মানসী মণ্ডলের দুটি কবিতা
নারী জনম
জন্ম নিলাম আঁতুড় ঘরে কন্য শিশু হয়ে----
শিঁটকালো নাক বহুজনা কারন আমি মেয়ে।
জন্ম দিল আমায় যে, সে মা- ও এক নারী----
আধোচোখে দেখি আমি মায়ের মুখও ভারী।
বুঝলাম না কী অপরাধ করলাম আমি এসে!
কেন বরণ করল না কেউ আমায় ভালবেসে?
বড় হবার সাথে সাথে হাজার বেড়ি পায়ে---
মানুষ হলাম ধীরে ধীরে হয়ে বাবার মেয়ে।
পরাধীনতার জীবন আমার থাকি বাপের বাড়ি
স্বামীর ঘরে যাবার সাথেই হয়ে উঠলাম নারী।
এক জীবন থেকে এক জীবনে রাখি আমি পা
চেনা গন্ডীর আপন যে কেউ সাথে থাকল না।
বাপের ঘরের কন্যে এখন স্বামীর ঘরে নারী
সবার দায় মাথায় নিয়েই শশুড় বাড়ী পাড়ি।
জন্মদিলাম ছোট্ট শিশুর আমিও হলাম মা
এত কিছুর পরেও 'নারী' র দুঃখ ঘুচল না।
বাপ স্বামীর পরে এবার ছেলের ঘরে বাস---
হাত বদলে কাটে আমার ঠাঁই যে বারোমাস।
তবুও না হলাম স্বাধীন এমন কপাল পোড়া
ব্যর্থ আশায় দিন যে কাটে স্বাধীন হব মোরা।
কলঙ্কিনীর বলিদান
অল্প বয়সের কৌতুহলে শুধুই দাঁড়াতাম----
আয়নার সামনে।।
সকাল দুপুর রাত্রি,না জানি কতবার;
কী দেখতাম গোপনে!!
অশতিপর ঠাকুমা, সদা করত সাবধান---
"ওলো! দেখিসনে অত"
রাত্রি বেলা আর্শি দর্শনে হবি----
কলঙ্কিনী খ্যাত!!
বোঝার বয়স হয়নি তখন,শুধুই চপলতা,
বুঝিনি বুড়ির সাবধানতা;
যৌবন কালে রইল না অজানা,মেয়েরা---
কলঙ্কিনীই সর্বদা।।
ভালবেসে আমরা মরি,দিয়ে স্বর্বস্ব----
তাই নাকি মোরা নষ্টা!!
গোপন সম্পর্কে পুরুষ সাধু,আমরা শুধুই--
কলঙ্কিনী, ভ্রষ্টা!!
পতিব্রতার অজুহাতে, কাঁচা প্রাণ সহমরণে---
কলঙ্কিনীর বলিদান!
রুপ-যৌবন পুড়িয়ে নষ্টা,চায়নি জবাব---
কেন করব জীবনদান!!??
---------------০০০০------------------
মানসী মণ্ডল
দাসকলগ্রাম : বীরভূম
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন