অমাবস্যার আঁখিপাতে
বর্ণাক্ষর অপদার্থের আদ্যাক্ষর,
ছেলেবেলায় আঙুল বুলিয়ে হাতেখড়ি বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয়।
কবে থেকে পার করেছি স্কুলের গন্ডী ফেলে আসা হারানো শৈশব।
আজ অনেক বছর বাদ সংসারের আটপৌরের সাতকাহনে অন্ধত্ব ভর করেছে চোখ,
বৃদ্ধ আমি লাঠিতে ভর চলছি বহু কষ্টে চোখে চশমা,
চক্ষু চিকিৎসালয়ে হাজারো প্যানপ্যান নামের তালিকা প্রতীক্ষমান ভিড়ে গিজগিজ আটপৌরে এক মুখ বছর ঘুরে।
ঝুলছে কালো বর্ণাক্ষর অল্প আলোকপাতে, চলছে যুদ্ধ ঢাল তলোয়ার হাতে যাচাই অন্ধত্বের সীমারেখার পরিধি।
ঝুলন্ত চিহ্নিতকরন বর্ণাক্ষর চোখ একপাশ পর্দা দিয়ে ঢেকে,
ডাক্তার বাবু খুব রসিক মজিয়ে কৌতুক গজায় দৃপ্ত প্রান নতুন উচ্ছাস আলো পাবার।
নখদর্পনে অস্তরীভূত শিলায় পরিকাঠামো ফ্রেম চশমা মানানসই সুবিধার্থে রোগীর,
খুব সুন্দর ঘরোয়া নিটোল পরিবেশে আলোকের দিশার সন্ধান।
প্রানপনে কোমর বেঁধে সকলে লেগেছে চোখের আলোয় সুন্দর পরিষ্কার দৃশ্য ধরা দিতে।
সুন্দর ভব্য আয়োজন পবিত্র পরশমনি নতুন আলোকে ছোঁয়াও প্রানে,
পূর্নিমা আসুক অমাবস্যার আঁখিপাতে।
স্বপ্নসন্ধানী
স্বপ্নসন্ধানী চোখ,
এবড়ো খেবড়ো খালবিল, ছলাৎ করে উথলে, ছুঁতে চায় প্রিয় আগামী।
দেরাজের ঝুলকালিমাখা কোণে,
দেওয়ালে পিঠ ঠেকে, কোণঠাসা বাক্সবন্দী নিথর স্বপ্নচাহনী।
গ্রন্থনে পাকানো জট, স্বপ্ন প্রত্যাশা নিছক জল্পনা, ছেঁড়া কাঁথায় মোড়া অবসাদ।
কম্পমান হাতের রেখা, পরিকল্পনাধীন বাস্তব।মুখ থুবড়ে চেনা অপদার্থের আদ্যাক্ষর করেছি, করছি,
ধরাশায়ী ঝরা সৌগন্ধের বিস্তার কুসুমকলি।অসমাপ্ত দেবাঞ্জলী,
দেবতাকে স্পর্শ নাগালের বাইরে,
সম্পূর্না তো তুমি মগডালে,
রসে টইটুম্বুর এক ফোঁটা, দু ফোঁটা করে, নিস্তার তো মালকোঁচায়,
সংগৃহীত রসবাহীর সঞ্চয় মনন।
কাটারির ঘর্ষণে নগ্ন শরীরের উৎসকে, উদ্দীপনা দান নিঃশ্চুপে।
মুখচোরা চোর নিয়ে যায় কলসভর্তি আমার দীর্ঘদিন সঞ্চয়।
বাজারে বিকোয় চক্রবৃদ্ধি সুদের হার,
ওষ্ঠাগত তিষ্ঠানো দায়।
মুষ্টিতে বালির সমুদ্র,
সজোরে হস্তগত করতে নিরুপায়, ফসকে যায় চেনা শূন্যতায়।
দীর্ঘদিনের জমায়িত দীর্ঘশ্বাসের ধোঁয়াশায়। ছেনি হাতুড়ির প্রনয়াষ্পদ,
মিলিত গলদঘর্ম পন্ডশ্রম, ফুটাতে থেকে অসমাপ্ত,
অজন্তা ইলোরার দৈহিক নগ্ন খাঁজ, তবুও সৃষ্টির চলমান গতিশীলতা।
অহরহ প্রস্ফুটিত, সিক্ত কোমল ঘৃন্য অবসাদের পাঁকে,
কোলবালিশের উষ্ণতা বিনিময়,
অধরা ধরিত্রীর ওষ্ঠে প্রলেপ আগমনী রঙীন বসন্ত,
প্রতীক্ষায় চেয়ে থাকা উষ্ণতার কাপে স্পর্শ, এক গরাসে পরিধি বিস্তার নির্লিপ্ত ভোগে।
এঁদো গলি ধরাশায়ী, ওষ্ঠে প্রত্যাশা রূপকথা, রাজপথের শূন্যতায়, হুঙ্কার প্রগতিশীলতা। চোখে মুখে বিড়ম্বনা পারবো কি।
দমচাপা অস্বস্তি অর্ধস্বত্তা,
অক্ষম ধরাশায়ী চার কাঁধে,অগ্রসর অভিমুখে, চিতাভস্ম ছেঁড়া আগামী।
তবুও প্যাঁচালো সর্প গলায় চেপে জড়িয়ে শ্বাসরোধ।
আভূষণের ভ্রমে অসুখ,
বিষাক্ত নিঃশ্বাসে নীল হাওয়া,
খামবন্দী ঘেরাটোপে, উড়ো উড়ো চিঠি প্রত্যাশা, স্বর্নালী প্রিয় আগামী।।
লজ্জায় ঘেন্নায়, নতজানু এঁদোগলি, সম্পূর্ন পরিধি বিস্তার।
গুহ্য অভ্যন্তরে সংকোচনশীলতা, বাড়ির চৌহদ্দিতে, অবনত মস্তক।
স্বীকারোক্তি পুরানো দাসত্বের, শিকার।
চেনা শূন্যতায় শব্দের মিছিল,
বাকরুদ্ধ প্রতিবাদ, গলাফাটা চীৎকার, ট্যাক্সি, বাস যানজট মহূর্তে স্তব্ধ।অসমাপ্ত যাত্রা।ক্ষনিকের ইংলিশ আওড়ানো,
সমৃদ্ধি ফটাফট যান্ত্রিক গতি।
দিনশেষে সম্পূর্ন স্বস্তি,
মায়ের আঁচলে উপাদেয় ভক্ষণ, মাতৃভাষার ঠান্ডা সমীরন।
========০০০========
সুভাষপল্লী, কালীতলা, বর্ধমান।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন