google-site-verification=aFCzFTmuVjPqPlrdWXeJSj2r_EMig_cypLnlmiUQpw0 re রমলা মুখার্জীর অণুগল্প - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

বুধবার, ১৬ মে, ২০১৮

রমলা মুখার্জীর অণুগল্প

বিজয়া দশমী



সুদাম ঢাকীর ঢাক বাজানোয় বেশ নামডাক। প্রতি বছর দুর্গা পুজোর সময়
বীরভূমের লাভপুর থেকে কলকাতায় যায় ঢাক বাজাতে। তার বাবা ছোটবেলাতেই গত
হয়েছে।সুদামের সন্তান-সম্ভবা স্ত্রী দুর্গাকে মায়ের কাছে রেখে এবারেও
সুদাম যাবার আয়োজন করছে।
--- দুগ্গা ও দুগ্গা কুথাকে গেলিন? রা কাড়িস না কেনে রে?
---আমাকেও তুমার সেথে লিয়ে চল কেনে, ঠাকুর দিখবো।
----তু তো ইখন পুয়াতি বটে, বেটা ইকটু বড় হলেই লিয়ে যাব।
আরও অনেক স্বপ্ন চোখে এঁকে দিয়ে,আদরে-সোহাগে দুর্গাকে ভাসিয়ে, মায়ের
হাতের হলুদ মুড়ি
আর নাড়ু পোঁটলায় বেঁধে রওনা দিল সুদাম।
...................................................
এবারে ঢাক বাজিয়ে বেশ একটু রোজগারপাতি হয়েছে সুদামের।
বাড়িতে ঢুকতে ঢুকতেই হাঁক পাড়ে সুদাম,"দুগ্গা--- দেখ কেনে তুর লেগ্যে
কত কি আইনছি।মা, তুমার লেগ্যেও..
কিন্তু মা, দুগ্গা কুথাকে গ্যালো?"
কান্নায় আছড়ে পড়ে সুদামের মা বলে,"ওরে দুগ্গা বিসর্জন হয়ে গেছে রে দশমীর দিন।"
ডুকরে কেঁদে সুদাম বলে ওঠে,"কি বুলছো বটে?"
-----সিন্দুর খিলে এসে দুগ্গা আমায় জোর করে পাঠালো ঠাকুর প্রণাম করার
ল্যেগে।এসে দিখি দুগ্গার সব্বলাশ হইনছে। লম্পটরা ইজ্জত লুটে মেরে ফেলে
রেখে গ্যাছে বটে রে......
-----মা-বেটার কান্না আকাশ-বাতাসে অনুরণিত হয়ে মা দুর্গার কানে পৌঁছাল
কিনা জানিনা, তবে সুদাম তারপর থেকে যেন একটা মানুষের মত মানুষ হয়ে গেল
।অনেক থানা পুলিশ করেও যখন কোন লাভ হল না, সুদাম গ্রামের বাসিন্দাদের
সহযোগিতায় গঠন করল মেয়েদের ক্যারাটে শেখার আখড়া ।আরও একটা অসাধ্য সাধন
করে ফেলল সে ।তারই অদম্য প্রচেষ্টা আর অধ্যবসায় গড়ে উঠেছে এক মহিলা
ঢাকির দল, ভালই চাহিদা তাদের ।
সুদামের দুর্গার মত কত দুর্গাই তো হারিয়ে যাচ্ছে ।তাই সুদামের
প্রতিজ্ঞা, "ঘরে ঘরে দুর্গার জন্ম হোক, তারা অসুর দমন করে সুরক্ষিত করুক
নিজেদের।সব মেয়েই হয়ে উঠুক এক একটি দুর্গা।"
==========০০০০==========















ডঃ রমলা মুখার্জী, বৈঁচী, হুগলি ৭১২১৩৪

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন