google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re নিবন্ধ ।। আমার রবীন্দ্রনাথ ।। সত্যেন্দ্রনাথ পাইন - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

রবিবার, ১৬ জুন, ২০২৪

নিবন্ধ ।। আমার রবীন্দ্রনাথ ।। সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

Rabindranath_Tagore

আমার রবীন্দ্রনাথ

 সত্যেন্দ্রনাথ পাইন


রবিঠাকুরের জীবনস্মৃতি পড়ে এটুকু মনে হয়েছে যে এখানে ভাষার চাতুর্য্য বড্ড বেশি শাসনের দেবতা, ও নিয়মের দেবতার আসন পরম ভক্তিতে ব্রহ্মবিদ্যায় প্রেম ভক্তির ধর্মীয় আলোচনা করে আমাদের জ্ঞানের বহু পল্লবিত যাগযজ্ঞের বেড়া ভেঙে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মূলহোতা করতে উঠে পড়ে লেগেছেন যেন।

     এটাই বোধকরি বই পড়ার মধ্যে বৈপ্লবিক পরিবর্তনঘটিয়েছে আমার। একদিকে ব্রহ্মজ্ঞানের   অনুশীলন আর অন্যদিকে  নিজ হাতে বই নিয়ে বইয়ের প্রতি অনুরাগ বাড়িয়েছে। তাহলেও রবীন্দ্রনাথ রবীন্দ্রনাথই এবং তাঁর সৃষ্ট লেখনীর বিস্তার ক্ষমা গুনে আমাকে বইরূপ গোপালনে দক্ষ করেছে।

   এরপরে আমি যেটাই বলি বা লিখি না কেন তা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে  কিংবা তাঁর বিদগ্ধ সমালোচনায়  যৎসামান্য বলেই খ্যাত হবে ।

কিন্তু  বিপদ হলো যে, আগে আমাদের সমাজে ব্রাহ্মণ ও ক্ষত্রিয় এই দুই শক্তি দিয়ে আমরা  বিভক্ত ছিলাম। এখন এটা আর সেরকমই নেই। তবুও প্রতিযোগিতা থেকে কেউ যেন বিচ্ছিন্ন নয়। এখন প্রচুর লেখালেখি হচ্ছে। যেটা  আর ব্রাহ্মণকূল বা ক্ষত্রিয় নিয়ন্ত্রণে নেই। বাধাহীনভাবে সবাই এগিয়ে চলেছে । তাতেই যেন আত্মপ্রসাদ  লাভ করছি।। এ যেন সেই আমাদের বাহ্যিক আবর্জনা দূর করতে জলশৌচের ব্যবস্থা আর কী!  আমাদের চিৎশক্তির উন্মেষ ঘটেছে বলে আমরা স্বমহিমায় বিকশিত হতে  পারছি। ফলে আমরা নিভৃতে যতনে নাপন্থী থেকে লেখক পন্থী নির্বাচিত হতেও পেরেছি।

   যদিও আমরা অতটা উদ্বোধন করে উঠতে পেরেছি কিনা  জানি না।তবুও অনভ্যাসের বেষ্টনকে অন্তঃপুরে রেখে বেরিয়ে আসতে পেরেছি। এটাই প্রাপ্তির সাথে নিষ্ফল ভিক্ষাবৃত্তি নয় বরং দারিদ্রের চরম দুর্গতি থেকে নিষ্কৃতি বলা যেতেই পারে।

   আমরা জড়ত্বকে মাথায় না রেখে বিক্ষিপ্ত লগ্নে বাধাহীন হয়ে বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় ঔদার্য হয়ে উঠতে পারছি বলতে পারি।

আমরা সম্পূর্ণ আস্থা নিয়েই জেগে উঠে বিশ্বসভায় নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে পারছি। এটা আকর্ষণীয় আকাশকুসুম কল্পনা নয় , শীতকালে ঈষোদুষ্ণ গরম জলে স্নানের চেষ্টা আর কি! এখানে গোষ্ঠী ও জাতির অস্তিত্ব নেই। আছে নিজের প্রতিভার প্রতি আহ্বান।

      আমাদের পরিচয়ের ভাগ আছে, যেটা চিরন্তন এবং নিয়তই সৃজনশীল। আমরা আগাগোড়া বাঙালি ভদ্রলোক বলেই বিবেচিত হয়েছি , সেটা হতে পারে স্বামীজীর বানী নিয়ে, নয়তো কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের বিভিন্ন ধরনের লেখনীর ব্যায়াম নিয়ে। যাই হোক সীমার মাঝে অসীম হয়ে আজ আমরা প্রতিনিয়ত পাক্কা খেলোয়াড়।। আমরা নিকৃষ্টতাকে বর্জন করে মৃতপ্রায় অবস্থায় নিরর্থক মূঢ়তাকে উপবাসী রাখতে পেরেছি, ঘোরতর অন্ধকারে দুহাতে অদ্ভুত ভাবে দীপ জ্বালিয়ে দুঃস্বপ্নকে চৈতন্যের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করতে পেরেছি।

  তাই আমরা গর্বিত মনে রবীন্দ্রনাথের দুটি পায়ে প্রণাম করে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ফিরে পাবার সাধনায় উদ্যত হয়েছি।।  এর ফলে পাকা নাকি লজ্জায় মুখ নীচু এটা বলা যাবে না হয়তো।  তবে আমরা তামসিকতায় আত্মসমর্পণ করেছি  এটাও বলতে পারি না।

       তাই রবীন্দ্রনাথ আমাদের যৌবন জ্বালা মেটাতে যা করেছেন তা আমাদের বরাবরের মতো থেকে যাচ্ছে। আমরা হয়তো কেউ মাতাল, কেউবা পঞ্চম শ্রেণীর পাঠরত। তবুও আমরা নিরলস ভাবে কোনো গোষ্ঠী ভুক্ত  যে নই তা এককথায় বলতে পারি। আমাদের পরিচয় আমরা মানুষ এবং ভালোবাসা দিবসে সত্যকে আঁকড়ে ধরে যেমন খুশি যেখানে খুশি যেতে পারি নিসংকোচে।

   আমরা তো মায়ের শ্রাদ্ধ করছি না । আবার জগৎপিতার  প্রয়ানে সন্তানের প্রতি নির্লজ্জতার প্রকাশও করছি না । আমরা বিশ্বের অনন্ত পিতা-মাতাকে চন্দ্রসূর্য মনে করে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুত হচ্ছি।

আমরা ত্যাগ করতে জানি এবং পদে পদে জ্যোতির্ময় কল্যাণের আহ্বানে নতুন অধ্যায় সূচিত করে অভ্যুদয়ের অভিমুখে নতুন অধ্যায় সূচিত করছি। আমাদের শিক্ষা ও শক্তি যেন সজাগ ভাবে বিশ্বমানের হতে পারে তারই অভ্যাস করছি। বুদ্ধিতে, প্রেমে, আনন্দে মশগুল থাকতে আমরা সদা জাগ্রত হয়ে বিচিত্রতায় ভিন্নতা দেখা যাবে এটা প্রমাণিত হয়েছে বলতে পারি যেন।। আমাদের ডাকে সমগ্র বিশ্ব সাড়া দেবে বলেই দৃঢ়  বিশ্বাস।

   সমাপ্ত না হয়েও বিদ্যুৎ মতোই সমাপ্তির দিকে। আমরা অনু-পরমানু। পরস্পরকে জড়িয়ে ধরেই বাঁচতে চাই। আমাদের শিক্ষা ও শক্তি বিশ্বব্যাপী। টানলেও ছিঁড়বে না। আবার যখন সাগরে ভাসিয়ে দেবে সাগরের তুফান হতেও পিছপা হবো না। আমরা স্বতন্ত্র। আমাদের আমিত্ব নেই। আমি অবশিষ্ট।

    আমার মধ্যে কিচ্ছু নেই অথচ সবকিছু ই আছে। কারণ আমি প্রেমের, আমি চিরকালের, আমি প্রার্থনা। আমি স্বহোং। আমি সুর বাঁধি আবার হাসিমুখে বিশ্বজিতের মূঢ়তাকে ভেঙে দৃষ্টি আকর্ষণ করি।‌

  আমি পাপী, তবুও বন্ধুত্বকে বিশ্বাস করি। আমার দায়িত্ব কঠিন, খুশিও প্রবল।। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন