একটি সাক্ষাৎকার
কুয়াশাঘন পর্দার ওপারে একটি অবয়ব। পেছনে তার অনন্ত তেজরশ্মি। চোখ ঝলসানো আলো আর কুয়াশার সমাপাতনে তার অবয়বটা দেখা গেলেও, মুখটা ঠাহর করা গেল না।
যেন কত সহস্র আলোকবর্ষের ওপার থেকে আমারই নাম ধরে ডাকছে সে।
কুয়াশার পলেস্তারা সরিয়ে এগোতে থাকি, কিন্তু সামনে যে গভীর খাদ! থমকে দাঁড়াই সেই খাদের সামনে। অবয়বটি যেন অধরাই থেকে যায়।
আমার এই প্রচেষ্টা দেখে সে বলে ওঠে,
"এভাবে আমায় তো ছোঁয়া যায় না বন্ধু। আমায় ছোঁবার কোনো শর্টকাট নেই। অনেকগুলো পথ পেরিয়ে তবেই পৌঁছোতে পারবে আমার ঠিকানায়। প্রথম পথের নাম- 'সদিচ্ছা সড়ক'। সেই পথ পেরিয়ে পাবে
'সংকল্প সরণি'। তারপর 'মনোযোগ মার্গ'। আর সব শেষে 'পরিশ্রম প্রচর'। আর সেই পথের শেষেই আমার সাকিন। তবে একটা কথা,
এই প্রতিটি পথে চলতে চলতে যতক্ষণ আমার এই অবয়ব দেখতে পাবে, ততক্ষণ জানবে তুমি সঠিক পথেই আছ।"
অবাক হয়ে প্রশ্ন করি,
"কে তুমি?"
উত্তর এল,
"চিনতে পারলে না আমায়? আমি যে স্বপ্ন।"
আমি নিজের হাতে চিমটি কেটে যাচাই করতে যাব,
এমন সময় স্বপ্ন আমায় প্রশ্ন করল, "ও কী করছ তুমি?"
বললাম,
"যাচাই করছি আমি এখনও জেগে আছি কিনা।"
অট্টহাসিতে ফেটে পড়ল স্বপ্ন,
"বন্ধু,
আমি কোনো অলীক কল্পনা নই যে ঘুমিয়ে দেখতে পাবে আমায়। আমি বাস্তব। তোমার মতোই বাস্তব। শুধু শরীর নয় সমস্ত মন, সমস্ত সত্তা জাগ্রত থাকলে তবেই আমায় দেখা যায়। ছোঁয়া যায়। স্বপ্ন-সাকিনে পৌঁছোতে পারা যায়। আর সেইখানেই তুমি সন্ধান পাবে সাফল্যসোপানের সুড়ঙ্গতোরণ। এসো বন্ধু, এসো। ছুঁয়ে দ্যাখো আমায়। আমিও তোমার ছোঁয়া পাবার অপেক্ষা করছি। এই দ্যাখো আমিও হাত বাড়িয়েই রেখেছি। পথগুলো দ্রুত অতিক্রম করে ছুট্টে চলে এসো বন্ধু। ছুঁয়ে দ্যাখো আমার অবয়ব। আমি মোটেই অধরা নই।"
*******************************
©প্রশান্ত সেন (সাত্যকি)
নজরুল পার্ক, পূর্ব নারায়ণতলা,
নজরুল পার্ক, পূর্ব নারায়ণতলা,
বাগুইআটি, কলকাতা
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন