Featured Post

নবপ্রভাত পত্রিকার ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে গ্রন্থ-প্রকাশ : ১। সম্পূর্ণ পত্রিকার খরচে ও ২। পত্রিকার অনুদানে

ছবি
  নবপ্রভাত পত্রিকার ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে  গ্রন্থ-প্রকাশ বিষয়ক বিজ্ঞপ্তি ১। সম্পূর্ণ পত্রিকার খরচে এক ফর্মার ১০টি পুস্তিকা : এই প্রকল্পে লেখক-কবিদের থেকে কোনো খরচ নেওয়া হবে না।        পত্রিকার ৩০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে বইগুলি প্রকাশিত হবে। লেখক/কবিকে সশ্রদ্ধায় সৌজন্য সংখ্যা দেওয়া হবে।       যাঁদের আগে কোন বই হয়নি , তাঁরা অগ্রাধিকার পাবেন। নতুনদের উপযুক্ত লেখা না পেলে বাকিদের লেখা নিয়ে লক্ষ্যমাত্রা পূরিত হবে।       লেখা সকলেই পাঠাতে পারেন। মেলবডিতে টাইপ করে বা word ফাইলে ।   ই-মেল : nabapravat30@gmail.com  (এবং হোয়াটসঅ্যাপেও)। বইয়ের শিরোনামসহ ১৫টি কবিতা বা ১৫টি অণুগল্প পাঠাতে হবে , শব্দ সংখ্যা বা লাইন সংখ্যার বাঁধন নেই । মনোনীত হলে মানানসই বইয়ের ফরম্যাটে যে কটি যাবে রাখা হবে ।       সঙ্গে লেখক পরিচিতি , ঠিকানা , যোগাযোগের ( কল ও হোয়াটসঅ্যাপ )   নম্বর ও এক কপি ছবি দেবেন। লেখক পরিচিতিতে অবশ্যই জানাবেন, এটি আপনার প্রথম প্রকাশিত বই হবে অথবা পূর্ব প্রকাশিত গ্রন্থতালিকা। অনলাইন বা মুদ্রিত পত্রিকা বা সমাজ - মাধ্যমে প্রকাশিত লেখাও পাঠানো যাবে । তবে কোনও গ্রন্থভুক্ত লেখা

ভ্রমণকাহিনি: অনির্বাণ ঘোষ

             

বল্লাল সেনের দুর্গ -- মায়াপুর 


জুনের মাঝামাঝি,গরমের তীব্র দাবদাহ সামান্য কমায় দুটো দিন ছুটি নিয়ে সপ্তাহের শুরুতেই বেড়িয়ে পরলাম মায়াপুরের অলিগলি ঘুরে দেখতে। না এ প্রথম বার নয়,তবুও রথের ঠিক আগেই কেমন আয়োজন চলে সেখানে সেটাই দেখার ইচ্ছে। সকাল সকাল বেড়িয়ে সোদপুর থেকে ৬. ৩৩ এর কৃষ্ণনগর লোকাল ধরে চললাম গন্তব্যের উদ্দেশ্যে।যথারীতি ট্রেনের বাদাম,চিড়েভাজা চলতেই থাকল।দু'ঘন্টার পথ বলে কথা। চূর্ণী নদী পেরিয়ে কালিনারায়নপুর স্টেশন আসতেই মনটা বেশ চনমনে হয়ে উঠল।এত স্নিগ্ধ সবুজে ঘেরা স্টেশন খুব কমই আছে শিয়ালদা মেন লাইনে। ঠিক ৮.২০ তে এসে নামলাম কৃষ্ণনগর।টোটো, অটো সবকিছুই মেলে স্টেশনের বাইরে। অটো ভাড়া মাথাপিছু ২০ টাকা,রিসার্ভ করলে ১৫০ টাকা।টোটো ভাড়া রিসার্ভে ১২০ থেকে ১৮০ টাকা অবধি দর কষাকষি হয়।স্টেশন থেকে মায়াপুর ঘাট যেতে সময় লাগে ২৫ মিনিট। ২ টাকা নৌকা ভাড়া দিয়ে হুগলী পার  হলেই এসে পরলাম" হূলোর ঘাট " এ।হূলোর ঘাটের সামনেই ইস্কনের বাস দাঁড়িয়ে থাকে মন্দির প্রাঙ্গন অবধি পৌঁছে দেওয়ার জন্য।তবে মন্দিরের কাছের কোলাহল থেকে একটু দূরে দুটো দিন কাটানোর জন্য গ্রামের বুকে একেবারে হুগলী নদীর তীরে নতুন একটি হোটেল online booking করে রেখেছিলা,নাম "জগন্নাথ গেস্ট হাউস"। নীচে এর সম্পূর্ণ যোগাযোগের নম্বর ও website দিয়েছি। রুম নম্বর ২৩, হোটেলের বারান্দায় বসে হুগলীর ঠান্ডা হাওয়া,সবুজের চোখ জুড়ানো সমারোহ,পাখির সুমিষ্ট কলতান এক অন্য মাত্রা যোগ করল আমার এই দুদিনের ছুটির বেড়ানো তে।
        হুগলী - জলঙ্গীর সংযোগস্থলে এই মায়াপুর ধাম।১৪৮৬ সালে শ্রীচেতন্য মহাপ্রভু এই স্থানে জন্মগ্রহণ করেন।নয়টি দ্বীপের সমাহার এই নবদ্বীপ,ঠিক পদ্মের পাঁপড়ির মত সাজানো যার কেন্দ্রবিন্দু এই মায়াপুর।শহর এবং গ্রামের এক অপূর্ব মেলবন্ধন এই মায়াপুরে।প্রথম দিকে বাংলার রাজধানী ছিল এই নবদ্বীপ। চৈতন্য মহাপ্রভুর স্বপ্নাদেশ পেয়ে ভক্তিবাদী সন্ন্যাসী বিনোদ ঠাকুর মায়াপুর ধাম প্রতিষ্ঠা করেন। সাত লক্ষ স্কোঃ ফুট জমির ওপর গড়ে ওঠে বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান ইস্কন মন্দির।ধর্মগুরু শ্রীলা প্রভুপাদ প্রতিষ্ঠা করেন এই ৩৪০ ফুট সুউচ্চ মন্দির ১৯৬৬ সালে।  ISKCON (international society for Krishna consciousness) এর মন্দিরগুলি এখন গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে আছে।সারা মায়াপুর জুড়ে ১৮৫ টি ছোট বড় মন্দির দিয়ে সাজানো।প্রতি বছর গৌড় পুর্ণিমা তিথি তে (চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্মদিন)অসংখ্য ভক্ত সমাগম হয় এখানে।সাত দিন ধরে নয়টি দ্বীপ পরিক্রমা করেন ভক্তেরা এই তিথিতে। রথযাত্রায় টানা এক সপ্তাহ ব্যাপী মেলায় আয়োজন হয় এখানে।বিদেশী ভক্তের সমাগমও নেহাত কম নয় এখানে।
হোটেলে একটু বিশ্রাম নিয়ে স্নান সেরে নিলাম।পাশেই রয়েছে "জয়গুরু হোটেল", খাওয়ার জন্য বেশ নাম আছে এখানে এই হোটেলের। কাঠের আগুনে রান্না হচ্ছে গরম গরম ভাত, ডাল,পুঁইশাকের সব্জী,আলুভাজা,রুই-কাতলা,চুনোমাছের ঝাল,মুরগী-খাঁসী ইত্যাদি।নিরামিষ প্লেট ৬০ টাকা,কাতলা থালি ৮০ টাকা,মুরগী থালি ৭০ টাকা,খাঁসীর মাংসের থালি ১১০ টাকা।খাওয়া সেরে হোটেলে ফিরে একটু বিশ্রাম নিয়ে নিলাম।একটু রোদ টা কমলেই বিকেলের দিকে একটা টোটো ভাড়া করে ঘুড়ে দেখতে বেরোলাম এদিক সেদিক।
দর্শনীয় স্থান -- (১)শ্রীলা প্রভুপাদের পুষ্প সমাধি মন্দির
                       (২)চন্দ্রদয়া মন্দির(ISKCON দ্বারা নির্মিত মায়াপুরে প্রথম মন্দির এটা)
                       (৩)চৈতন্য মঠ (মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য দেবের জন্মস্থান),তবে এ নিয়ে বিতর্কও রয়েছে।অনেকেরই মতে নবদ্বীপে নিমতলায় তাঁর জন্ম।
                       (৪)যোগ পীঠ
                       (৫)গোস্বামী মহারাজ মন্দির/দশাবতার মন্দির
                       (৬) চাঁদ কাজির সমাধি 
                     (৭)গোপীনাথ গৌড়িয় মঠ(১৯৮৭ সালে স্থাপিত লাইব্রেরী)
                     (৮) বল্লাল ঢিপি ( সেন যুগে রাজা বল্লান সেন এই অঞ্চলের বামুনপুকুর নামক এলাকায় তার দূর্গ গড়ে তোলেন।১৯৮২ ও ১৯৮৮ সালে দুই দফায় খনন কার্য্য চালিয়ে এই ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করা হয়।অনেক প্রাচীন মূর্তী পাওয়া যায় এখানে,যেগুলো কলকাতার মিউসিয়ামে রাখা রয়েছে।বামুনপুকুর বাজারের কাছেই এই ঐতিহাসিক নিদর্শন খুবই তাৎপর্য্যপূর্ণ।)
                     (৯) শিব ডোবা ( ৫০০ বছর পূর্বে কৈলাশ অধিপতি শ্রী শঙ্কর মায়াপুর আসেন চৈতন্য মহাপ্রভুর দর্শনে।তবে তার দেখা না পেয়ে তিনি বিমর্ষ হয়ে পড়েন ও তার অশ্রুজলে একটি ডোবা তৈরী হয়ে যায়, যা শিবডোবা নামে পরিচিত)
                     (১০)চৈতন্য মহাপ্রভুর ভাঙা খোল
                     (১১)মায়াপুর থেকে নবদ্বীপ ঘাট থেকে লঞ্চ ছাড়ে নবদ্বীপ যাওয়ার জন্য,৭ টাকা জনপ্রতি ভাড়া।চমৎকার নদীবক্ষে ভ্রমণের এক সুন্দর সুযোগ পাওয়া যায়।হুগলীর বুকে লঞ্চ যখন চলে,নবদ্বীপের বেশ কয়েকটি দ্বীপ চোখের সামনে ভেসে ওঠে। নবদ্বীপের ঘাটে পৌঁছে একটা টোটো নিয়ে ওখানকার কয়েকটি দর্শনীয় স্থান দেখে নেওয়া যায় (রাধারাণী মন্দির, গুপ্ত বৃন্দাবন,গোবিন্দধাম,নিমাই জন্মস্থান,৬০ ফুট মহাপ্রভু,পোঁড়া মা তলা, সোনার গৌড়াঙ্গ,সমাজবাড়ি)
        সারাদিন মায়াপুরের আনাচে কানাচে অলিগলি ঘুড়ে হোটেলে ফিরে আসলাম।মেঘলা আবহাওয়ায় মনোরম হয়ে উঠেছিল গোটা মায়াপুর নগরী। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয়টি হল এখানে হিন্দু মুসলিম মানুষের পাশাপাশি সহাবস্থান ও ভাতৃত্ববোধ।একে অপরকে সবরকম সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন সকলে।
                সবশেষে যে বিষয়টি না বললে অসম্পূর্ণ থেকে যাবে মায়াপুর ভ্রমণ,নবদ্বীপের লাল ক্ষীর দই।এর কোন জবাব নেই।এক ভিন্ন স্বাদের দই এখানে না খেলে রসনা অতৃপ্তই থেকে যাবে।
থাকার জায়গা --প্রথমেই বলি অসংখ্য মঠ ও তীর্থযাত্রী নিবাস গোটা মায়াপুর জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে। রথযাত্রা,গৌড় পূর্ণিমা কালে এসব মঠে তিল ধারণের জায়গা থাকেনা। এছাড়াও কয়েকটি হোটেলের নাম লিখে দিলাম  
       (১) jagannath guest house (8016731087,9614836132)online booking হয়,নীচে তার website দেওয়া আছে।
       (২) sri krishna chaitanna guest house, (৩)Vakta niwas (03472 245307),(৫)Gopinath gouriya math।
(৬)সর্বোপরি মায়াপুর ইস্কনের অধীনে শঙ্খ ভবন,গদা ভবন,চক্র ভবন,পদ্ম ভবন,ঈশোদান ভবন -এ থাকার ব্যবস্থা রয়েছে এবং নিত্য ভোগবিতরণ করা হয় এখানে, যার জন্য আগে থেকে কুপন কাটতে হয়। এখানে থাকা বা ভোগ খাওয়ার জন্য সবরকম কুপন গদা ভবন থেকে কাটতে হয়।থাকার ঘরের জন্য online booking করা হয় যার website নীচে দেওয়া আছে।
গুরুত্বপূর্ণ কিছু website দেওয়া হল -
http://www.mayapur.com(ইস্কনের নিজস্ব website)
http://www.visitmayapur.com( ইস্কনের থাকার ঘর বুকিং এর website)
http://www.jagannathguesthouse.com( খুবই সুন্দর পরিবেশে হুগলী নদীর তীর এই হোটেলটি,  ঘরে বসে হুগলীর হাওয়া আর গ্রামবাংলার মনোরম দৃশ্য মন ভরিয়ে দেয়)

=========================================

         - অনির্বাণ ঘোষ
     A-1/8 SODEPUR GOVT HOUSING ESTATE
     P.O - SODEPUR , P.S - KHARDAH 
     DIST - NORTH 24 PARGANAS 
      KOLKATA - 700110
    Ph no - 9123392089,  whatsapp - 8013220695

জনপ্রিয় লেখা

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। 'স্বাধীনতা, স্বদেশ ও স্বকাল' বিষয়ক সংখ্যা ।। ভাদ্র ১৪৩১ আগস্ট ২০২৪

উৎসবের সৌন্দর্য: সেকালে ও একালে।। সৌরভ পুরকাইত

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

নবপ্রভাত পত্রিকার ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে গ্রন্থ-প্রকাশ : ১। সম্পূর্ণ পত্রিকার খরচে ও ২। পত্রিকার অনুদানে

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান