'কোলাহল তো বারণ হলো '
মানস কুমার সেনগুপ্ত
আমদাবাদের ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার বীভৎসতার রেশ কাটতে না কাটতেই , উত্তরাখণ্ডে কেদারনাথ থেকে ফেরার সময় কপ্টার ভেঙে মৃত্যু ঘটলো ৭ জনের। ওই দুর্ঘটনা সহ ৩৯ দিনে ওই অঞ্চলের কেদারনাথ ও উত্তরকাশী সহ আরও চারটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। ৮ ই মে উত্তরকাশী অঞ্চলে কপ্টার দুর্ঘটনায় মারা গেছেন আরও ৬ জন।
স্পিরিচুয়াল ট্যুরিজমের নামে ব্যাপক প্রচার দিয়ে রামমন্দির প্রতিষ্ঠার পর কুম্ভমেলায় ওই একই প্রচারের ঢক্কানিনাদে মানুষের পূণ্য অর্জন যেন হুজুগে পর্যবসিত হলো। মেলা প্রাঙ্গণ এবং ট্রেন যাত্রায় পদপিষ্ট হয়ে অকালে অহেতুক মৃত্যু হলো বহু মানুষের।
হিমালয়ের ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চল দিয়ে নতুন রাস্তা বানিয়ে বিখ্যাত চারধাম যুক্ত করা হয়েছে। তরিঘড়ি পূণ্য অর্জনের তাড়নায় পকেটে পয়সা থাকলেই ৯ -১০ ঘন্টার হাঁটা পথ কয়েক মিনিটে পৌঁছে যাওয়া যাচ্ছে। কোন রকম পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই কপ্টার যাত্রার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। ২০১৩ সালের ভয়াবহ কেদারনাথ বিপর্যয়, কিছুদিন আগের যোশীমঠ বিপর্যয় বোধহয় আমরা ভুলে গেছি।
সম্প্রতি হিমালয়ের বিখ্যাত হেমকুনড তীর্থ এবং ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ারস এর হাঁটা পথে রোপওয়ে সংযোগ এর প্রস্তাব রূপায়ণের কথা উঠেছে। এখানে চূড়ান্ত যাত্রা সময় সংক্ষেপের সুবিধার কথাই ভাবা হচ্ছে। এই পথে গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থল রুদ্রপয়াগ পর্যন্ত ট্রেন সংযোগের কথাও ভাবা হচ্ছে।
কিন্তু এই বিপুল চাপ কি হিমালয়ের ওই অঞ্চল নিতে পারবে। ১৯৮৫ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত হিমালয়ের বেশ কিছু অঞ্চলে পদযাত্রার সৌভাগ্য হয়েছিল। তখন এত সুযোগ -সুবিধার কথা ভাবাই যেত না। তাই পরিশেষে একটা কথা বলি, পূণ্য অর্জন বা যাত্রা স্বাচ্ছন্দ্য খুঁজতে গিয়ে আমরা হিমালয়ের এই অঞ্চলের ধ্বংসকেই তরান্বিত করছি না তো? পাহাড় বা প্রকৃতি কিন্তু কাউকে ক্ষমা করে না।
=====================
মানস কুমার সেনগুপ্ত, ১৭/৮, আনন্দ মোহন বসু রোড, দমদম, কলকাতা ৭০০০৭৪.মোবাইল-৮৯০২২১৭৭৮০
No comments:
Post a Comment