তমসার উৎস পথে
মানস কুমার সেনগুপ্ত
কতদিন, কতবছর পেরিয়ে এসেও আজও ভুলিনি তোমায় । তুমি মাঝে মাঝে স্বপ্নে ধরা দিয়ে যাও রূপসী তমসা। শঙ্কু মহারাজের ভ্রমণ সাহিত্য তমসার তীরে তীরে পাঠ করে তোমাকে একটিবার দেখবার জন্য মন হয়েছিল ব্যাকুল। কয়েকজন পর্বত প্রেমী বন্ধুদের সঙ্গে বেরিয়ে পরেছিলাম তমসার তীরে তীরে পদযাত্রায় । তৎকালীন উত্তরপ্রদেশ, বর্তমানে উত্তরাখণ্ডের অন্তর্গত গোবিন্দ পশু বিহারের বুক চিরে নীলরঙা জলরাশি নিয়ে ছোট্ট রূপসী তমসার উৎসের দিকে আমাদের পথ চলা। মাঝে মাঝেই তীরবর্তী অঞ্চলে লালরঙা রামদানা শষ্যখেত রূপসী তমসাকে আরও মায়াময় করে তুলেছে।ওসলা নামে এক গ্রামের কাছে এসে তমসা কিছুটা উচ্ছল , কিছুটা খরস্রোতা। নেমে আসছে পাহাড়ের ঢাল বেয়ে। এখানেই কাঠের সাঁকো পেরিয়ে কিছুটা পাকদনডী পথে উঠতেই তমসার দেখা মিলল অনেক গভীর খাদে। রূপীন ,সুপীন, রুইসারা নালা এই তীরবর্তী পথে নানা জায়গায় তমসার মূল স্রোতে মিশেছে। প্রায় সাড়ে এগারোহাজার ফুট উচ্চতায় মহাভারতীয় উপাখ্যানে দ্রৌপদীসহ পঞ্চপান্ডবের স্বর্গারোহনের পথ স্বর্গারোহিনী শৃঙ্গের পাদদেশ থেকে বেরিয়ে আসা যমদ্বার হিমবাহ থেকে যমদ্বার নালার সৃষ্টি। যমদ্বার নালা আর হর কি দুন নালার মিলিত ধারাই তমসার মূল উৎস। রূপসী তমসার উৎসমুখের সার্থক দর্শন শেষে আবার ফিরে আসা একই পথে। এক স্বপ্নের যাত্রা পথের শেষ হল। আজও রূপসী নীল তমসার ছবিটি আমার স্মৃতিপটে সজীব। ভালো থেকো বন্ধু।
===================
মানস কুমার সেনগুপ্ত ১৭/৮ , আনন্দ মোহন বসু রোড, দমদম কলকাতা ৭০০০৭৪
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন