তেমন আর দেখা পাওয়া যায় না
কাকতাড়ুয়া
..........
ধান জমিতে, সব্জি বাগানে কাকতাড়ুয়া প্রায় দেখা পাওয়া যেতো । আমাদের শিশু- কিশোর বেলায়। ওই সময় তো কাকতাড়ুয়া দেখে ভূত ভেবেই ভয় পেতাম। প্রতিটি ধানের জমিতে একাধিক কাকতাড়ুয়া থাকতো। আর একটু জোরে হাওয়া হলেই সে গুলি হাত পা নেড়ে যেন নৃত্য করতো। ছেলেবেলার শোনা গল্পের ভূতের মতো। মফঃস্বল বাস করি। কিন্তু, বেশির ভাগ আত্মীয় স্বজন প্রত্যন্ত গ্রামে থাকতো। তার ফলে তাদের বাড়ি যেতে হলে পায়ে হেঁটে যেতে হতো। মেঠো পথ, তার দু পাশে ধান জমি, সব্জি বাগান । আর সেখানে শ শ কাকতাড়ুয়া। মা বাবা থাকলেও ওদিকে তাকাতে কেমন যেন ভয় ভয় করতো।
#
একটু বড় হয়ে তবেই বুঝেছি, কাকতাড়ুয়া আসলে কি। গ্রামের চাষীরা জমিতে বা বাগানে কাকতাড়ুয়া লাগায়। মূলত কাক পাখি ও জন্তু তাড়ানোর জন্য । যে সকল পশুপাখি ফসল নষ্ট করতো, তাদের তাড়ানোর জন্য । হাওয়ায় কাকতাড়ুয়া হাত পা নেড়ে চলে। ওটা দেখে তারা ভয় পায়। কাছে আসেনা। ভাবে মানুষ বা অন্য কিছু।
#
কাকতাড়ুয়া তৈরী হয় মূলত খড় দিয়ে। মানুষের মতো করে ভূড়ো করা হয়। করা হয় হাত পা। গায়ে পরিয়ে দেয়া হয় ছেঁড়া জামা। আর মাথাটা করা হয় কালো ফুটো হাঁড়ি দিয়ে। চুন দিয়ে চোখ মুখ এঁকে দেওয়া হয়। দেখতে হয়ে ওঠে ছেলেবেলার ভাবনার ভূতুরে মতো। সেইটাকে একটা বাঁশের লাঠির সঙ্গে লাগানো হয়। হাত দুটো দুই দিকে মেলে ধরার জন্য কঞ্চি লাগানো হয়। তার পর সেটাকেই জমিতে লাগিয়ে দেওয়া।
#
আজ থেকে প্রায় কুড়ি বছর আগে পর্যন্ত যে হারে গ্রামে গ্রামে কাকতাড়ুয়া দেখা পাওয়া যেতো, এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। তার কারণ, ফসল জমিতে যে হারে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করা হয় তার ফলে জমি বা বাগানে পোকা মাকড়রের পাশাপাশি জীব জন্তু ও পাখির পরিমান একেবারে কমে গেছে। তাই তাদেরকে তাড়ানোর জন্য আর কাকতাড়ুয়ার প্রযোজন হয় না।
#
গ্রাম বাংলায় আনেক পাখি পতঙ্গ পশুর মতো কাকতাড়ুয়াও অবলুপ্ত প্রায় ।
........
Sumit Modak, " Sonajhuri " Po :Dighirpar Bazar, Falta, 24Pgs(s), Pin : 743503 , M: 9002977488 /8373837350