীবন" 
সেই শুরু, আমার কোল শূন্য হয়নি আজও 
তবু যারা ছিল তারা নেই এখন 
হারিয়ে গেছে কালের গভীর গুহায়
আজ যারা আছে তাদের জন্য বড় ভয় হয় 
নিশ্চিহ্ণ হবে না তো এরা ডাইনোসরদের মত
অথবা এই সভ্যতার ঠাঁই হবে না তো কখনও
দশফুট বরফের নীচে নিশ্চিন্ত সমাধীতে? 

সময়কে ধারণ করতে পেরেছ তুমি
পরম ব্রহ্ম
অথচ সময়ের গণ্ডিতে আটকে গেছি আমি
পাকে-চক্করে 
ঘুরন্ত এই জীবনকালে পেরিয়ে এসেছি অসংখ্য জন্ম
তোমার তূণীর থেকে ছুটে আসা পর্যটক বাণের মত ভেদ করে এসেছি
পাঁচটা হলফনামা
প্রতিপাতায় লেখা আছে যার এক একটা মহাধ্বংস এবং
আমার কোল খালি হবার ইতিহাস
তারপর আবার সৃষ্টি-সন্ন্যাসী হৃদয় হাতে নিয়ে দাঁড়িয়েছে আমার
আধবোজা চোখের সামনে
মগ্ন হয়েছে আমার রূপ - যৌবনে 
আমিও ফুটে উঠেছি তরলে কঠিনে
সাঁতরে পেরিয়ে এসেছি বিশ্বায়িত চিতার ছাইসকল এবং
আবারও তুমি বুনেছ বীজ
আবারও আমি জঠরে ধরেছি পরবর্তী কোলাহল

এই সমস্ত লবণাক্ততা
এই সমস্ত নীল
এই সমস্ত সবুজের সাদা পাতায় লেখা আছে
তোমার স্বাক্ষর
তোমার অহমিকা বুকে নিয়ে এই চরাচর
পাকে-চক্রে গৃহস্থবলয়
তুমি জানো এই সৃষ্টিরও শেষে হিসেবি লয়
এই আটশ কোটি মন
যখন তখন
মিশে যেতে পারে তোমার আত্মায়
অণু-পরমাণু 
রাধা-কাণু 
অথবা আল্লা - ঈশ্বর - গড
লীন হবে একটাই মায়ায়। 

সময়ের বাঁশি বাজছে
এ তোমার চেনা সুর নয়
মানুষই ভৈরবী ঠাট 
মানুষই মহাকাল প্রলয়
নখরে শ্বদন্তে চেঁচে তুলে নিয়েছে আমার
আব্রু ত্বক
উড়িয়েছে ধুলো আর ছিঁড়েছে সবুজ স্তবক
আমার শরীর ছিল আদি কবিতার মত
পেলব
মায়াময়
মানুষের লোভ ক্ষোভ অক্ষরে সে পংক্তিমালা এখন 
অবাক সভয়
আকাশ ছুঁতে চায় শুধু খিদে পায়
রক্ত-মাংসে আমার শুধু তার অধিকার? 
আর ওই যে নীরব বসতি
আমার সব সহনের আদিম সন্ততি
একে একে ওদেরও মুছছে সবুজ
আমি উষ্ণ হচ্ছি বাড়ছে আমার অভিশপ্ত কুঁজ
মন্থরা হয়ে বেঁচে আছি সভ্যতার প্রাসাদ-কুঠুরিতে 
রোজ বাড়ছে আহত অস্তিত্বের বিষাক্ত পুঁজ
মেঘ পেরিয়ে উঠে গেছে কালো ধোঁয়া
মানবতা আধখাওয়া আধশোয়া
মাটি নয়
প্রাণ নয়
ভালোবাসা নিংড়ে এখন শুধু যুদ্ধ-সময়
সীমানা কার কতটা, 
দখল করেছে কে কত মৃতদেহের শয়নকক্ষ
এ হিসেব চলছে মহাদেশ সাগর জুড়ে
হে ব্রহ্ম
আমি কি বেঁচে আছি? চিতা জ্বলছে
কফিন বন্দী লোভের অন্ধকারে ডুবছে আরও
আরও লোভ খুঁড়ে খুঁড়ে
আরও হত্যা, আরও মৃত্যু, আরও আরও চাই সম্পদ
আমার ধমনীতে সেঁকো বিষ
শেষ হয়ে এল প্রত্নজল, শেষ হয়ে এল সু-জনপদ 
মায়ের হাতে সন্তান বলি, সন্তানের হাতে মা
ধর্ষিত নারী আমি কি পারি বিলিয়ে যেতে ক্ষমা? 
নীতি নেই কোন নেই সত্যের অনুসরণ
দুরাচার পাপ আর মিথ্যার নাড়ি ন্যায়হীন নিঃসরণ
এত প্রেমহীন তবুও এখনও
পশলা খানেক ঝরে শিউলি পলাশ
এত রক্ত এত হত্যা তবু এখনও হাসে শিশু-কাশ 
এখনও মায়ের স্তন পান করে দেয়ালা করে শিশু 
কচি ঘাসে এখনও শিশির বিন্দু নাচে কৃষ্ণ নাচে যিশু!  

শুনছো পরম ব্রহ্ম
হ্যালো হ্যালো হ্যালো! 
লাইনটা গোলমেলে বড়
মাঝখানে এত দলাদলি রং ঢলাঢলি
এত অসত্য মিথ্যা আর কটু-বলাবলি 
কতটা শুনতে পাও তুমি? 
এ দায় তোমার
সৃষ্টির কথা শোনার
যদি না পারো এ শব্দ শুনে বুঝে নিতে
এস পৃথিবীতে
বজ্র আর পারিজাত নিয়ে এস
অনর্থক এই বিপনিতে
এস ব্রহ্ম, তাণ্ডব নিয়ে এস আবার বিশঙ্ক পৃথিবীতে 
আবার ধ্বংস হোক
মুছে যাক আবার এই কালো ধোঁয়া ধূসর মন খারাপ! 
হে পরম
হে ব্রহ্ম 
নতুন আলো নিয়ে এস আবার 
এই নীল দেহে
সস্নেহে
আনো নতুন সৃষ্টি আনো নতুন বন্যা ভালোবাসবার। 

==============
অনিন্দ্য পাল 
চম্পাহাটি, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা। পশ্চিমবঙ্গ 

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় লেখা

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৬৭তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৬তম সংখ্যা ।। আষাঢ় ১৪৩১ জুন ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৫তম সংখ্যা ।। জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ মে ২০২৪

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৬৬তম সংখ্যা ।। ভাদ্র ১৪৩০ আগস্ট ২০২৩

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত