পোস্টগুলি

Featured Post

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

ছবি
  "নবপ্রভাত" সাহিত্যপত্রের ৩০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে আমরা নির্বাচিত কয়েকজন কবি-সাহিত্যিক ও পত্রিকা সম্পাদককে স্মারক সম্মাননা জানাতে চাই। শ্রদ্ধেয় কবি-সাহিত্যিক-নাট্যকারদের (এমনকি প্রকাশকদের) প্রতি আবেদন, আপনাদের প্রকাশিত গ্রন্থ আমাদের পাঠান। সঙ্গে দিন লেখক পরিচিতি। একক গ্রন্থ, যৌথ গ্রন্থ, সম্পাদিত সংকলন সবই পাঠাতে পারেন। বইয়ের সঙ্গে দিন লেখকের/সম্পাদকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি।  ২০১৯ থেকে ২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত গ্রন্থ পাঠানো যাবে। মাননীয় সম্পাদকগণ তাঁদের প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠান। সঙ্গে জানান পত্রিকার লড়াই সংগ্রামের ইতিহাস। ২০২৩-২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠানো যাবে। শুধুমাত্র প্রাপ্ত গ্রন্থগুলির মধ্য থেকে আমরা কয়েকজন কবি / ছড়াকার / কথাকার / প্রাবন্ধিক/ নাট্যকার এবং সম্পাদককে সম্মাননা জ্ঞাপন করে ধন্য হব কলকাতার কোনো একটি হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে (অক্টোবর/নভেম্বর ২০২৪)।  আমন্ত্রণ পাবেন সকলেই। প্রাপ্ত সমস্ত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকার পরিচিতি এবং বাছাই কিছু গ্রন্থ ও পত্রিকার আলোচনা ছাপা হবে নবপ্রভাতের স্মারক সংখ্যায়। আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য। ঠিকানাঃ নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদকঃ নব

রীনা তালুকদারের প্রবন্ধ ও কবিতাগুচ্ছ

ছবি
 বিশ্ব কবিতায় বর্ষার সেকাল একাল কিংবদন্তী ক্ষণার বর্ষার উক্তি হচ্ছে: চৈত্রেতে থর থর বৈশাখেতে ঝয় পাথর জ্যৈষ্ঠতে তারা ফুটে, তবে জানবে বর্ষা বটে। ছোট্ট বেলায় বর্ষা কেটেছে হাটুজল বিলের শাপলা ফোটা শুভ্র সকাল দেখে দেখে। একদল দস্যু তারুণ্যের শাপলা তোলার আনন্দে। চারদিক টুপটাপ বৃষ্টির শব্দ আর টইটম্বুর ভিজা ভিজা প্রকৃতির সবুজ আঁচল। বৃষ্টির ফোটায় ফোটায় কলাপাতার নড়ে চড়ে ওঠা আর কচু পাতার হঠাৎ হঠাৎ চিৎপটাঙ তারই মধ্যে কোলা ব্যাঙের বৃষ্টি হতে নিজেকে লুকাবার জানবাজি চেষ্টা। মেঘদেবের ডমরু ডাক ধূসর অন্ধকারে দখিণা জানালার দৃশ্যপট। রাত্রির উন্মাতাল ঝড়ের তান্ডবে চৌচালা ঘরের পশ্চিমে পুকুর পাড়ে ছিঁড়া কদমের বুক ভরা হাহাকারের সকরুণ দৃশ্য। বাংলার প্রকৃতির বর্ষা ঋতু বড় অস্থির করে সারাটা সময়। উজানী পোয়াতি পুঁটি লাল বেনারশী পরে জল রেখে জয় করতে চায় ডাঙ্গার আদর। কলমীর চিকন ডালে লাগে জলজ হাওয়া। দোয়েল পাখিটা মত্ত হয় নৃত্যে। বর্ষায় হয় তার আরোজ গোসল। দাঁড় কাকটি ভিজে জবুথুবু দেয়ালের আড়ালে। বাংলা ষড়ঋতুর দ্বিতীয় ঋতু বর্ষা। বর্ষা বলেই আকাশের বিরহ ব্যথা প্রবল হয়ে ওঠে। বর্ষার বৃষ্টিতে ভিজলে শাপ মোচন হয়। বর

জয়ীতা ব্যানার্জী গোস্বামীর কবিতা

ছবি
মেঘবেলা ------------------ (১) কতদিন হয়ে গেল যাতায়াত কমেছে গানের চিলেকোঠা মরশুম অতখানি নজরে পড়েনা বিকেল বেলার মতো অবসর দোল খায় । মেঘ বয়েস বেড়েছে বলে স্বরলিপি লেখেনা তেমন অথচ কীভাবে যেন কথাগুলি জড়ায় সেতারে সাঁঝবেলা জোনাকীরা উঠোনে গালিচা পেতে বসে অনায়াস ইমন'র স্বর থেকে উঠে আসো তুমি ! আঙুলের দায় ভুলি । সুরে বাঁধি কোমল তেহাই (২) তার চার ভাগে এক ভাগ ঠোঁট , তিনভাগ ডানা বাসার খোরাক শেষ ভাগে কাচের লিরিক ছুঁয়ে আলোদের চলাচল । কথা আঙুলের ঘেরাটোপ পেরিয়ে ছায়ায় মাথা রাখে ভঙ্গুর বৃষ্টিরা মেঘের ঠিকানা লেখা আকাশবাড়ির গায়ে জানালার নাম করে শপথের পর্দা ওড়ায় ******************** জয়ীতা ব্যানার্জী গোস্বামী নতুনচটি , বাঁকুড়া -৭২২১০১

মৌ দাশগুপ্তর কবিতা

ছবি
বর্ষাদুপুর আজও আমার শহর জুড়ে বর্ষাদুপুর। খুচরো জবাবদিহি আর গুটিকতক অজুহাতের দোহাই মুঠোয় নিয়ে পথে নেমেছে যে মেয়ে, তার হাতব্যাগে নিশ্চিনতে ভাঁজ করা আছে কিছু ঠিকানাবিহীন অসমাপ্ত চিঠি, আর উলকাঁটা অস্বস্তি। তাকে নিজের করে পেতে ডাক দিয়েছিল যে খাজুরাহোর শিল্পী, নগ্নতা দিয়ে নান্দনিকতাকে হারাবেনা ভেবেই ফিরে এসেছিল একদিন। তারপরেও হলুদ বসন্তের হাতছানি উপেক্ষা করেছিল যে আলিঙ্গন, আজ তার কথা ভেবেই গচ্ছিত রয়েছে জবাকুসুম লজ্জা। এখন এই একা ভেজার বর্ষাদুপুরে সবুজ মাধবীলতার মত ফুলেফুলে ভরে উঠছে তার ঝিমধরা দেহ, শিকড় ছড়িয়ে যাচ্ছে ভেজা মাটিতে, আবছা জলছবি শহরে আপাত উদাসীন বর্ষা তার শরীর জুড়ে শব্দবিলাস ছড়িয়ে দিচ্ছে শুধুমাত্র শব্দ। বিষাদশব্দ, আনন্দশব্দ, কান্নাহাসির অশ্রুত আশ্চর্য শব্দ, মেয়ের বানভাসি অশ্রুর মতই ছন্দহীন, সুরহীন, প্রেমহীন । ============================== ===== Dr. Mahuya Dasgupta Adak, 12th july 2018 Dr.M.Dasgupta Adak B332 Samdariya City, Katni, Madhyapradesh 483501

সুবীর ঘোষের মুক্তগদ্য

ছবি
  আমার বর্ষামঙ্গল অতদূর পেছনে কী চোখ যাবে ? চোখ না গেলেও মন নিশ্চয় যাবে । সে অনেক কাল আগের কথা । প্রায় ছ-ছটা দশক পেরিয়ে গেল । এখনো স্পষ্ট মনে পড়ে ঋতুর কী অপরূপ ভারসাম্য ছিল তখন । স্কুলে ঢুকবার আগেই জেনেছিলাম বাংলা মাসগুলোর নাম । স্কুলে ঢুকে জানতে পারলাম একজোড়া করে মাস নিয়ে আবার ছ'টা ঋতু আছে আমাদের । সেই আনন্দে ন'বছর বয়সে লিখে ফেললাম ছয় ঋতু নিয়ে একটা কবিতা । আমার জীবনের দ্বিতীয় কবিতা । 'পথের পাঁচালী' পড়তে গিয়ে পেলাম একটা কথা----কালে বর্ষতু পর্জন্যাঃ । তা আমাদের সেই শৈশবে মেঘেরা কালেই বর্ষাত । তীব্র দাবদাহের পর কালো মেঘের সম্ভার নিয়ে এসে যেত আষাঢ়--বর্ষাঋতুর প্রথম মাস । আষাঢ় -এর ঢল বলে তখন একটা কথা শোনা যেত । এখন শুনি না । কেন না এখন তো সেই ঢল আর নামে না আষাঢ়ে । শ্রাবণে ছিল ধারা । উতল-ধারা বাদল ঝরে সকল বেলা একা ঘরে ------রবীন্দ্রনাথের সুরে মন উদাস হয়ে হারিয়ে যেত সুদূর তেপান্তরে যেখানে মাঠের বুকে অনবরত আছড়ে পড়ত বাদলধারা । উঁচু উঁচু তালগাছগুলোর মাথা দুলত হাওয়ায় । কখনো সে বাতাস হত পাগলপারা । বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে দূরাগত বকের সারি মাঠ পেরিয়ে এস

সবর্না চট্টোপাধ্যায়ের গুচ্ছকবিতা

ছবি
১. মেঘের মত তুমি একআকাশ, ভরা সাঁঝের মেঘ ভাবছি ভেঙে টুকরো করে দেব একটু তুমি একটু আমি মিলে আলতো হাতে ভাগাভাগি নেব তোমারআমার ছেঁড়া মেঘের আকাশ ইচ্ছেমতন বইছে হাওয়ার ঘোরে দুঃখগুলো সঙ্গীহাওয়ার সাথেই উড়িয়ে দেব অক্ষরে অক্ষরে ঝড়ের দিন যেমন আগোছালো অভিমানে ঝরাচ্ছে তার ক্ষত থামলে তুমিও শান্ত ঝড়ের মতো থমকে থাকো ক্লান্ত, অবনত। মুখ নামিয়ে মেঘলা করে আসো বর্ষা নামে গভীর গহন চোখে অঝোর ধারা ঠোঁট ফুলিয়ে কাঁদে জাপটে আকাশ বোতামছাড়া বুকে... ২. আমরা যদি একফালি এই জানলা দিয়ে আকাশটা ঠিক তোমার মতো হঠাৎ কালো হঠাৎ ভালো অভিমানী আর অসংযত... মাথার মধ্যে ঘুরছে কিছু লাইনগুলো অগোছালো হচ্ছে না ঠিক, ভাবছি যখন ঠোঁটের মাঝেই কলম ছিল এমন সময় বৃষ্টি এল জানলা কপাট হুলুস্থুলু বর্ষাতিদিন এমন করেই শহরতলি ভাসিয়ে দিল গাছতলাতে বর্ষা নামে একটা ছাতা চারখানি হাত জানলা দিয়ে দেখছি এখন চড়ুইদুটোর বসন্তরাত কৃষ্ণচূড়ার ডাল ভেঙেছে শহর জুড়ে বানভাসিজল চড়ুই দুটো চোখের মাঝে ইচ্ছেমতন ভিজছে কেবল হুঁশ নেইকো দিন ও রাতে হুঁশ নেইকো ঘরে ফেরার বর্ষাতিমন ভিজিয়ে ওরা সাতজম্মের সঙ্গী দেদার

তৈমুর খানের গুচ্ছকবিতা

শ্রাবণকুমারী আমাদের একফালি ছাদেই আকাশ নেমে আসে শ্রাবণের কুমারী আকাশ — তার অদৃশ্য নূপুরশব্দে জেগে থাকি সারারাত আজ মন যদি ভিজতে চায় ওকে ভিজিয়ে নেবো — ফুলের গন্ধের মতো ফুটুক হৃদয়... বিবাহ ঘরে ঘরে বেজে উঠছে শাঁখ শ্রাবণ সন্ধ্যায় আমার বিবাহ হল মেঘকুমারীর সাথে জলে জলে সঙ্গম ছয়লাপ চারিদিকে শব্দ ছড়িয়ে যায় সন্ধ্যামাখা শব্দের আলোতে মেঘের সংলাপ ঝরে বৃষ্টির ফোঁটায় আমাকে ভেজাতে আসে মেঘকুমারীরা অবলীলা এখানে পড়ে থাকে জাগরণে ঘুমের বাতাস বয়ে যায় শ্রাবণবিছানা জুড়ে জলীয় বিলাস আমাকেও উষ্ণ করে আসঙ্গ লিপ্সায় আরশিনগরের পাখি আরশিনগরে কত চাঁদ ডুবে যায় বাঁশি থেমে যায় কত রাধা ফিরে যায় বাড়ি কৃষ্ণের দেখা নেই , অথচ কথা ছিল কত কথা থাকে কথারা গাছ হয় অবশেষে কৃষ্ণের উদ্দেশ্যে পাতাদের উৎসর্গ করে শ্রাবণের জলে ধুয়ে নেয় মুখ আরশিনগরে মানুষ থাকে না ? ভেসে বেড়ায় শুধু মানুষের ছায়া ছায়ারা পাখির মতো খুঁটে খুঁটে খায় মায়া....

সোমনাথ বেনিয়ার দুটি কবিতা

শ্রাবণলহরি বৃষ্টি হচ্ছে, ধুয়ে যাচ্ছে পাতার জমাট বিষণ্ণ ধুলো মাটির শরীর ছাড়িয়ে ব‍্যথা, মন আজ পথ ভুলো একতারা গানে একাকী আলের কান্না, অবেলায় দলছুট গরুর চিৎকারলিপি খড় ভর্তি আঁজলায় নৈঃশব্দ‍্যের প্রহর গোনে যখন ঘরবাড়ি সব জলে থ‌ইথ‌ই, এই শ্রাবণলহরি আকাশ ভেঙে এলে জলের স্রোতে বিলি কেটে যায় হাওয়া, ভাবে সে উন্মুখ চোখে প্রবাহের দাঁড়ি, কমার আগে বিরহযাপন, অথচ খলখল শব্দে বাতাস ভীষণ ভারি জানে বুক, ওদিকে একমনে চলমান পিঁপড়ের সারি একরেখায় জীবন রেখে মাটির তলায় খোঁজে ঘুম পাতাও শিরায় লুকিয়ে রাখে তারাহীন রাতের নিঝুম! বর্ষাকাল বৃষ্টির পর্দা টাঙিয়ে দিল বর্ষাকাল চরাচরের জৈবিক ঘড়ি ভুলে যায় - কোনটা সকাল কিংবা বিকাল যত তপ্ত শ্বাস পিছনে ফেলে দৃষ্টির ধূসর যায় ভিজে আজ কারোর অপেক্ষা নেই গোধূলির কোলে জেগে পথঘাটের ভূমিকায় জমিয়েছে আসর নদী আঙুরের থোকার মতো ভয়, থমথমে যদি আহত-চিহ্ন নিয়ে, ফেরার কথা বলে সিলেবাসে কম্পিত ঠোঁটে চুম্বনের একক-দশক উঠে যাবে অনায়াসে যাপনের পাট ফেলে জানালা দিয়ে - জলজ সংবাদ শুনি অবিরাম মানিব‍্যাগে বর্ষার স্মৃতি, তোমার মাদকতা, সে আমার ডাকনাম ...

অরবিন্দ পুরকাইতের মুক্তভাবনা

              তার আসা-যাওয়া নিজের দখল সহজে কে আর ছেড়েছে কবে! তবু যখন আসে সে, বড় রকমের একটা সমর্থন নিয়েই আসে নিশ্চয়ই। তাও কখনও কখনও চলে না কি বোমাবাজি-গোলাগুলি! আবার কখনও আসে সহজে টেরটি পাওয়া যায় না যেন। নির্বিরোধী ঋতুরাজের সঙ্গে অন্তরঙ্গতা বাড়াবার অবসরে কখন সে বাড়িয়ে নেয় নিজেরই আধিপত্য। তারপর একসময় কানে কানে বলে, তুই তো রইলি বেশ কিছু দিন, এবার আমাকে আসতে দে! ইতস্তত কণ্ঠে নরম ঋতুরাজ বলে, তা আয় না, কে বারণ করেছে তোকে! বলে বটে, তবু যেতে কি আর মন চায়! বাবা-বাছা করতে করতেও তার মধ্যে অগত্যা দু-একদিন একটু জানান দিতেই হয় তাই – কড়া চোখ, চড়া মেজাজ। স্বভাব যাবে কোথায়! সরাসরি নয় অবশ্য, একটু কায়দার চেষ্টা। আসলে ব্যাপারটা তো বার্তা পাঠানোর। সমঝদারোঁ কে লিয়ে ...। সব কথা বুঝিয়ে বলতে হবে কেন! মুখের কথা শুনে ভিতরের কথাটি বুঝতে হবে। কী বলতে চাইছি বুঝতে পারছ নিশ্চয়ই। সুতরাং মানসম্মান যদি থাকে তো সময় থাকতে অর্থাৎ মানে মানে কেটে পড়ো। বাড়াবাড়ি করার দরকার না পড়ে! বার্তাটি পড়তে অসুবিধা হয় না ঋতুরাজের। আস্তে আস্তে পা টেনে নেয়, ক্রমশ অন্তরালবর্তী। যাত্রারম্ভ। শুরুতে নরম নরম। সবাই যাতে বরণ করে

প্রশান্ত সেনের কবিতা

।। একটি পরিচয় বৃত্তান্ত ।। "I know that I shall meet my fate Somewhere among the clouds above" - W. B. Yeats ("An Irish Airman Foresees His Death") দিনের আলো হচ্ছে যখন হবে মাত্র ফিকে, অজান্তে চোখ পড়ল আমার কুমারীটির দিকে। # এলোচুল তার উড়ছে হাওয়ায় একটুকু আনমনে--- আমায় দেখেই মুচকি হাসি বাঁকা ঠোঁটের কোণে। # মেঘে মেঘেই ঢাকা শরীর ফ্রকজোড়া তার আকাশ, দূরের থেকেই বলেছি, 'মেঘ, আমার দিকে তাকাস---' # মেঘ তো তখন আপনভোলা, খামখেয়ালি মতো, বৃষ্টিতে সে বেঁধাল তির : আমার বুকে ক্ষত! # কী জানি কী হল মনে, চোখে চোখের কথা, কাজল আঁকা চোখের কোলে কী সে গভীরতা! # আমি তখন আমাতে নেই, মেঘের জন্য ব্যস্ত--- পশ্চিমকোণে দিগন্তান্তে সূর্য গেছে অস্ত। # সূর্য যখনই অস্তাচলে মেঘের পোয়া বারো, গোধূলির সেই ম্লান আলোকে রূপটি খোলে আরও। # হালকা সোনালি তিক্ত রোদ খেলে মাথার চুলে 'নামটা কী তোর? থাকিস কোথায়? পড়িস কোন্ স্কুলে?'--- # সাহস করে বলেই দিলাম, বলতে যা চাই আমি; আসলে কথা রইল বাকি; বলতে গিয়ে ঘামি... # আবার সে-এক স্মিত হাসি, নাড়িয়ে যে দেয় মন

মৌমিতা ঘোষালের অনুগল্প

ছবি
   শ্রাবণ বাইরে ঝমঝম বৃষ্টি। শ্রাবণ তার সবটুকু বিষাদ ঢেলে দিয়েছে শহরের বুকে। জানালায় বসে প্রতীতি। নিজে উঠে বানাতে হবে বলেই কফির কাপটা নেই সাথে। রবি ঠাকুরের সুর ছড়িয়ে পড়েছে ঘরময়। বাদলা বাতাস কেমন যেন তাকে অলস করে দেয়। আশ্চর্য! এত বৃষ্টির মধ্যে সামনের বাড়ির পুচকিটা বেরিয়ে এসেছে দরজা খুলে। রীতিমত জেদী হয়েছে মেয়েটা, কোনো কথা না শুনেই বাবার হাত ধরে টান দিয়ে নিয়ে এসেছে দরজার কাছে। হলুদ ছাতা মাথায় মেয়েটার হাতে কাগজের নৌকো। ভেতর থেকে ওর মা এসে জোর করে নিয়ে যাচ্ছে তাকে। বাবার মুখে অনাবিল হাসি। মেয়ের হলুদ ছাতাখানি এখন তার হাতে। ছোট্ট প্রতীতিও একদিন ভিজেছিল বাবার হাত ধরে। স্কুল থেকে আনতে যেত বাবা। ফিরতি পথে দুজনে ইচ্ছে করে ভিজে ফিরে মায়ের বকুনি খেয়েছে অনেকবার। বাবার জন্যেই বাড়িতে জমে উঠত প্রতিটি বৃষ্টির সন্ধ্যা... চা-পকোড়া-রবীন্দ্রসঙ্গীত-আড্ডা -গল্প। মনে পড়ে গেল, দুটো বছর বিয়ের হয়ে গেল,তার একটা দিনও বৃষ্টি ভেজা নয়! বাবাও হয়তো আর ভিজে ফেরেনা। মায়ের কাছে বোকা বোকা মুখ করে বকুনিও খায় না। বৃষ্টিটা বড্ড পাজি তো! বাইরে ঠিক আছে, এখন তো বৃষ্টির ধারা সমান্তরালে ভাগ করে ফেলেছে

বৈশাখী চ্যাটার্জীর মুক্তকথা

  জীবনে বর্ষা গ্রামের সেই মেঠো পথ -বর্ষা এলে প্যাঁচপ্যাঁচে কাদা -গরুর গাড়ির চাকা চলে যেত সেই পথে।চাকার দাগ বসে যেত মেঠো রাস্তায় । ছোটোবেলায় মামাবাড়ি গেলে বর্ষার গ্রামবাংলা দেখতে পেতাম এমন করেই । পুকুর ভর্তি জল -মাছ ধরা হতো জাল ফেলে -জমির আলে আলে হেঁটে যাওয়া আর গেঁরি -গুগলির সমাহার দেখতে পাওয়া । এখন যদিও এমন করে গ্রাম আর দেখা হয়না আর গ্রামেও এখন শহরের ছোঁয়া লাগছে -পরিবর্তন আসছে । কিন্তু বর্ষা তো বর্ষাই । তা ভিজিয়ে দিয়ে যায় আমাদের। তীব্র গ্রীষ্মের পর একটু ভিজে যেতে ইচ্ছে করে। প্রকৃতি আজও ভেজে ।         শহরের জীবন খোলা আকাশের নিচে বর্ষা ছুঁয়ে তেমন দেখে না ।একটুকরো বারান্দা বা জানালা দিয়ে বৃষ্টি দেখে শহর । যদিও বা দু একফোঁটা গায়ে এসে পরে ব্যস্ত জীবনের তাড়াহুড়ো তা অনুভূতি পেতে দেয় না কোনদিন ।            তবু বৃষ্টি ভালো লাগে । প্রেমে বর্ষা নেই এমন হয় না । অঝোর শ্রাবণে আমরা সবাই ভিজতে চাই সে শরীর হোক বা মন।         তখন অরুণাচলের পাহাড়ে থাকি । মেঘের সাথে মেঘের খেলা আর বৃষ্টি । পাহাড়ে বেশির ভাগ সময় বৃষ্টি হলেও বর্ষা আসে নিজের ছন্দে ।সাদা হয়ে থাকা পাহাড়ের চূড়াও ভিজে যায় ।প

কুমারেশ তেওয়ারীর দুটি কবিতা

মেঘমেদুর এখন তো আর কোনো মেঘের বিভ্রম নেই প্রাচীন যে শিলালিপি থেকে পড়ে নিতে পারে মর্মকথা অনুশীলনের চোখ মেঘেদের রূপ দেখে সেভাবেই বলা যায় মাটিকে ভেজাবে বলে ছিন্নছেঁড়া হতে রাজি আছে মেঘ এসময় বাউলের কথা যারা বলে তাদের ঘিলুতে বুঝি জলপোকা থাকে? এখন তো বরং নাচনিদের নিয়ে কথা বলো কেউ কীভাবে তাদের নাচের মুদ্রার থেকে ঝরে পড়ে নীলরঙা সাপ ছেনাল চোখের যারা আদিমের কামসূত্র খোঁজে তাদের চোখের মণি দংশনে তুলে নিক দাঁত পাহাড়ের চুড়া বেয়ে নেমে কি আসবে আজ বৃষ্টিভেজা জলপ্রপাত ~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~ বৃষ্টিময় বৃষ্টির পতন মানে নান্দনিক কিছু চণ্ডালও অদ্ভূতভাবে বৃষ্টিপতনের কাছে পেতে দেয় নাচের মুদ্রাটি অবাক বোকাটে হাতে বৃষ্টি ধরে রাখে মৌদের যে মেজদাদা তখনও অষ্টমঙ্গলা পার না হওয়া তার বউয়ের পায়ের আলতা ধ্যাবড়ে যায় বৃষ্টির ছোঁয়ায় কুচোফুলেরাও খুব আত্মগন্ধে মাতোয়ারা শুরু করে সোনার তরীর গান যে সমস্ত বাড়ীর নির্মাণকার্যে ছাদ নিয়ে কথা বলা হয় সে সব বাড়ীর কাছে গরম নিঃশ্বাস  আনতে পারেনা কোনো বাস্তুসাপ বৃষ্টির ঘুঙুর শব্দে ছাদের উপরে

জ‍্যোতির্ময় মুখার্জির কবিতাগুচ্ছ

মনহারা বৃষ্টি আজ তুই ঝড়বি কখন মন খারাপ আজ যখন তখন আজ ভেজার তাড়া একটু দাঁড়া হাতটা বাড়া মন যে কেমন মনহারা তিস্তা আজও বুকের ভেতর ছলাৎ ছলাৎ কান্নাহাসি পাড় ভাঙে বানভাসি বৃষ্টি নামুক আজ অনেক রাতে বৃষ্টি নামুক আজ অনেক রাতে ভিজবো দুজনে অকারণে সঙ্গোপনে তবু ঈশান কোণে মেঘ জমে উঠবে যে ঝড় আবার মনে বৃষ্টি হয়ে কাঁদে আকাশ মেঘ জমে এখানে বারোমাস আকাশ ভাঙুক আজ আমার বুকে কড় কড় কড়াৎ অলীক সুখে হারাবো বলে হারতে আজো রাজি আমি তোমার কাছে তোমার বুকে আমি ভালো আছি! মেঘের ফাঁক গলে উঁকি দিল রোদ ঘাড় কাত করে মুচকি হাসলাম আ্যলকোহল... চোরাস্রোত এভারেস্টের মাথার উপর দাঁড়িয়ে টেরি কাটি আমি বুকে মেঘ জমে বৃষ্টি ভিজুক আমি-তুমি শুয়ে থাকা রোমশ পাথরগুলো‌ উলঙ্গ নদীর বুকে কোরাসে গেয়ে ওঠে আমরা ভালো আছি ! অনুভব বৃষ্টি বুকে নিয়ে পাগলা মেঘটা ভিজিয়ে গেল আমাকে চোখ তখন তোমার চোখে অজস্র কথা নিয়ে যা কখনো বলা হয়নি মুখে বলে তারাহীন রাতের অসহ্য নিঃস্বতা পেতে চায়নি আমি হাওয়াতে তোমার চুলগুলো উড়ছিল মুখে এক ভুলে যাওয়া গন্ধ চোখে হাজার প্রজাপতির ভিড় র

পারিজাতের গল্প

ছবি
"বর্ষাস্নাত ছন্দপতন ও রাত" ভ্রমের সুত্র ধরে অনেক বর্ষার রাত এঁকে রেখেছি আমার দোরগোড়ায়। এক একটা রাত শেষ পর্যন্ত কখনোই হয়তো অন্য কোনো রাতের থেকে আলাদা করা যায় না - তবু বৃষ্টিকে কি তাই বলে কখনো এক সুরে একই মৃদুমন্দ ছন্দে বারবার তুলে ধরা যায়? যায় না। ভীমরতি ধরলে অমন কোনো সময় মনে হলেও হতে পারে - তবে বাস্তবের সাথে তার কোথাও সামঞ্জস্য থাকে না। আমার জীবনব্যাপী যে ঘটনা প্রবাহ বয়ে চলেছে নিরন্তর — ভেবে দেখেছি, সেসবই আসলে বর্ষার এক এক আঁজলা ভরা জল। দিনের বেলায় যে বৃষ্টির সুর একঘেয়ে, নোনাধরা, রাতের অগভীরে তাই যেন যোগমায়া— অনন্যা। আমার প্রথম জ্ঞানত যে স্মৃতি গেঁথে আছে অভ্যন্তরে — তারও উপলক্ষ এবং পরিণতির বারবার হিসাব করেও দেখেছি, একইরকম যোগফল — বর্ষা। আজ সে বৃষ্টির কথাই বলব - যার স্বাদ আজও লেগে রয়েছে আলজিভের ডগায় - পানসে, কষা, বোধহয় ক্ষাণিকটা নোনতা - তা বলে এড়িয়ে যাওয়ারও সত্যিই সাধ জাগে না। আসলে বোধহয় বর্ষা আদতে কোনো আলাদা মরসুমি ঋতুই নয়, বরং তা এক নির্ভেজাল অন্তঃসারশূন্য চেতনা। মিথ্যা পরিচয় পত্র বানিয়ে আব্বা আম্মা তখন আমায় নিয়ে এক হিন্দু চাচার বাড়িতে গিয়ে

আশিস চৌধুরীর মুক্তগদ্য

বাদল বাউল বাজায় রে একতারা গ্রীষ্মের প্রবল দাবদাহে যখন শরীর মন অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে তখন আমরা চাতকের মত আকাশপানে চেয়ে থাকি,দেখি মেঘ করেছে কি-না। এ যেন যক্ষপ্রিয়ার মত মেঘের অপেক্ষায় বসে থাকা।এখন অবশ্য বর্ষা সময়মত আসে না। বড় অভিমানী হয়েছে সে। মৌসুমীবায়ু যে সময়ে এই বাংলায় প্রবেশ করার কথা তা এখন করে না,কিছুটা বিলম্বিত বলা যায় । ঋতুচক্রে এখন অদ্ভুত পরিবর্তন ঘটে গেছে বিশ্ব-উষ্ণায়নের কারণে একথা আমরা আজ সকলেই জানি।আর এই বিশ্ব-উষ্ণায়নের মূল কারণ হচ্ছে অতি আধুনিক মানুষের লাগামছাড়া ভোগবিলাস।কাজেই বর্ষার আগমন একটু দেরিতে হলেও আমরা আগের মত অস্থির হই না,অনেকটা গা-সওয়া হয়ে গেছে। সুতরাং বর্ষা দেরি করলেও আমরা তাকে অভ্যর্থনা জানাতে কার্পণ্য করি না।তার আগমনে আমাদের হৃদয় ময়ূরের মত নেচে ওঠে।আমরা যেন এইভাবে অভ্যর্থনা জানাই-‘এসো শ্যামল সুন্দর/আনো তব তাপহরা তৃষাহরা সঙ্গসুধা। ’ ঋতুচক্রের নিয়মানুযায়ী আষাঢ় , শ্রাবণ-এই দু ’ মাস বর্ষাকাল।তা সত্ত্বেও ভাদ্রমাসেও কিন্ত যথেষ্ট বৃষ্টি হয়।তবু আষাঢ়-শ্রাবণ কে নিয়েই আমাদের যত কাব্য , গান আর নস্টালজিয়া।এই মুহূর্তে আমারই মনে পড়ে গেল-আষাঢ় শ্রাবণ মানে না তো মন.....

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪