স্বপ্নের উজ্জীবন
এখনও স্বপ্ন দেখি ? এখনও
স্বপ্ন দেখি! আসলে কি এক বৈপরীত্যের টানাপোড়েন চলছে মনের মধ্যে! একি জীবনের পাঠ নিতে
নিতে, যাপনের পর্বান্তরের মধ্য দিয়ে যেতে যেতে থমকে যাওয়া? আবাল্যরচিত গৃহীত বিশ্বাসের
সবুজ মাঠে হঠাৎ কী অপরিচিত কুয়াশার ছায়া ঘনালো? নাকি কতিপয় মানুষের
স্খলন এমন থমকে দেয় আমার সপ্তডিঙ্গা মধুকরের জায়মানতা? কিন্তু,তা কেন হতে দেওয়া?
যুগে যুগে কালে কালে পৃথিবী
দেখেনি কী অজস্র সূর্য গ্রহণ? থমকে থেমে গেছে কী তার গতি, তার দিনরাতের নির্দিষ্ট
কক্ষপথ পরিভ্রমণ? নিধন যজ্ঞের শেষে আজও চেরি ফুল ফোটে সেই সূর্যোদয়ের
দেশে!
কেন আসে দৃশ্যান্তরের
মধ্য দিয়ে এ বিশ্বের অপরূপ ঋতু পরিক্রমণ? কেন হাসে শুক্লপক্ষের
চাঁদ? নীলাম্বরি আকাশে সাদা মেঘের সঞ্চরণ আর মাটির বুকে ছলাত ছল ঢেউ কেন এমন টানে? কেন শত শত বছর ধরে মাটির
বুকে ফসলের বন্যা আনেন কৃষক, কেন তাঁরা মায়ের মতো নিজস্ব শ্রম ও ঘামের বিনিময়ে খাবার
যোগার করেন লক্ষ মানুষের?
আসলে অকথিত কি এক ভালোবাসায়
আমরা জড়িয়ে আছি পরস্পর। এ জগত এ জীবন প্রতিনিয়ত ভালোবাসতেই শেখায় নীরবে। তাই এত ফুল ফোটে ,পাখি
গায়। নর্তকের পায়ে বেজে ওঠে অপূর্ব ঘুঙুর। পদ্মের বুকে দোলে শিশির
বিন্দু। শরদে, সেতারে বেজে ওঠে ধুন। গায়কের কণ্ঠে অনুরণিত সুর আমাদের বুকে ঢেউ তোলে। কীর্তনের আসরে শ্রোতার
চোখ ভেসে যায় মায়ায়, প্রেমে।কবি, লেখক অক্ষরের চাষে মগ্ন হ'ন!পরিব্রাজক বেরিয়ে
পড়েন চার দেওয়ালের মায়া ছেড়ে মাটি মায়ের অপরূপ মুখখানি দেখবার জন্যে।শিল্পীর
অতন্দ্র তুলি জীবনের সব রঙ রূপ রেখায় সাজিয়ে তুলতে চায় ক্যানভাস।সীমান্তপ্রহরী সে
তরুণ মাটি-মাকে ভালোবেসেই বরফ শীতল পাহাড়চূড়ায়, দগ্ধ মরুপ্রান্তরে
অতন্দ্র প্রহরায়! হ্যাঁ ভালোবাসাই মন্ত্র, সে মন্ত্রই জাগিয়ে রাখে
আমাদের মানবিকতার মহামূল্যবান বোধ। সেই অনাদি অনন্ত বৃক্ষ যা ছায়া আর মায়ায় জড়িয়ে রাখবে, শেখাবে উজ্জীবনের মন্ত্র
বারংবার। ফিনিক্সের মতোই সমস্ত মানবতা বিরুদ্ধ গ্লানিময় ছাই ঝেড়ে ফেলে উড়ে আসবো, ভালোবাসবো আর প্রিয়তম এ
গ্রহের বাগানে ফুটে উঠবে অজস্র ফুলের হাসি। উত্তরপুরুষের জন্যে
সাজিয়ে রেখে যাবো অনন্ত প্রেমময় মাটির সংলাপ।
------------------------------------------------------------
তনুশ্রী
পাল।
জলপাইগুড়ি।
সংক্ষিপ্ত লেখাটি ভালো লেগেছে।
উত্তরমুছুনএই মন্তব্যটি লেখক দ্বারা সরানো হয়েছে।
উত্তরমুছুন