অতিক্রম
-------------
অনিরুদ্ধ সেন
একই পাড়ায় থাকাথাকি ব্যতীত কিচ্ছু নই তার,
এমন অনাত্মীয়ের প্রতি কি জানি কি ভরসার
দু'চোখে নালিশ, দু'হাতে কালসিটে দাগ--
শিক্ষিত, অভ্যস্ত মুখ--বললাম, মানিয়ে নাও
হিমের কঠিন বাতাসে কেঁপে উঠলো
দু'ফালি অপুষ্টি ঠোঁট, ভাঙাচোরা শুকনো চোঁয়াল
যে গুহায় ঠেসে রাখা এক নদী কান্না
আর জল ছিল না চোখে, শ্বাস অপূর্ণ বুকে
যেন প্রসব হল ধ্বনি, 'একটাবার শুনুন
শুধু একবার(জানতাম এক সুপ্রাচীন সাম্রাজ্যবাদী অত্যাচার)'
মুক্ত রুগ্ন পিঠে রক্ত-জমাট পষ্ট দাগ
মাছি তাড়াবার অছিলার মতো সাঁতার,
মিথ্যে প্রসঙ্গের আড়ালে চলে যাবার
উটকো ঝামেলা থেকে দূরবর্তী হওয়ার সুকৌশল
পৃথিবীতে তবু রাত্রি অতিক্রম করলেই একটা সকাল
পরিপার্শ্বের স্বরূপ, বোধ এড়ায় না সে মেয়ের
মুখাপেক্ষী মুখ মুছে ছেঁড়া আঁচলে গেল চলে
রাস্তার কলে এঁটো বাসন মেজে ধুতে
ঘেন্নায় ভিজেওঠা ক্ষার মেশা ছাই-এ
পালাবার দেয়াল খুঁজে দাঁড়াই সিগারেটের ধোঁয়ায়
হয়তো বা আকস্মিক দৌড় লাগাবার একটা দিক
অসংবেদী , অথর্ব, পুরাতন অভ্যেস মতো
ফাঁকি সব ঢেকে দিতে , ব্যস্ত পথের ধূলোয়
তবুও সে বলে, না বলে যেন বাঁচবে না সে--
'রোজ রাতে মদ খেয়ে ফেরে,অকথা কুকথা আর
সমানে গায়ে হাত তোলে'
দলা দলা যন্ত্রণা কনা কনা হয়ে নিসৃত হয়ে চলে
নিকোটিনের বিষম লাগে, স্ট্যাচু খেলি তারপর--
তখনও সে ব্যর্থ অভিযোগ নাভিমূল থেকে নিংড়ে
কাতর,বলে 'মরতে যে পারিও না, মেয়ে কাঁদে কোলে'
'বহু দূরে চলে যেতে মন বলে,চোখ যেতে পারেনি যেখানে'
সে যে এক অসুখের কথা, জীবন পুড়িয়ে আনা দীর্ঘনি:শ্বাস
শুধু নীল, বিস্তৃত কালো অন্ধকারের গভীর কষ্ট তার
ছোবলে ছোবলে বিষের তরলে ডুবিয়ে তোলে অহংকার,
তবুও যে শয়তানের মতো এড়িয়ে যাওয়া, সেই নারীর হুতাশ...
---------------------------------------------------
অনিরুদ্ধ সেন (সুব্রত)
গ্রাম ও পোষ্ট-ধর্মপুকুরিয়া
বনগাঁ, উত্তর ২৪ পরগনা
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন