মানুষের কবিতা
-----------------------------
গাছগুলি নেতিয়ে পড়েছে!
ঝড়ো হাওয়া মরুধুলোবালি
মানুষ বেঁচে, না মরে গেছে ---
চতুরের তীব্র করতালি
#
মানুষের কান্না ঢাকা দিয়ে
তবু আসে মানুষেরই পাশে;
কালে-কালে সময়কে নিয়ে
ইতিহাস ফিরে-ফিরে আসে ....
#
শ্রমে-ঘামে-রক্তের গভীরে
ভুখা মানুষের চোখ কাঁদে ;
মনিবের দাসবৃত্তি চিরে
মহাকাল চক্রব্যূহ বাঁধে ....
#
চাষি আর মেহনতি জনে
সময়ের চাটে বিষকণা।
তখনও সাম্রাজ্যবাদী মনে
কালনাগ তুলে ধরে ফণা ....
#
তবুও মানুষ বেঁচে থাকে ।
অরণ্যের শাখামূল ঘুণে
খায় । শূন্যে যে আকাশ ডাকে
তা অস্ত্র লুক্কায়িত তূণে।
#
মানুষ মানুষে বিভাজিত
হলে পরে কে থাকবে ঘরে?
ইতিহাস নয় সমাহিত ---
সে রয়েছে কালের গহ্বরে।
**************************
ইতিহাস ফিরে-ফিরে
------------------------------ ------
ইতিহাস ফিরে-ফিরে আসে না । বরং সে
নিজেকেই নতুন করে নিয়ে আসে, কালে-কালে,
সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ।
আর এই যে পুরনো অঙ্কেই নবতর সাজ ইতিহাসের
তার পিছনেই হাহাকারে অন্তহীন বিপন্ন মানুষজন ।
শ্রম আর ঘামের বিনিময়ে এই যে এত রক্তপাত,
এত লাশ, এত মূল্যবান প্রাণের প্রতি ব্যভিচার
তা সবকালেই ছিল । আজও আছে ।
একটু পরিবর্তিত আদলে।
আসলে, ওই যে মানুষগুলো, নুন আনতে যাদের
পান্তা ফুরোয়, মনিবের পায়ের তলায় থেকেই যাদের
পায়ে বেড়ি ,পেটে গামছা বেঁধে যারা প্রভুর জন্য
যুদ্ধে নামে মাঠে,তারা চিরটাকাল তেমনিই থাকে ।
তাদের অবস্থানেরক কোনো পরিবর্তন হয় না ।
এই যে পুতুল-পুতুল খেলা ওইসব ভুখা মানুষদের নিয়ে
সেনাপতির নির্দেশে প্রাণপাত, আহা, শুধু দু' মুঠো ভাতের আশায় !
তাই সব যুদ্ধেই তারাই গিনিপিগ, তারাই বলির পাঁঠা!
ঘরে হাহাকার, দারিদ্রের আলো-আঁধারি। বিভাজিত
শ্রমজীবীদের লড়াইয়ের মহড়া ।
হে প্রভু, কোথায় সেই 'সম্ভবামি যুগে-যুগে'-র আস্ফালন!
মরছে তো ওই পেটের-দায়ে মাঠে-নামা গোবেচারারাই!
ইতিহাস স্তব্ধ হয় না । স্তব্ধ হতে জানে না । শ্রমিক-মেহনতি
মানুষকেই ডিভিডেন্ড করে কালের নিয়মেই এগিয়ে যায় ।
তার এই গতি রোধ করা স্বয়ং ঈশ্বরেরও সাধ্যের অতীত ।
প্রয়োজনে তিনিও পাল্টে যাবেন।
********************
অমিয়কুমার সেনগুপ্ত,
হুচুকপাড়া বাই লেন , পুরুলিয়া 723101.
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন