google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re মুক্ত গদ্য- নিসর্গ নির্যাস - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই, ২০১৯

মুক্ত গদ্য- নিসর্গ নির্যাস


সোনাঝুরি ও ওরা


সোনাঝুরির জঙ্গলে চুপটি করে দাঁড়িয়ে আছে মৃণালিনী। ক্লান্ত রবি খোয়াই পাড় বেয়ে দৌড়ে- খুঁজে হয়রান। ছুটি হাঁকে ছুটে বেড়িয়েছে এধার থেকে ওধার। 

সন্ধে নামছে। সোনাঝুরির জঙ্গল ছেয়ে গিয়েছে সোনালী আভায়। দূর থেকে ভেসে আসছে একতারা সুর। দুলে উঠল কবি বুক। বিরহের ভয়ে! বসে পড়েছে। স্থির। 

এখান থেকেও পিঠ দেখে বোঝা যায় শান্তিনিকেতনের প্রাণ পুরুষের ধুকপুকানি। তবে কী হাঁফ ধরেছে খুব নাকি ফোঁপানো কান্না! না না। ছি: তা কী করে হয়?  মৃণালিনী নিজে জানে কবির অবসরের পর যেটুকু অবসর থাকে তার সঙ্গী মাত্র সে। অধিকারের অভিযোগ নেই, তবু অভিমান হয়। মৃদু পায়ে হেঁটে এল সে। শান্ত, ভীত, অহংকারী হাত রাখল কবি-কাঁধে।

কাঁপা স্বর, ছিলে কোথায়! 
প্রত্যুত্তর, গাছেদের মাঝে। 
দৃঢ় কন্ঠ, কাব্য করোনা। 
শান্ত কন্ঠে ছুটির উত্তর, জানি, তাতে আপনার একার অধিকার।
কবি চুপ। মৃদু স্বরে বলে উঠলো ভয় হয়।
জায়া স্বর আরও নীচু, ভালোবাসা নয়! এত বছর উপেক্ষা আর কর্তব্য করেছো শুধু ।

স্মিত হেসে কবি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে, আরও বলো অভিমানী। এতদিনে বৃষ্টি হলে? এ হয়তো প্রথম কৈফিয়ৎ।তোমার জন্য ছিল একরাশ চিঠি, যার উত্তর দাওনি গুমোট মেঘে। 

তর্জনী দিয়ে মৃণালিনীর অবনমিত চিবুক তুলে ধরলো সোজা। চোখে জল। চোখ নামাল ছুটি। গালে একফোঁটা অশ্রুতে তখন নেমেছে সোনাঝুরির শেষ আলোটুকু। গড়িয়ে পড়ার সরু রেখা এই শ্রাবণেও বসন্তের খোয়াইয়ের মতো শান্ত। 

টানা একতারা সুরে শেষ সোনালী আভায় চুম্বনটুকু হয়েছিল কী ? জানা নেই কারও।
তবে আজ হোক। যারা খোয়াইয়ের ধারে হাত ধরে ব্যস্ত একে অপরের অভিমানী চোখে, যে চোখে আছে প্রেম।

***********************************
নাম- নিসর্গ নির্যাস মাহাতো

ঠিকানা- মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর

বার্তালাপ- ৮৩৭৩০৩৯০৮৩

ই- মেইল: nisarga.creative@gmail.com