স্মৃতিকথা ।। বড় ঠাকুমা ।। সুশান্ত সেন - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

Thursday, July 18, 2024

স্মৃতিকথা ।। বড় ঠাকুমা ।। সুশান্ত সেন


বড় ঠাকুমা 

সুশান্ত সেন


 এই প্রথম স্মৃতিকথা লেখার চেষ্টা করছি। সত্যি কথা বলতে গেলে বলতে হয় যে আমি কিছু কিছু কবিতা লেখার চেষ্টা করলেও ,গদ্য লেখার চেষ্টা সে রকম করিনি। যাক শুরু করা যাক।

ছোটবেলায় দেখতাম আমার ঠাকুমার সাথে তাঁর এক বিধবা দিদি আমাদের বাড়িতে থাকতেন, তাঁকে আমরা বড় ঠাকুমা বলে ডাকতাম।
তিনি ছিলেন শুচিবাই , সর্বক্ষণ " ছুস নি ছুস নি" বলতেন আর বার বার গঙ্গা জল ছিটোতেন। আমরা তাঁকে ছুয়ে দেবার ভয় দেখাতাম।
আমাদের তিন তলা বাড়ির ছাদে ছিল একটা ছোট ঘর, সবাই সেই ঘরটাকে  চিলেকোঠা বলতো ,সেই ঘরটা ছিল বড় ঠাকুমার ঠাকুর ঘর, অনেক ঠাকুর সেখানে শোভা পেত আর আমাদের সেই ঘরে ঢোকার মানা ছিল। বড় ঠাকুমা চান করে গামছা পরেই পুজো করতে বসতেন।

বড় ঠাকুমার ছিল এক মেয়ে , তিনি ও বিধবা, মাঝে মাঝে তিনি এসে বড় ঠাকুমার সাথে নানা কথা নানা গল্প করে যেতেন।
এক সময় গোটা বাংলা দেশ জুড়ে বিধবা মেয়েরা , বিশেষ করে একটু বয়স্কা যাঁরা , কাশী আর বৃদাবন মথুরা তে তাদের শেষ জীবন কাটাতেন,  ধর্মীয় কারণে অথবা আত্মীয় স্বজনের চেপে বাধ্য হয়ে।

আমাদের বড় ঠাকুমা ও এক সময় জিদ ধরে বসলেন তিনিও কাশীতে জীবনের বাকি সময়টা কাটাবেন।
দাদু কি করে কি ব্যবস্থা করে ছিলেন সে ত আর আমরা জানতে পারিনি , আমরা ত সব ছোট ছোট , খালি দেখলাম আমাদের বড় ঠাকুমাকে নিয়ে দাদু এক দিন কাশী চলে গেলেন।
এর পর থেকে বড় ঠাকুমার মেয়ে আমাদের বাড়িতে বড় ঠাকুমার খবর নিয়ে আসতেন, আরো বছর চার পাঁচ। আর দেখতাম দাদু মানি-অর্ডার করে প্রতি মাসে বড় ঠাকুমার কাছে টাকা পাঠাতেন। মানি-অর্ডার এর স্লিপ ফিরে এলে আমরা পোস্ট - বাক্স থেকে নিয়ে দাদুকে দিতাম।

বড় ঠাকুমা কাশীতেই দেহত্যাগ করেছিলেন ।


সুশান্ত সেন
৩২বি, শরৎ বসু রোড
কলিকাতা ৭০০০২০
৯৮৩০২৪২১৩৪


No comments:

Post a Comment