বেঁচে থাকা
************
কী এক অদ্ভুত সময় অক্টোপাসের মতো
আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রেখেছে আমাদের
বিপন্ন নির্জন ঘরে একা
এ কোথায় আছি -
দ্রুতগতি জাহাজের চিন্তিত নাবিকের জামা
কলস্বরে উড়ে যায় অনন্ত সাগর বাতাসে
এইখানে সে হাওয়ার প্রবেশ নিষেধ।
এ কেমন বেঁচে থাকা
যেমন তেমন করে ভয়ে ভয়ে আগলে রাখা
সুরক্ষিত মসৃণ জীবন
এ কেমন বেঁচে থাকা
অচেনা সৈকত থেকে ভেসে আসা মানুষের স্বর
ভীষণ অস্পষ্ট লাগে
শৈশববাহিত পথ,উষ্ণ করতল,
প্রিয় থেকে প্রিয়তম একান্ত আপন শব্দগুলি
ভীষণ অচেনা মনে হয় .....
বিপন্নতা শুধু বেড়ে যায়
অন্ধকার গাঢ় থেকে গাঢ়তর হলে
সত্তার আড়ালে
কাঠের আসবাবের মতো
আরো বেশী একা মনে হয়।
তবু মাঝেমাঝে
স্মৃতির অতল থেকে আচমকা উঠে আসে
কবেকার হারানো কৈশোর ,
আকাশের একদিক থেকে অন্য দিকে
মেঘ সরে গেলে মনে হয়
বেঁচে থাকা ততখানি অর্থহীন নয়।
অন্বেষণ
********
কেউ কি এলো ? ও কার পদধ্বনি?
গুমটি ঘরে কিংবা খোলা মাঠে
গ্রামের পথে, বিশতলা ম্যানশনে
সন্ধানে যার হন্যে হয়ে ঘোরা ?
কেউ কি এলো? দীর্ঘ পদক্ষেপে-
শুধুই যাকে খুঁজে মরার নেশা ?
ঘোমটা টানা সলজ্জ ঘরবধুর
ঘর গোছানোর গেরস্থালি খেলা-
সেও থেমে যায়, চমকে ওঠে হঠাৎ
অজ্ঞাত এক প্ররোচনায় তাকেও
বেরোতে হয় গোছানো ঘর ছেড়ে ,
গোপনতম যন্ত্রণা তার সাথে
দিন থেকে রাত পথ চলে আর খোঁজে।
কেউ কি এলো? এলো কি সেই মানুষ?
ভীষণ থাবায় সর্বনাশ যে আনে ?
সহস্র লোক সম্মিলিত চোখে
তাঁকেই খোঁজে গনগনে চুল্লিতে,
ঠান্ডা স্রোতে, সন্ধ্যাকালীন জলে,
স্পটলাইটের তীব্রতম রেখায়।
======০০০======
পবিত্র রায়চৌধুরী
561,শরৎ বোস রোড,
সুভাষনগর, দমদম ক্যান্টনমেন্ট,
কলকাতা- 700065
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন