স্রেফ ছুটি
শ্রমদিবসের ছুটির মজায় থাকেন শ্রমের দার্শনিক
ঘুম ভাঙিয়ে চা দিয়ে যান মাইনেবিহীন তাঁর শ্রমিক।
অফিসবাবু আড়মোড়া দেন শ্রমদোহাইয়ের ফাঁকতালে,
বাড়ির বউয়ের শ্রমের ঘানি মে দিবসের প্রাক্কালে।
পয়লা মে'তে বন্ধ যত ব্যাঙ্ক ও অফিস সরকারী,
( সারাবছর শ্রমের পরে এটুক ছুটি দরকারী)
পায়নি ছুটি এ টি এমে নজর রাখা চৌকিদার,
সিকিউরিটি শ্রমিক কিনা খবর রাখে কেউ কি তার!
রিক্সাওয়ালার সকাল থেকেই প্যাডেল টানার এক রুটিন
চলছে অটো, খালি পেটে ছুটির মানে অর্থহীন।
রাজমিস্ত্রি, খুচরো শ্রমিক , ফুটপাতিয়া দোকানদার
পয়লা মে'তে ব্যস্ত সবাই করতে ভাতের জোগান তার।
পয়লা মে'তে ব্যাঙ্গে হাসে ছাঁটাই হওয়া চটশ্রমিক,
অন্তত কেউ কারখানাটা বন্ধ হওয়ার ব্যাখ্যা দিক।
শ্রমের মানে প্রোমোটারের দয়ায় খাওয়া একবেলা
কাজ পাবে কে ঠিক করে দেন নেতা এবং তাঁর চেলা।
শ্রমের ঘামের এপিটাফে চিটফান্ডের নাম লেখা,
মজদুর সব তৈরী আছে , কাজের কোনো নেই দেখা।
শ্রম এ দেশে খিদের সাথে কেঁদে করে রোজ আপোষ
অশ্রমীদের ছুটি ছাডা আর কিছু নয় মে দিবস।
--------০০০--------
।।লিংক।।
প্রতিটি শস্যকণার সাথে ভাগচাষীর আধারের সংযোগ করা হোক।
যাতে মুখে কীটনাশক দেওয়ার সময় সে জানতে পারে তার সাধের সোনা কোন ধনীর প্লেটে বিরিয়ানি হয়েছে।
প্রতিটি বন্ধ কারখানার ধুলোর সাথে লিংক হোক বেকার শ্রমিকের আধার।
অন্তত জানতে তো পারবে প্রোমোটারের সদ্য উত্থিত ফ্ল্যাটকমপ্লেক্সে গার্ডের চাকরি খালি আছে কিনা।
বেকার যুবকের আধারের সাথে মন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির যোগ হলে বেশ মজা হয়।
মিছিলের আধবাসি প্যাকেট খাওয়ার মাঝে খবর আসবে ভেসে এইবারে ভোটে প্রতি ঘরে অঝোরে চাকরী আসবে ঝেঁপে। আর হো হো করে হেসে উঠবে তারা।
প্রতিটি গরীব ধার্মিকের আধারের সাথে যোগ করা হোক মন্দির-মসজিদ-গির্জার কোষাগারগুলো। যাতে ভুখা পেটে কে কটা বিধর্মী মেরেছে সেই গর্বের মাঝে তাঁরা জানতে পারেন, তাঁদের ঈশ্বর ঠিক কত বিত্তশালী।
প্রতি রাজনৈতিকের আধার যুক্ত হোক একেকটি সৈনিকের বেয়োনেটের সাথে। যাতে সঠিক সময়ে রক্ষকের নজরে পড়ে, তলে তলে ফোঁপড়া করে কারা দেশটাকে বেচে দিচ্ছে, আর বন্দুকের নল খুঁজে পায় সঠিক নিশানা।
রাজার তাবত ভাবনা আর প্রজার সমস্ত ইচ্ছার আধার লিংক হতে পারে, এমন বায়োমেট্রি বাধ্যতামূলক হোক। কোনটা কথার কথা আর কোনটা কিছুটা সত্যি, আধারের সংযোগে সেটা জানা দরকার।
রেটিনা ও আঙুলের ছাপ শুধু কেন তবে, আত্মাকে বেঁধে দেবো সরকারী পায়ে, হে ধর্মাবতার।
----------০০০----------
কবি আর্যতীর্থ
কলকাতা
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন