Featured Post
ছোটোগল্প ।। লেডি ম্যানেজার ।। দেবাংশু সরকার
- লিঙ্ক পান
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
লেডি ম্যানেজার
দেবাংশু সরকার
আমি পেশায় মেডিক্যাল রিপ্রেসেন্টেটিভ। যাদের সংক্ষেপে এম আর বলে। আপনারা অনেকেই হয়ত ডাক্তার বাবুদের চেম্বারে বা হাসপাতালের আউট ডোরে আমাদের মত স্যুটেড বুটেড ফুলবাবু মার্কা এম আরদের দেখে থাকবেন। অবশ্য উপর থেকে যতটা ফুলবাবু মনে হয় ততটা ফুলবাবু আমরা নই। রোদে পুড়ে, জলে ভিজে আমাদের কাজ করতে হয়।
অনেক কষ্টে চাকরিটা আমি যোগাড় করেছি। এই চাকরিটা গেলে আর চাকরি পাবো না। কারন আমার বুদ্ধি কম। বারে বারে চাকরি যোগাড় করার মত বুদ্ধি আমার নেই। সত্যি বলতে কি গড়পড়তা বাঙালিদের থেকে বুদ্ধিতে আমি বেশ খাটো। বুদ্ধিহীনতার জন্য আমাকে পদে পদে হেনস্তা হতে হয়। কোনো রকমের ইশারা ইঙ্গিত বোঝার ক্ষমতা আমার নেই। পরিস্কার করে বলে না দিলে জটিল কথাবার্তা কিছুই বুঝতে পারিনা। সেইজন্য অনেকে আমাকে আদর করে 'মাথা মোটা' বলে ডাকে। অনেকের ধারণা আমার ব্রেন, আমার হাঁটু বা গোড়ালির কাছাকাছি কোথাও আছে। সেইজন্য সময় মত কাজ করতে পারে না।
খুব পরিশ্রম করি আমি, যাতে চাকরিটা টিকে থাকে। দিন রাত ডাক্তার বাবুদের চেম্বারে চেম্বারে ঘুরে বেড়াই। অন্যান্য কোম্পানির এম আরদের সঙ্গে আমার আলাপ পরিচয় হয়। তাদের পরামর্শ নিই। এছাড়া যিনি আমাদের কাজের তদারকি করেন সেই ম্যানেজারও বুদ্ধি পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করেন।
জয়ন্ত একজন এম আর। ভালো কাজ করে ভালো মাইনে পায়। কিন্তু তার মনে একটা দুঃখ আছে। তার বিয়ে হচ্ছে না! কেউ তাকে একটা মেয়ে দেখে দিচ্ছে না! মাঝে মাঝে সে আমার কাছে তার মনের দুঃখের কথা বলে হালকা হয়।
আমার মনটা ভীষণ নরম। অন্যের দুঃখ কষ্টের কথা শুনলে আমার মন খারাপ হয়ে যায়। জয়ন্তের দুঃখের কথা বারে বারে শুনে আমার চোখে জল এসে যায়। একদিন আমি জয়ন্তকে পরামর্শ দিয়ে বলি, "অন্য কেউ দেখে দিচ্ছে না বলে দুঃখ করে লাভ নেই। তুমি নিজে চেষ্টা করো। মানে প্রেম ট্রেম করে দেখো। যদি বিয়ের ফুল ফোটে।"
- "সেই চেষ্টাও করেছি। বারে বারে করেছি। প্রতিবার মিস ফায়ার হয়ে গেছে। কাজের কাজ কিছুই হয়নি। দুবার মার খেতে খেতে বেঁচে গেছি। একবার এক বিবাহিত মহিলাকে বুঝতে না পেরে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। সেই মহিলা আমাকে ঠেলে খালে ফেলে দিয়েছিলো। চারজন ষন্ডা গুন্ডা মার্কা লোক খালের ধারে আমার জল থেকে ওঠার জন্য অপেক্ষা করছিলো। ভরা শীতের রাতে আমি খালের জলে তিন ঘন্টা ঘাপটি মেরে বসেছিলাম। তারপর সারা শরীরে কাদা, পাঁক মেখে, ভেজা জামা প্যান্ট পরে, দু কিলোমিটার হেঁটে বাড়ি ফিরেছিলাম। শীতের রাতে কাদা জলে তিন ঘন্টা ডুবে থাকার ফলে জ্বরে পড়লাম। সেই জ্বর সারতে দশ দিন লেগেছিলো। তারপর আমার মনে বিয়ের ইচ্ছা জাগলেও, আর কখনও প্রেম জাগেনি।"
আজ সকালে কাজে বেরিয়ে এক অদ্ভুৎ, অপার্থিব দৃশ্য দেখলাম। দেখি জয়ন্ত মোটর বাইক চালিয়ে যাচ্ছে। পেছনের সীটে তাকে জাপটে ধরে বসে আছে এক মহিলা। বেশ জোরে বাইক চালাচ্ছে জয়ন্ত। মুখ খোলা। দাঁতগুলো বেরিয়ে আছে। দুর থেকে বোঝা যাচ্ছে না জয়ন্ত হাসছে নাকি গান গাইছে! মহিলার মুখেও হাসি। অনেকটা সপ্তপদী সিনেমার উত্তম কুমার সুচিত্রা সেনের মত লাগছে দুজনকে। জয়ন্ত হাসুক বা গান করুক, যা করছে, মনে হচ্ছে মনের আনন্দে করছে। কিন্তু কে এই মহিলা? যেভাবে জয়ন্তকে জাপটে ধরে আছে, অন্য কিছুতো ভাবা যাচ্ছে না! তার মানে জয়ন্ত প্রেম করছে! আমারও দেখে বেশ ভালো লাগলো। বুঝলাম কান্নাকাটি ছেড়ে জয়ন্ত এবার পজিটিভ কিছু করছে।
জয়ন্তর আনন্দে আমিও আনন্দিত। বেশ ফুরফুরে লাগছে নিজেকে। হাঁটতে হাঁটতে আমি আমাদের কোম্পানির স্থানীয় ডিস্ট্রিবিউটরের অফিসে এলাম। দেখি জয়ন্ত এবং সেই মহিলাও সেখানে হাজির। জয়ন্ত সেই মহিলার সঙ্গে আমার পরিচয় করিয়ে দিল, "ইনি শ্রীমতী রায়। আমাদের কোম্পানির ম্যানেজার।"
হায়! কি ভাবলাম! আর এখানে এসে কি শুনলাম! মুডটা একেবারেই অফ হয়ে গেলো। জয়ন্তর জন্য মনটা খুব খারাপ হয়ে গেলো। কিছুই ভালো লাগছিলো না। কিছুক্ষণ পর ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম সেখান থেকে।
রাস্তায় এসে দেখি কিছুদুরে সমীর যাচ্ছে। সেও একজন এম আর। তার সঙ্গেও একজন শ্রীমতি! মানে মহিলা! মানে লেডি ম্যানেজার! ওষুধ কোম্পানিগুলো কি এবার সব মহিলা ম্যানেজার রাখতে শুরু করলো। সমীরের কোম্পানির ম্যানেজার অনীলকে আমি চিনি। তবে কি তার কোম্পানি তাকে চাকরি থেকে ছাড়িয়ে দিয়েছে। অনীলের কথা ভেবে আবার আমার মনটা খারাপ হয়ে গেলো। যতক্ষণ না ব্যাপারটা ঠিকঠাক ভাবে জানতে পারছি, ততক্ষণ মনটা ভীষণ অস্থির লাগছে! অনীলকে ফোন করে জানতে চাইলাম, "তোমাকে কি চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে? মানে চাকরি থেকে ছাড়িয়ে দিয়েছে?"
- "নাতো! কেন?
- "তবে কি সমীর তোমাদের কোম্পানির চাকরি ছেড়ে অন্য কোনো কোম্পানিতে চাকরি নিয়েছে?"
- "না! সমীর চাকরি ছাড়েনি! কেন বলতো?"
- "এইমাত্র সমীরকে দেখলাম অন্য একজন ম্যানেজারের সঙ্গে কাজে যাচ্ছে!"
- "অন্য ম্যানেজার!"
- "হ্যাঁ ম্যানেজার। মানে লেডি ম্যানেজার। জয়ন্তদের কোম্পানিও একজন লেডি ম্যানেজার রিক্রুট করেছে, সমীরের সঙ্গেও একজন লেডি ম্যানেজার! অবাক হয়ে ভাবছি ফার্মা কোম্পানিগুলো কি করতে চাইছে? ছেলে ম্যানেজারদের ছাড়িয়ে দিয়ে লেডি ম্যানেজার রিক্রুট করার কারণ কি? আমারতো কিছুই মাথায় ঢুকছে না! তোমার জন্য খুব চিন্তা হচ্ছিল। এই বয়সে চাকরি হারালে কি করবে? তাই ফোন করলাম।"
- "তুমি ঠিক দেখেছো?" অনীলের গলাটা খুব গম্ভীর শোনালো। চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়েছে কিনা জানতে চেয়েছি বলে অনীল কি আমার উপর অসন্তুষ্ট হলো!
- "হ্যাঁ, এই মাত্র দেখলাম সমীর তার লেডি ম্যানেজারের হাত ধরে রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলেছে।"
- "হাত ধরে?"
- "না, না, শুধু হাত ধরে নয়। ধরা হাত দুটোকে বেশ জোরে দোলাতে দোলাতে চলেছে দুজনে।"
- "বুঝেছি। সমীর ইদানিং কাজের সময়ে অন্য কাজ করে বেড়াচ্ছে। সেইজন্য ওর পারফরম্যান্স একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে। এসব আমি একদম পছন্দ করিনা। হি মাষ্ট বি পানিশড। তুমি আমাকে ফোন করে খুব ভালো করেছো। তোমার সব কথা আমার ফোনে রেকর্ড হয়ে গেছে। ওগুলো কাজে লাগবে।"
বুঝতে পারছি অনীল বেশ রেগে গেছে। তবে আমার উপর, নাকি সমীরের উপর সেটা বুঝতে পারছি না। তবুও আমি চেষ্টা করলাম সমীরকে শান্ত করার। তাকে বোঝানোর চেষ্টা করলাম, "না, না, অন্য কাজ নয়। পিঠে ব্যাগ নিয়ে সমীর অফিসের কাজেই যাচ্ছে। তোমাদের অফিসে কি ড্রেস কোড চালু হয়েছে?"
- "না! কেন এরকম অদ্ভুৎ প্রশ্ন করছো?"
- "দুজনকেই দেখলাম জিন্স এবং নীল টি সার্ট পরে আছে। এক্কেবারে ম্যাচিং। দেখে মনে হচ্ছে ওরা কোনো ফার্মা কোম্পানির স্টাফ নয়। কোনো সিনেমার নায়ক নায়িকা! হেব্বি লাগছে দুজনকে!"
- "কাজের সময়ে ভালোবাসাবাসি আমি কোনও মতেই বরদাস্ত করবো না।" বাঘের গর্জনের মত শোনাচ্ছে অনীলের গলাটা।
অনীলের কথার মানে মাত্রা কিছুই বুঝতে পারছি না! বললাম, "সমীর কিন্তু নিজের কাজকে খুব ভালোবাসে। আমার মনে হলো ঐ লেডি ম্যানেজারও খুব কাজ ভালোবাসে। সমীরের হাত ধরে কত কিছু তাকে বোঝাতে বোঝাতে চলেছে। রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতেও কতকিছু বোঝাচ্ছে! তার মানে খুব কাজের মহিলা। একটুও সময় নষ্ট করতে চায় না। দেখে আমার খুব ভালো লাগলো।"
- "এবার আমি বোঝাবো, কত ধানের কত চাল।"
ক্রমশ যেন রেগে আগুন হয়ে উঠছে অনীল। কিন্তু এত রাগের কারণ কি, সেটাই বুঝতে পারছি না! একরাশ বিস্ময় নিয়ে আমি তাকে প্রশ্ন করলাম, "অনীল, তোমার মত শান্ত ছেলে হঠাৎ এত রেগে যাচ্ছো কেন? ঐ লেডি ম্যানেজার কি তোমার উপর কোনো রকম অত্যাচার করেছে? মানে..."
আমাকে কথা শেষ করতে না দিয়ে অনীল ফোনটা কেটে দিলো। অনীলের চাকরি যায়নি শুনে খুশি হলাম। কিন্তু শান্ত স্বভাবের অনীল আচমকা এতটা রেগে গেল কেন বুঝতে পারলাম না! অনীলের চাকরি আছে অথচ সমীরের সঙ্গে অন্য লেডি ম্যানেজার কাজে বেরিয়েছে! পুরো ব্যাপারটাই আমার কাছে রহস্যময় থেকে গেল! যাকগে ওদের ব্যাপার ওরা বুঝবে। ওদের কোম্পানির টাকা আছে, ওরা একটা কেন দশটা ম্যানেজার রাখতে পারে। ওসব নিয়ে আমার মাথা ঘামানোর দরকার নেই।
কিছুদিন পরে সমীরের সঙ্গে দেখা। সমীর সাড়ে ছফুট লম্বা। ওজন প্রায় একশো কেজির কাছাকাছি। অন্যদিকে আমি কেবল বুদ্ধিতেই খাটো নই। উচ্চতাতেও বেশ খাটো। আমার উচ্চতা পাঁচ ফুট থেকেও কিছুটা কম। আমাকে দেখেই সমীরের চক্ষুদ্বয় গোলাকার এবং রক্ত বর্ণ ধারণ করলো। তার নিঃশ্বাসে সঙ্গে আগুন এবং কান দিয়ে ধোঁয়া বের হতে লাগলো। সে হুঙ্কার ছেড়ে আমাকে বললো, "সবাইকে সব কথা বলার কি আছে?"
সমীরের রণহুঙ্কার শুনে বহমান বাতাস থমকে গেল! অশান্ত সাগরের ঢেউ শান্ত হয়ে গেল! মধ্য গগনের সুর্য চোখ বন্ধ করে নিলো! দিন দুপুরে অন্ধকার নেমে এলো চরাচরে! তারপর শুরু হলো ভয়ঙ্কর অসম যুদ্ধ। না, যুদ্ধ নয়। একতরফা প্রবল প্রহার, আর বিপরীত দিক থেকে প্রতিরোধের অক্ষম প্রচেষ্টা। ক্রমাগত মার খেয়ে চলেছি। কিন্তু কেন মার খাচ্ছি বুঝতে পারছি না!
ফল স্বরূপ এখন আমি হাত, পা, ঘাড়, মাথা, পেট, কোমর ভেঙে হাসপাতালের বিছানাতে শুয়ে আছি। ডাক্তার বাবু আমাকে কথা বলতে বারণ করেছেন। তবে সেটা কিছুদিনের জন্য, নাকি চিরদিনের জন্য সে নিয়ে প্রেসক্রিপশনে কিছু লেখা নেই।
।। সমাপ্ত ।।
দেবাংশু সরকার,
34/10/A, M.G.ROAD,BUDGE BUDGE
KOLKATA -700137.
- লিঙ্ক পান
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
জনপ্রিয় লেখা
প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা
লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা শ্রীজিৎ জানা "সময় চলিয়া যায় নদীর স্রোতের প্রায়"। স্রোতের ধারা তার দু'প্রান্তে রেখে যায় ভাঙাগড়ার চিহ্ন। কালের দৃশ্যপটেও পরিবর্তনের ছবি অনিবার্যভাবেই চোখে পড়ে। সমাজ সময়ের ছাঁচে নিজেকে গড়ে নেয় প্রতিনিয়ত। সেখানে মনে নেওয়ায় বাধা থাকলেও,মেনে নেওয়ার গাজোয়ারি চলে না। ফলত কাল বদলের গাণিতিক হিসেবে জীবন ও জীবিকার যে রদবদল,তাকেই বোধকরি সংগ্রাম বলা যায়। জীবন সংগ্রাম অথবা টিকে থাকার সংগ্রাম। মানুষের জীবনযাপনের ক্ষেত্রে আজকে যা অত্যাবশ্যকীয় কাল তার বিকল্প রূপ পেতে পারে অথবা তা অনাবশ্যক হওয়াও স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে উক্ত বিষয়টির পরিষেবা দানকারী মানুষদের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এক কালে গাঁয়ে কত ধরনের পেশার মানুষদের চোখে পোড়তো। কোন পেশা ছিল সম্বৎসরের,আবার কোন পেশা এককালীন। সব পেশার লোকেরাই কত নিষ্ঠা ভরে গাঁয়ে তাদের পরিষেবা দিত। বিনিময়ে সামান্য আয় হত তাদের। আর সেই আয়টুকুই ছিল তাদের সংসার নির্বাহের একমাত্র উপায়। কালে কালান্তরে সেই সব পেশা,সেই সব সমাজবন্ধুরা হারিয়ে গ্যাছে। শুধুমাত্র তারা বেঁচে আছে অগ্রজের গল্পকথায়,আর বিভিন্ন সাহিত্য
মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি
লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি (লেখক ও সম্পাদকীয় দপ্তরের কথোপকথন আকারে) --কী পত্রিকা? --নবপ্রভাত। --মুদ্রিত না অনলাইন? --মুদ্রিত। --কোন সংখ্যা হবে এটা? --বইমেলা 2024। --কোন কোন ধরনের লেখা থাকবে? --প্রবন্ধ-নিবন্ধ, ছোটগল্প, অণুগল্প, কবিতা ও ছড়া। --বিশেষ কোন বিষয় আছে? --না। যে-কোন বিষয়েই লেখা যাবে। --শব্দ বা লাইন সংখ্যার কোন বাঁধন আছে? --না। নেই। তবে ছোট লেখা পাঠানো ভালো (যেমন, কবিতা 12-14 লাইনের মধ্যে, অণুগল্প কমবেশি 200/250শব্দে)। তাতে অনেককেই সুযোগ দেওয়া যায়। --ক'টি লেখা পাঠাতে হবে? --মনোনয়নের সুবিধার্থে একাধিক লেখা পাঠানো ভালো। --ফেসবুক বা অন্য কোন প্লাটফর্মে প্রকাশিত লেখা কি পাঠানো যাবে? --না। সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত লেখা পাঠাতে হবে। --পত্রিকা কোন সময়ে প্রকাশিত হবে? --জানুয়ারি 2024-এর দ্বিতীয় সপ্তাহে। --লেখা পাঠানোর শেষতারিখ কত? -- 17 ডিসেম্বর 2023। --কীভাবে পাঠাতে হবে? --মেলবডিতে টাইপ বা পেস্ট করে পাঠাবেন। word ফাইলে পাঠানো যেতে পারে। --লেখার সঙ্গে কী কী দিতে হবে? --নিজের নাম, ঠিকানা এবং ফোন ও whatsapp নম্বর। (ছবি দেওয়ার দরকার নেই।) --বিশেষ সতর্কতা কিছু ? --১)মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখবেন '
সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল
সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ -- "ত্রয়ী কাব্য" ------------------------------------------------------------------------------ সুনন্দ মন্ডল নবীনচন্দ্র সেন সাহিত্যে তথা বাংলা কবিতার জগতে এক অবিস্মরণীয় নাম। তিনি চট্টগ্রাম জেলার নওয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৮৪৭ সালে তাঁর জন্ম এবং মত্যু ১৯০৯ সালে। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁকে 'বাংলার বায়রন' বলেছেন। জীবৎকালীন যুগে আত্মপ্রত্যয়ের মধ্যে জাতীয় চরিত্র আত্মস্থ করে নতুন সংস্কারে প্রয়াসী হয়ে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছেন।মধুসূদন-হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্র--এই তিন কবি বাংলা কাব্যধারায় প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন। বিশেষত মহাকাব্য লেখার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন। এদিক থেকে মধুসূদন দত্ত একজন সফল মহাকাব্যিক। তাঁর 'মেঘনাদ বধ' কাব্যের মত গভীর ও ব্যঞ্জনাময় না হলেও নবীনচন্দ্র সেনের 'ত্রয়ী' কাব্য বিশেষ মর্যাদা দাবি করতেই পারে। তাছাড়া 'ত্রয়ী' কাব্যে ধর্মীয় ভাবধারার আবেগ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। নবীনচন্দ্র সেন বহু কাব্য লিখেছেন। যেমন- 'অবকাশরঞ্জিনী','পলাশীর যুদ্ধ', 'ক্লিওপেট্রা', 'রঙ্গমতী', 'খ্রীষ্ট', '
কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার
বসন্তের কোকিল তুমি বিচিত্র কুমার (০১) তোমার দু-আঁখির গহীন অরণ্যে একটা স্বপ্নের বহমান নদী রয়েছে, তারই রেশ ধরে আমি হেঁটে চলি অজানা বসন্তের পথে নীর উদ্দেশ্যে। সে চলার কোন শেষ সীমা নেই তাই আমার বিষণ্ণ একতারা সন্ন্যাস খুঁজে ফিরে , কবে তুমি বুঝবে অনুশ্রী মনের পর্দা খুলে একুশ বসন্ত তোমার রঙ ছিটিয়ে যাচ্ছে অচিনপুরে। এদিকে আমার দেহের প্রতিটি শিরা ধমনীতে প্রবাহিত হচ্ছে তোমার ভালোবাসার একটু উষ্ণতা পাবার জন্যে, শুধু অনুভবে তাণ্ডব উচ্ছাসিত হচ্ছে--- যেদিকে তাকাই --- ফুলে ফুলে ভ্রমর গুনগুনিয়ে উড়ে উড়ে পরে বসন্তের কোকিল গান গায় নব বসন্তে, তোমার দুই চোখে আমার একই ছায়া রয়ে যায় উতলা ভালোবাসার সীমান্তে। (০২) এক রক্তাক্ত বসন্তের স্মৃতি কোন এক উতলা বসন্তের সকালে পুষ্পবনে ফুটেছিল একটি টকটকে লাল গোলাপ, তার সাথে হয়েছিলো দেখা প্রথম ফাগুনে হয়েছিল দুজনার এ জীবনের আলাপ। তারপর প্রতিটি শীতের ভোরে অনেক রোদের পরশ মেখে ছুঁয়ে যেতে আমার বুকের বাঁ পাস শিশির রেখা, তখন প্রতিটি ভোর হয়ে যেত ভীষণ রকম মিষ্টি আর ছিলো শুধু বসন্তের ঘ্রাণ মাখা। প্রতিটি সকালে একঝাঁক মায়াবী পাখি অনুভবের
প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৯তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সূচিপত্র কবিতা ।। তৈরি হয় এক নতুন বিপ্লবের পটভূমি ।। প্রণব কুমার চক্রবর্তী কবিতা || প্রতিবাদ || জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় কবিতা ।। সেই মেয়েটি রাত জাগে ।। সুপ্রভাত মেট্যা কবিতা ।। শপথ ।। দীপঙ্কর সরকার কবিতা ।। কোরাস রাত ।। বন্দনা পাত্র কবিতা ।। তিলোত্তমার বিচার চাই ।। দীনেশ সরকার অণুগল্প ।। ব্যাকবোন ।। বিশ্বনাথ প্রামাণিক কবিতা ।। আন খুঁজে আন শিরদাঁড়াটা ।। জয়শ্রী সরকার কবিতা ।। জীবন এখন ।। লাবণী পাল কবিতা ।। তিলোত্তমার বিচার চাই! ।। গোবিন্দ মোদক কবিতা ।। যুদ্ধ , প্রতিনিয়ত ।। সুমিত মোদক মুক্তভাবনা ।। কী বলব! ।। বন্দনা সেনগুপ্ত প্রতিবেদন ।। বিচার পাক অভয়া ।। জয়শ্রী বন্দ্যোপাধ্যায় অভয়ার যে চিঠিটা আজো পাওয়া যায়নি ।। আশীষকুমার চক্রবর্তী কবিতা ।। জগন্মাতা নাকি তিনি ।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। মেয়েটির মৃত্যু দেখে ।। তুষার ভট্টাচাৰ্য কবিতা ।। অন্ধকারের আলো ।। বিবেকানন্দ নস্কর কবিতা ।। ঘোষণা ।। প্রতীক মিত্র কবিতা ।। অপেক্ষায় ।। রণেশ রায় কবিতা ।। গ্লানি ।। সুজন দাশ কবিতা ।। বিনীত আবেদন ।। শংকর ব্রহ্ম কবিতা ।। তুই যে মেয়ে তিলোত্তমা ।। অশোক দাশ কবিতা ।। শোক সন্তাপের দুর্গা ।। সুদামকৃষ্ণ মন্ডল ক
প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৮০তম সংখ্যা ।। কার্তিক ১৪৩১ অক্টোবর ২০২৪
সূচিপত্র গল্প ।। উৎশব উৎসব ।। বন্দনা সেনগুপ্ত প্রবন্ধ ।। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ ।। শ্যামল হুদাতী প্রবন্ধ ।। বাংলায় প্রথম আত্মজীবনী লেখিকা রাসসুন্দরী দেবী ।। সবিতা রায় বিশ্বাস মগরাহাট (দক্ষিণ ২৪ পরগনা) এলাকার স্থানীয় কিছু কথ্যশব্দ, উচ্চারণ, বাগধারা ইত্যাদি (পর্ব-৬)।। অরবিন্দ পুরকাইত কবিতা ।। একটি মৃত্যু, অজস্র প্রতিবাদ ।। নাসির ওয়াদেন কবিতা ।। অন্ধকার জগৎ ।। সুপ্রভাত মেট্যা গুচ্ছকবিতা ।। আবদুস সালাম কবিতাগুচ্ছ ।। হীরক বন্দ্যোপাধ্যায় খোলা কবিতা ।। মানস মণ্ডল নিবন্ধ ।। সম্পর্ক ।। সংঘমিত্র ব্যানার্জি উপন্যাসিকা ।। উদয় ।। তপন তরফদার সিনেমা রিভিউ ।। ছবি : বহুরূপী, পরিচালক : রাজাদিত্য ব্যানার্জি ।। আলোচনা: জয়শ্রী ব্যানার্জি গল্প ।। গল্পটা মিথ্যে নয় ।। বিকাশকলি পোল্যে অণুগল্প ।। স্পিড ব্রেকার ।। দেবাংশু সরকার কবিতা ।। একটা পুরোনো অঙ্ক ।। রঘুনাথ চট্টোপাধ্যায় কবিতা ।। গোপন সম্মোহন ।। বিশ্ব প্রসাদ ঘোষ কবিতা ।। আগুনের পাখী হব ।। কাকলী দেব দুটি কবিতা ।। লালন চাঁদ কবিতা ।। বেঁচে থাকে ।। তীর্থঙ্কর সুমিত কবিতা ।। হে অনিন্দ্য, রক্তাক্ত মাকড়সার সর্বাঙ্গ ঋষি দৃশ্য খাও
উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত
উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে সৌরভ পুরকাইত বাংলার উৎসব বাংলার প্রাণ। প্রতিদিনের জীবনযাপনের মধ্যে যখন মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন তাকে বেঁচে থাকার রসদ যোগায় এই উৎসব। কথায় বলে 'বারো মাসে তেরো পার্বণ'।মন আনন্দই চায়।তাই তাকে সজীবতা দিতে,পরিবারের,সমাজের ভালো-মন্দের কথা মাথায় রেখে মানুষ নিজেই সৃষ্টি করে নিয়েছে নানাবিধ উৎসবগুলিকে। একেবারে প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত মানুষ কখনোই উৎসব বিমুখ ছিল না।উৎসবই তাকে ঘর থেকে বাইরে টেনে এনেছে,চিনতে শিখিয়েছে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার আনন্দকে। উৎসব আসলে প্রাণের সাথে প্রাণের যোগ, হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের যোগ।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন 'সত্য যেখানেই সুন্দর হয়ে প্রকাশ পায় সেইখানেই উৎসব'।হৃদয়ের সেই সুকোমল বৃত্তির জাগরণ যেন ফুটে ওঠা ফুলেরই মতো সত্য ও সুন্দর।এই জাগরণই উৎসব। তাই নানা কিছুর মধ্য দিয়ে,নানা উপলক্ষ্যে এই উৎসব প্রকাশ পায়। প্রাচীনকালে মানুষের হাতে না ছিল পসার, না ছিল পসরা।ছিল মনের আন্তরিকতা,মানুষকে কাছে টেনে নেবার ক্ষমতা।সেটাই ছিল উৎসবের সৌন্দর্য। তাই সেদিনের উৎসবে ক্ষুদ্র,তুচ্ছ উপকরণও প্রাণের উচ্ছ্বাসে মহৎ হয়ে উঠত।সেকালের উৎসবে লোক দেখানো ব্যাপার কিছু
"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান
"নবপ্রভাত" সাহিত্যপত্রের ৩০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে আমরা নির্বাচিত কয়েকজন কবি-সাহিত্যিক ও পত্রিকা সম্পাদককে স্মারক সম্মাননা জানাতে চাই। শ্রদ্ধেয় কবি-সাহিত্যিক-নাট্যকারদের (এমনকি প্রকাশকদের) প্রতি আবেদন, আপনাদের প্রকাশিত গ্রন্থ আমাদের পাঠান। সঙ্গে দিন লেখক পরিচিতি। একক গ্রন্থ, যৌথ গ্রন্থ, সম্পাদিত সংকলন সবই পাঠাতে পারেন। বইয়ের সঙ্গে দিন লেখকের/সম্পাদকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি। ২০১৯ থেকে ২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত গ্রন্থ পাঠানো যাবে। মাননীয় সম্পাদকগণ তাঁদের প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠান। সঙ্গে জানান পত্রিকার লড়াই সংগ্রামের ইতিহাস। ২০২৩-২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠানো যাবে। শুধুমাত্র প্রাপ্ত গ্রন্থগুলির মধ্য থেকে আমরা কয়েকজন কবি / ছড়াকার / কথাকার / প্রাবন্ধিক/ নাট্যকার এবং সম্পাদককে সম্মাননা জ্ঞাপন করে ধন্য হব কলকাতার কোনো একটি হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে (অক্টোবর/নভেম্বর ২০২৪)। আমন্ত্রণ পাবেন সকলেই। প্রাপ্ত সমস্ত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকার পরিচিতি এবং বাছাই কিছু গ্রন্থ ও পত্রিকার আলোচনা ছাপা হবে নবপ্রভাতের স্মারক সংখ্যায়। আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য। ঠিকানাঃ নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদকঃ নব
মুদ্রিত নবপ্রভাত উৎসব ২০২৩ সংখ্যার ডাউনলোড লিঙ্ক
মুদ্রিত নবপ্রভাত উৎসব ২০২৩ সংখ্যার সফ্ট কপি ডাউনলোড করতে ছবিতে ক্লিক করুন। ====০০০==== মুদ্রিত নবপ্রভাত উৎসব ২০২৩ সংখ্যাটি অনলাইনে অর্ডার করে বাড়িতে বসে পেতে পারেন অর্ডার করার লিঙ্ক: https://notionpress.com/read/nabapravat-utsab-2023 NABAPRAVAT30 কোডটি ব্যবহার করলে কম দামে পাবেন। (প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ৯৪৩৩৩৯৩৫৫৬ নিরাশাহরণ নস্কর। সম্পাদক, নবপ্রভাত।)
কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী
কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা : এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় পার্থ সারথি চক্রবর্তী কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। রাজার শহর কোচবিহারের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি। দুর্গাপূজা আর দীপাবলির মতো দু'দুটো বিরাট মাপের উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই, এ শহর ভাসে রাস উৎসবের উন্মাদনায়। মদনমোহন ঠাকুর কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর। তাঁকে নিয়ে সবার আবেগ আর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা এখানে বাঁধনছাড়া। এক অপূর্ব মিলনোৎসবের চেহারা নেওয়া এই উৎসব ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক। জন, মত, সম্প্রদায়ের উর্ধে এই উৎসবের গ্রহণযোগ্যতা। সময়ের কষ্টি পাথরে পরীক্ষিত! এক প্রাণের উৎসব, যা বহুদিন ধরেই গোটা উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ উৎসবে পর্যবসিত।কোচবিহারের এই রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে যে মেলা হয় তাও সময়ের হাত ধরে অনেক বদলে গেছে। এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া! শৈশবে বাবার হাত ধরে যে মেলা দেখেছি তা চরিত্র ও আকৃতি দু'দিক থেকেই বদলে গেছে। গত পঁচিশ বছর ধরে খুব কাছে থেকে এই উৎসব ও মেলা দেখা, অনুভব করার সুযোগ হয়েছে। যা দিনদিন অভিজ্ঞতা ও প্রাপ্তির ঝুলিকে সমৃদ্ধ করে গেছে প্রতি ক্ষেত্রেই। খুব সংক্ষেপে এই উৎসবের ইতিহাস না জানাটা কিন্তু অবিচারই হবে বলে মনে
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন