google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re নিবন্ধ ।। বেগুনিয়া : বাংলার মন্দির স্থাপত্য ।। সুজয় সাহা - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

রবিবার, ১৬ জুন, ২০২৪

নিবন্ধ ।। বেগুনিয়া : বাংলার মন্দির স্থাপত্য ।। সুজয় সাহা

বেগুনিয়া : বাংলার মন্দির স্থাপত্য

সুজয় সাহা


বরাকরে দামোদর নদের প্রায় কোল ঘেঁষে চারটি মন্দির একত্রে বেগুনিয়া নামে পরিচিত। সুপরিচিত ঐতিহাসিক, নান্দনিক এবং অপরিসীম প্রত্নতাত্ত্বিক মূল্যের নিদর্শন এই মন্দিরগুলো। আগে মোট ৫টি মন্দির ছিল। বর্তমানে চারটি অপূর্ব সুন্দর পাথরের দেউল অবশিষ্ট, এদের একত্রে সিদ্ধেশ্বর মন্দির বলা হয়। তৃতীয় মন্দিরটি পশ্চিমমুখী বাকিগুলো সব পূর্বমুখী। চতুর্থ মন্দিরটি বাংলার সর্বপ্রাচীন দেউল স্থাপত্য বেগুনিয়া নামটি একটু অদ্ভূত।এই মন্দির গুলির শিখরের আকৃতির সঙ্গে অনেকাংশে আধকাটা বেগুনের সাদৃশ্য আছে বলে এই জায়গার নাম বেগুনিয়ার মন্দির।বাংলার প্রাচীনতম পাথরের দেউল সামনের দিক থেকে শেষ বা চতুর্থ এবং ক্ষুদ্রতম মন্দিরটি। জোসেফ বেগেলার সাহেব পঞম মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের বিবরণ দিয়েছেন, এখন সেই পঞ্চম মন্দিরের চিহ্ন নেই। এছাড়াও অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেছে সামনের বাঁদিকের মন্দির গাত্রের শিলা লিপিটি। প্রথম মন্দিরে তিনটি শিবলিঙ্গ ও কালী মূর্তি, দ্বিতীয়টিতে তিনটি শিবলিঙ্গ ও গনেশ মূর্তি,তৃতীয় মন্দিরটিতে পাঁচটি শিবলিঙ্গ ও একটি পাথরের মাছ দেখা যায়। চতুর্থ মন্দিরের আরাধ্য দেবতা সিদ্ধেশ্বর শিবের নামেই তাই এই মন্দির গুচ্ছের নাম সিদ্ধেশ্বর মন্দির।এই ছোট মন্দিরটি বাংলার সর্বপ্রথম দেউল এবং সম্ভবত অষ্টম শতকে নির্মিত।


পাথরের তৈরি দেউল মন্দির পশ্চিমবঙ্গে বিরল। অলংকরণ, আকার, নান্দনিকতা দিয়ে বিচার করলে একমাত্র পুরুলিয়ার বান্দার দেউল এর সঙ্গেই বেগুনিয়ার মন্দিরের তুলনা করা যায়। চতুর্থ মন্দিরটি রেখা বা শিখর দেউলের সর্ব প্রাচীন উদাহরণ।নিচু ভীতের উপর উঁচু গর্ভগৃহ। গোড়া থেকেই শিখরের ক্রমবক্র রেখা উপরে উঠে গেছে। শিখরের পগ রেখাগুলো যেন অসংখ্য লোহার পাতের মতোন মন্দিরকে বেষ্টন করে আছে।


প্রতিটি মন্দির গাত্রে অসম্ভব সুন্দর পাথরের মূর্তি যেমন উড়ন্ত সিংহ,মকর, রাক্ষসের মতো কীর্তি মুখ। এছাড়াও বিভিন্ন দেবদেবী, অনন্ত সজ্জায় বিষ্ণু, অসংখ্য মৎস্যকন্যা আছে মন্দির জুড়ে।


স্থাপত্যের দিক দিয়ে এই মন্দিরটি ভুবনেশ্বরএর পরশুরামেশ্বর মন্দিরের সময়কালীন, অর্থাৎ অষ্টম শতকে তৈরি। পরশুরামেশ্বর মন্দিরে বিমানের সাথে যুক্ত আছে জগমোহন,যা এই মন্দিরে নেই। এছাড়া ওড়িশার রেখা দেউল এর মন্দিরগুলোর আমলকগুলো উত্তল, কিন্তু বরাকর মন্দিরের আমলকগুলো অবতল।

.............................

তথ্যসূত্র:
১/মন্দির স্থাপত্য –১৪, শিল্পকলা, বাংলা লাইব্রেরী

২/বিনয় ঘোষ, পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি


================

Sujoy Saha
natungram, rishra Hooghly


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন