জ‍্যোতির্ময় মুখার্জির গুছকবিতা - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

Sunday, April 15, 2018

জ‍্যোতির্ময় মুখার্জির গুছকবিতা


একটা নদীর জন্ম হবে বলে

চিলবিল গাছের নীচে ঘুমিয়ে আমি  
শম্বরের গন্ধ গায়ে মেখে
পিউ-কাঁহা পাখির ডাকে হৃদয়টাকে
দুহাতে নিংড়াবো গামছার মতো
বাসি কান্না কাঁদতে
নদী বয়ে গেছে
লাল নদী, নীল নদী
সাদা নদী, কালো নদী ওরা সব
তারপর হারিয়ে গেছে
বাঁক ফিরে গভীর জঙ্গলে

যেমন করে হারিয়ে যায় মেয়েছেলেগুলো
পুরুষালী লোমের অন্ধকারে

তারপর, শরীরে শরীর
দুরন্ত নদী ছুটন্ত সুখ
ছিনিয়ে নেবে
ছিনিয়ে নিতে জানে বলে

অসহ্য আয়েশে চোখ মুদে আসে
মিশে যায় গভীরে
অসহ্য ভালোবাসায়
আবার কোনো নদীর জন্ম হবে বলে
                 (১৩/০১/২০১০)

সন্ধ্যাবেলার প্রথম দুপুর





সন্ধ্যাবেলার প্রথম দুপুর
পথ অফুরান ছকের বাইরে
নিঃশব্দ জলরব তবু
সবুজ অরন্যে জ্বলে হায়নার চোখ

ছেঁড়াকাঁথার গল্প শোনো
লাল মাটির পথ বেয়ে
বীণায় আমি যে গান ধরেছিলাম
সে নয়তো শুধু স্বগত সংলাপ 
পোকালাগা নাগরিকতা
চারণভূমি কোথায় পাই?
তবু আছে সে নয়নতারা
হিয়া আজ পরবাস

মাপা হাসি চাপা কান্না
পায়ের তলায় সর্ষে
চলমান আমি তারপর?
আমার যে একটা দেশ চাই
আয় মন বেড়াতে যাবি? 
পরবাসী হয়ে অবন্তীনগর
বা সেই দারুচিনি দ্বীপ? 
হলুদ রোদ্দুর আছে সেখানে
একটা নারীর পুনর্জন্ম হয়
                        (২০/০৩/২০১০)


যদি মেঘ ভেঙে রোদ ঝরে...

হঠাৎ ঝাঁকুনি, থমকে বাস
কর্কশ চামড়া মাখনের স্পর্শও পেল হঠাৎ
ক্ষণিকের তবু এই ক্ষণটুকু ফেলে দেবো কোন দুঃখে
আজকের সত্যটুকু কালকের স্মৃতি হোক, ক্ষতি কি? 
হাসিমুখে তার দিকে তাকালাম,
রাগান্বিতার দৃষ্টিটা মনে ধরলো না!
কি আর করা যাবে!
জানলায় ফিরলাম
যদি মেঘ ভেঙে রোদ ঝরে

মরণ!
জানলা জুড়ে বাপুজী
লাঠি হাতে অর্ধনগ্ন মানুষটা এগিয়ে চলেছে, কেন ? 
যদি মেঘ ভেঙে রোদ ঝরে? 

স্ট্যাচুটার মাথায় বসে
একটা  মস্ত বড় শকুনও ভাবছিল বোধহয় সেই কথা
নিচে ভিখারি মায়ের যীশু
যদি মেঘ ভেঙে রোদ ঝরে!
                                     (০৪/১০/২০০৭)
******************************************** 



জ্যোতির্ময় মুখার্জি

মাহাতা - পূর্ব বর্ধমান

No comments:

Post a Comment