পূনর্জন্ম
শংকর ব্রহ্ম
"কল্পিত স্বর্গে কল্পিত সুখ আছে কিনা জানা নেই, জানবার উপায়ও নেই। তাই, প্রত্যক্ষ সুখ ছেড়ে,বিকল্প সুখের সন্ধানে দু'হাত তুলে ছোটা-এক রকম অসুখেরই লক্ষণ।" - রুদ্রনাথ।
মৃত্যু একটি স্বাভাবিক প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া যা সকল প্রাণীর জন্য অবধারিত। মৃত্যু একটি জটিল প্রক্রিয়া, যার অনেক দিক রয়েছে। এছাড়া মৃত্যুর আর কোনও ব্যাখ্যা হয় বলে মনেহয় না। যে যাই বলুক সবই তাদের অর্জিত ধারণার ফলশ্রুতি মাত্র তার বেশি কিছু নয়। ইনি বলেছেন,তিনি বলেছেন বলে, তার কথাগুলোই যে চিরসত্য, সে'রকম ভাবার কোনও কারণ নেই। জীবিত কেউই মৃত্যু সম্পর্কে কিছু বলতে পারে না। তারা, যা বলে তা তার উর্বর মস্তিস্কের কল্পনা কিংবা জীবনের অর্জিত ধারণার জ্ঞান মাত্র। আর কিছু দিন অপেক্ষা করুন, আমি নিজে তার স্বাদ গ্রহণ করে আসি, তারপর আপনাদের কাছে আসল সত্যটা তুলে ধরব। এই কথাটা আমার মুখ
থেকে বেরিয়ে আসার কারণ, আমার গোপর সত্তায় জন্মান্তরবাদের বিশ্বাসের বিষবৃক্ষের বীজ, সুপ্ত অবস্থায় ছিল বলেই, ভাবের প্রকাশে তা অঙ্কুরিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছে।
আমরা সকলেই জাতকের কথা শুনি, কিন্তু কোন জাতকের পূর্ণাঙ্গ জীবনের কথা শুনি না। সেটুকুই আমাদের নির্বচিত করে জানানো হয়, যাতে আমাদের বিস্ময় আর কৌতূহল বজায় থাকে। তার বেশি নয়।
আমার তো মনে হয়.......
" মৃত্যুই শেষ কথা
তারপর কিছু নেই আর
এই কথা বলে এক সেয়ানা পাগল
করে দিয়ে গেল সব হিসাবের গোল
যতদিন বেঁচে আছ পৃথিবী তোমার
তারপরে কিছু স্মৃতি থাকে শুধু
আর কিছু থাকে নাকি তার?
তাই এত জীবনের কথা বলা
কবিতায় গানে বারবার।
বেঁচে থাকে যারা
তারাই তো জীবনের গান গাইতে পারে
শব তা পারে না
অবশ্য সে কারও ধারও ধারে না
জীবনের মতো সে তো বাধ্য নয় কারও
মৃত্যুর পরে শুধু
থেকে যায় কিছু স্মৃতি তারও
সব স্মৃতি
মনে ধরে রাখা যায় নাতো কারও
কিছু স্মৃতি থাকে জাগরুক
মাঝে মাঝে মনে পড়ে
মনে পড়ে বার বারও।"
পূনর্জন্ম আছে বলে, মানুষ বিশ্বাস করে, মনে মনে শান্তি পায়, তাই সে বিশ্বাস করতে শুরু করে গীতার সেই বহুল প্রচলিত অমোঘ বাণী,
" বাংসাসি জীর্ণানি যথা বিহায়,
নবানি গৃহ্নাতি নরোহপরাণি
তথা শরীরণি বিহায় জীর্ণান্যন্যানি
সংযাতি নবানি দেহী। (গীতা - ২/২২.)
'আত্মার মৃতূু হয় না, সে শুধু পুরনো খোলস বদলে অন্য খোলোশ ধারণ করে।' এটা বিশ্বাস করতে মানুষের ভাল লাগে, তাতে মন সায় দেয়। তার চেয়ে বেশি কিছু নয়।
পরলোকে কি আছে বা নেই, তা নিয়ে পরমায়ু ক্ষয়ের চেয়ে ; ইহলোকে কি করে পরমায়ু অবক্ষয়ের থেকে রক্ষা পাওয়া যায়, সে ভাবনা অনেক বেশি দরকারী।
মানুষের যদি পূনর্জন্ম থাকত, তবে যতগুলো মৃত্যু ততগুলি আত্মারই পূনর্জন্ম প্রাপ্তি ঘটা স্বাভাবিক, তার বেশি সম্ভব নয়, তবে পৃথিবীর জনসংখ্যা এত বাড়ছে কি করে? অনেকে হয়তো এর উত্তরে অযৌক্তিক যুক্তি দেখাতে চাইবেন, অন্যান্য প্রাণীরা মৃত্যুর পরে, পুণ্যফলে মানব আত্মা ধারণ করেন, সেটা মোটেই বিশ্বাস যোগ্য নয়।
-----------------------
SANKAR BRAHMA.
8/1, ASHUTOSH PALLY,
P.O. - GARIA,
Kolkata - 700 084.
No comments:
Post a Comment