Featured Post

"নবপ্রভাত" ৩০তম বর্ষপূর্তি স্মারক সম্মাননার জন্য প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা আহ্বান

ছবি
  "নবপ্রভাত" সাহিত্যপত্রের ৩০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে আমরা নির্বাচিত কয়েকজন কবি-সাহিত্যিক ও পত্রিকা সম্পাদককে স্মারক সম্মাননা জানাতে চাই। শ্রদ্ধেয় কবি-সাহিত্যিক-নাট্যকারদের (এমনকি প্রকাশকদের) প্রতি আবেদন, আপনাদের প্রকাশিত গ্রন্থ আমাদের পাঠান। সঙ্গে দিন লেখক পরিচিতি। একক গ্রন্থ, যৌথ গ্রন্থ, সম্পাদিত সংকলন সবই পাঠাতে পারেন। বইয়ের সঙ্গে দিন লেখকের/সম্পাদকের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি।  ২০১৯ থেকে ২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত গ্রন্থ পাঠানো যাবে। মাননীয় সম্পাদকগণ তাঁদের প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠান। সঙ্গে জানান পত্রিকার লড়াই সংগ্রামের ইতিহাস। ২০২৩-২০২৪-এর মধ্যে প্রকাশিত পত্রপত্রিকা পাঠানো যাবে। শুধুমাত্র প্রাপ্ত গ্রন্থগুলির মধ্য থেকে আমরা কয়েকজন কবি / ছড়াকার / কথাকার / প্রাবন্ধিক/ নাট্যকার এবং সম্পাদককে সম্মাননা জ্ঞাপন করে ধন্য হব কলকাতার কোনো একটি হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে (অক্টোবর/নভেম্বর ২০২৪)।  আমন্ত্রণ পাবেন সকলেই। প্রাপ্ত সমস্ত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকার পরিচিতি এবং বাছাই কিছু গ্রন্থ ও পত্রিকার আলোচনা ছাপা হবে নবপ্রভাতের স্মারক সংখ্যায়। আপনাদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য। ঠিকানাঃ নিরাশাহরণ নস্কর, সম্পাদকঃ নব

তনিমা হাজরার অণুগল্প

বেলা যে পড়ে এল জলকে চল




আরে, অ ঠিঠানি, ইঁট গুলাখে জল দে কেনে, অমন ধরণে কমন শুঁকাই যেছে দ্যাখ,
অখুনি মিস্তিরি চাইব্যাক। তখন আমাদিগে মুখ খাঁতে হেবেক। দূর থেকে মুনিষ
বদনা হাঁক পাড়ে আর আড়চোখে ঠিঠানির বুকের দিকে তাকায়।

ঠিঠানি মিস্তিরি আর মুনিষ দের সাথে কামিনের কাজ করে। সে তখন জামগাছতলায়
গামছা দিয়ে চোখমুখ মুছে সবে একটু পান্তভাতে নুন, সরষার তেল, কাঁচা পিঁয়াজ
আর আলুভাতে মেখে দুগাল মুখে তুলেছে। দুই দাঁতের ফাঁকে শুকনো লঙ্কাভাজা টা
কেটে চেবাতে চেবাতে সে বলে, হঁ, হঁ, দিছি, দিছি। তুরা তুদের কাজ কর কেনে,
আমি ঠিক টেইমে কাজ কইরে লুব রে।

ঠিঠানি জানে মইদুল মিস্তিরি তাকে কিছুটি বইলবেক না। ঠিঠানির লেগে তার
বুকে টুকচাঁদ আলেদা জমিন রাখা আছে যে। ঠিঠানি যে তার ধরণ দিনের সইঝ্যা
বাতাস। তা সেসব লিয়েঁ পাঁচলুখে পাঁচকথা কি কম বইলচ্যে? তা সে যে যা
বইলচ্যে বলুক কেনে। তারা দুলোক মিয়াবিবি রাজী তো কি কইরবেক সব হতচ্ছাড়া
পাজি?

এই তো সিদিন কালিখুড়ি রাস্তাকে তাকে একলা পাঁইয়ে দুকলি জ্ঞান দিয়্যে দিলেক।
হঁ লো ছুঁড়ি তুর কি ধম্মভয় নাই নাখি, গতর দ্যাখাই ফুসলাই লুখের ঘর ভাঙচু।

না খুড়ি, গতর আমার কুছু নাই, এই শেষবেলাখে তার কিই বা থাকব্যেক বলো ঝে
দেখাত যাব্যো? মিস্তিরি আমার লেগে দুটা মনের কথা বইল্যে সান্তি পায়। সব
লুকের খেনে কি মন খুলা যায় গ, নাখি সব লুখে সব কথা বুঝে? একটুকু পেরাণ টা
জুড়াথে সে আমার খ্যানে আসে। সি লিয়ে তুমাদের এথ কি জ্বালা?

তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে কি বিচ্ছিরি অশালীন ভঙ্গি করে ওঠে কালি খুড়ি।
খেঁকিয়ে ওঠে তাকে, লে কুথাকার মনমারানি আইল্যেক রে, বারভাতারি, তুর
স্বভাব জাইনথ্যে কার বাকি রে? আজ থিক্যে আঁট বসসর আগ্যে তু ব্যাটা
বিইইচু, এখুনো কাখুকে তার বাপের নাম বলুস নাই, বেদ্যুয়া ছাঁ টা আমাদিগের
বাখুলে বাখুলে ঘুরে বুলচে। দেখবি আর দুদিন যাক উ ছঁড়াই তুখে লাত মাইরে
বাপের নাম বুলাই লিবেখ।

স্মিত হাসে ঠিঠানি। নানা জনের প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে ক্লান্ত ঠিঠানি।
একনিষ্ঠ প্রেমিকা ঠিঠানি, যার হৃদয়ে মইদুল ছাড়া আর কেউ কোনোদিন বাসা
বাঁধেনি। যার শরীরে একমাত্র মইদুল ছাড়া আর কাউকে সে স্বেচ্ছায় গমন করার
অধিকার দেয়নি। অথচ মইদুলের কাছে সে কোন দিন কিছু চায়নি, না কোনো সামাজিক
স্বীকৃতি, না তার সন্তানের জন্য পিতৃপরিচয়।
মিথ্যে দোষারোপ সে করবে না। মইদুল তাকে বিবি বানিয়ে নিকে করতে চেয়েছিল।
সে ই রাজি হয় নি।

না সে সত্যিই সাজানো ঘর ভাঙতে চায়নি একটি অন্য মেয়ের। চায় নি ভালবাসাকে
ওইভাবে হিসেবের দাঁড়িপাল্লায় মেপে কড়ায়গণ্ডায় ঠিকঠিক বুঝে নিতে। সে শুধু
ভালবাসার মানুষের বুকে একটু বাঁচার আশ্বাস আর আবেগের উত্তাপ হয়েই কাটিয়ে
দিতে চেয়েছিল সারাটা জীবন।

বাউরিয়া তার আর মইদুলের সেই ভালবাসার ফসল। গাঁয়ের লোকে তাকে যতই
বেদ্যুয়া বাচ্চা বলুক না কেন সে জানে সে একাই তার বাপ, একাই তার মা।

বাউরিয়ার ইস্কুলের শেফালি দিদিমুনি কাল তাকে বলেছে, ঠিঠানি তুমি হচ্ছ
সিঙ্গল মাদার। গ্রামের লোকে তোমাকে যে যা বলে বলুক, এখন বড় বড় শহরে ও
অনেক মেয়েরা পিতৃপরিচয় ছাড়াই তার সন্তান কে পৃথিবীর আলো দেখাচ্ছে তাদের
বড় করে তুলছে নিজের পরিচয়ে।

ঠিঠানি অত্তশত্ত ইংরিজি বুঝে না। সে শুধু ভালবাসা বুঝে। সে শুধু জানে
মইদুল তার মনের মানুষ, তবে কিনা ভগমানের একটুক ভুল হঁইছে, তার সাথে
দেখা হবার আগুতেই তেনি অন্য মিয়াছিলার লেগে তার গাঁটছড়া বেঁধে দিছেন, যে
কিনা তার মনের হদিশ লিথ্যে জানে নাই। তা সব কাজ কি সক্কলকার দ্বারা হয়,
তা বইল্যে সে কেনে উয়ার রাজপাট কেড়ে লিব্যে? সে খি ধম্মকথা??

সে শুধু জানে সে বারভাতারি লয়। তার সতীত্বের আগুনের বড়ো তেজ। গাঁয়ের
দশবিশটা জিভ লকলক গুখেকোর ব্যাটা সি কথা খুব ভালই জানে। উঁয়ারা ঠিঠানিকে
ছুঁতে লারে তাই তারা তার দিকে এত কাদা ছিঁটাইয়্যে সুখ পায়।।।
***********************************************************************




Tanima Hazra
Golepark co-op housing society ltd
Flat no -4-g-b2,
49b gobindapur rd
kolkata-45

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪

নবপ্রভাত সম্মাননা ২০২৪

জনপ্রিয় লেখা

মুদ্রিত নবপ্রভাত বইমেলা 2024 সংখ্যার জন্য লেখা-আহ্বান-বিজ্ঞপ্তি

প্রবন্ধ ।। লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় গ্রামীণ জীবিকা ।। শ্রীজিৎ জানা

সাহিত্যের মাটিতে এক বীজ : "ত্রয়ী কাব্য" -- সুনন্দ মন্ডল

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৬৭তম সংখ্যা ।। আশ্বিন ১৪৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

কবিতা ।। বসন্তের কোকিল তুমি ।। বিচিত্র কুমার

কোচবিহারের রাস উৎসব ও রাসমেলা: এক ঐতিহ্যবাহী অধ্যায় ।। পার্থ সারথি চক্রবর্তী

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৭৪তম সংখ্যা ।। বৈশাখ ১৪৩১ এপ্রিল ২০২৪

অনুভবে, অনুধ্যানে অনালোকিত কবি গিরীন্দ্রমোহিনী দাসী ।। সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়

প্রচ্ছদ ও সূচিপত্র ।। ৬৬তম সংখ্যা ।। ভাদ্র ১৪৩০ আগস্ট ২০২৩