প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী - নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

Breaking

নবপ্রভাত মাসিক ব্লগ-সাহিত্যপত্র

NABAPRAVAT : A Monthly Bengali Literary Blogzine.

Sunday, July 20, 2025

প্রবন্ধ ।। ভিনগ্রহীদের সন্ধানে ।। শ্যামল হুদাতী

ভিনগ্রহীদের সন্ধানে 

শ্যামল হুদাতী 



ইতিহাসের শুরু থেকে বারবার মানুষকে একটা প্রশ্ন কুঁড়ে কুঁড়ে খায় – এই মহাবিশ্বে আমরা কি একা? পৃথিবীর মতো আরও গ্রহ রয়েছে, যেখানে মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীরা বাস করে – এই সম্ভাবনা বরাবর মানুষকে মুগ্ধ করেছে। আমাদের প্রত্যেকের জীবনের কখনও না কখনও এই ভাবনা এসেছে। দীর্ঘ কয়েক দশকের গবেষণার পরও, এই বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। জেমস ওয়েব মহাকাশ টেলিস্কোপ, বহু দূরের এমন কিছু গ্রহের সন্ধান দিয়েছে, যেগুলিতে প্রাণ থাকতেই পারে। তবে, নিশ্চিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ভিনগ্রহীদের খুঁজতে বহু দূরে যাওয়ার কোনও দরকার নেই। তারা এই পৃথিবীতেই মানুষের ছদ্মবেশে মানুষের মধ্যেই বসবাস করতে পারে।

আমরা ভিনগ্রহীদের যেমন কল্পনা করি, এরা তার থেকে আলাদা। এরা অনেকটাই, দেবদূতদের মতো। মানব জগতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক প্রযুক্তিগত নয়, বরং জাদুকরি।

মহাকাশে সৌরজগতের গ্রহ পৃথিবী ছাড়া অন্য কোথায় প্রাণ রয়েছে কি না তা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। একই সঙ্গে পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনো গ্রহে মানুষ বসবাস করতে পারবে কি পারবে না তা নিয়েই বিজ্ঞানীদের গবেষণার শেষ নেই। 

দশকের পর দশক ধরে সেই নিয়ে গবেষণা চলছে। নানা রকম দাবি-দাওয়াও সামনে এসেছে এ পর্যন্ত। এবার এই বিষয়ে বড় ঘোষণা করলেন চিত্র পরিচালক সাইমন হল্যান্ড। আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার হয়ে কাজ করেছেন তিনি। বিবিসির হয়ে তৈরি করেছেন তথ্যচিত্রও। মহাশূন্যে ভিনগ্রহীদের অস্তিত্বের খোঁজ মিলেছে বলে এবার দাবি করলেন তিনি।

সাইমন জানিয়েছেন, অক্সফোর্ডের একটি গবেষণায় ভিনগ্রহীদের সন্ধান মিলছে। তবে তারা মানুষ নন। বরং আমাদের ছায়াপথে বসবাসকারী, ভিনগ্রহী শক্তি।

সাইমনের দাবি, এই মুহূর্তে বিশদ তথ্য সংগ্রহে ব্যস্ত তাবড় সংস্থা। যেকোনো সময় আনুষ্ঠানিক ভাবে ভিনগ্রহীদের খোঁজ পাওয়ার ঘোষণা হতে পারে। সাইমন জানিয়েছেন, অক্সফোর্ডের প্রধান পদার্থবিদ অ্যান্ড্রু সিমনের নেতৃত্বে ভিনগ্রহীদের কাছ থেকে সিগনাল পাওয়া গিয়েছে। একটি অলাভজনক সংস্থা এই গবেষণায় সহায়তা জোগাচ্ছে। 

এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে যে তথ্য সামনে এসেছে, সেই অনুযায়ী, পৃথিবী থেকে ৪.২ আলোকবর্ষ দূরে, প্রক্সিমা সেনটরি নক্ষত্র সংলগ্ন অঞ্চল থেকে সিগনাল এসে পৌঁছেছে বিজ্ঞানীদের কাছে। ২০১৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার পার্কস রেডিও টেলিস্কোপের ব্রেকথ্রু লিসন ক্যান্ডিডেট ১ (BLC-1) ওই সিগনাল ধরতে সফল হয়। সেই নিয়ে এতদিন ধরে গবেষণা চলছিল। কোথা থেকে ওই সিগনাল এসেছিল, তার উৎস খুঁজছিলেন বিজ্ঞানীরা। ভিনগ্রহীদের কাছ থেকে ওই সিগনাল আসেনি বলে ২০২১ সালে একদল বিজ্ঞানী সিদ্ধান্তে উপনীত হন। কিন্তু গবেষণায় যে সমস্ত তথ্য ক্রমশ হাতে এসে পৌঁছায়, তাতে অবস্থান বদলাতে শুরু করেন তারা।

একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে সাইমন জানিয়েছেন, BLC-1 যে সিগনালটি ধরতে সক্ষম হয়, তা সাধারণ কোনও শব্দ নয়। বরং সবদিক থেকে ওই সিগনাল অনন্য। একটিমাত্র উৎস থেকে ওই সিগনাল এসে পৌঁছয়া পৃথিবীতে।  মানবজাতির ব্যবহার ব্যাতীত কোনও প্রযুক্তির মাধ্যমে সেটি পাঠানো হয়েছে। 

এর আগে, ২০২২ সালেও ভিনগ্রহীদের অস্তিত্ব নিয়ে এমন শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। চীনা বিজ্ঞানীরা তখন জানান, Five-Hundred-Metre Aperture Spherical Telecsope (FAST)-এ ভিনগ্রহীদের পাঠানো সিগনাল ধরা পড়েছে। পরবর্তীতে সেই মন্তব্য থেকে সরে দাঁড়ান তারা। 

তাই সাইমনের ঘোষণায় শোরগোল পড়ে গেলেও, অতীত স্মরণ করে সাবধানীও সকলে। যদিও সাইমনের দাবি, এবার আর কোনও বিভ্রান্তি নেই। তার দাবি, বিষয়টি নিয়ে প্রতিযোগিতা চরমে। হতে পারে গবেষণারত বিজ্ঞানীদের চেয়ে ঢের আগে চীনা বিজ্ঞানীরা তথ্যপ্রমাণসহ ভিনগ্রহীদের অস্তিত্বের প্রমাণ তুলে ধরবেন পৃথিবীবাসীর সামনে।

প্রাক-আধুনিক লেখকরা সাধারণত ধরে নেন বহির্জাগতিক "জগত" জীবিত প্রাণীদের অস্তিত্ব আছে।   কুসার নিকোলাস 1440 সালে লিখেছিলেন যে মহাকাশে দৃশ্যমান অন্যান্য স্বর্গীয় বস্তুর মতো পৃথিবী "একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র"; যা বায়ুমণ্ডলের বাইরের স্তরে "অগ্নিময় উজ্জ্বলতা"।  তিনি তত্ত্ব দিয়েছিলেন যে সমস্ত বহির্জাগতিক সংস্থাগুলি সূর্য সহ মানুষ, গাছপালা এবং প্রাণীদের দ্বারা বসবাস করতে পারে। দেকার্ত লিখেছিলেন যে নক্ষত্রগুলি "বুদ্ধিমান প্রাণী" দ্বারা বাস করে না তা প্রমাণ করার কোন উপায় ছিল না, তবে তাদের অস্তিত্ব ছিল অনুমানের বিষয়।

বায়ুমণ্ডলীয় গঠন এবং বহির্জাগতিক সংস্থাগুলির কথা বিবেচনা করলে , বায়ুমণ্ডলের কঠোর অবস্থা এবং অসমান রাসায়নিক গঠনের কারণে, প্রাণ-প্রাচুর্যপূর্ণ পৃথিবীর সাথে তুলনা করলে বহির্জাগতিক জীবন বাস্তবের চেয়ে বেশি অনুমান বলে মনে হতে পারে । যাইহোক, পৃথিবীতে অনেক চরম এবং রাসায়নিকভাবে কঠোর ইকোসিস্টেম রয়েছে যেগুলি জীবনকে সমর্থন করে এবং প্রায়শই পৃথিবীতে জীবনের উৎস বলে অনুমান করা হয়। 
২০ শতকের মাঝামাঝি থেকে, বহির্জাগতিক জীবনের লক্ষণগুলি সন্ধানের জন্য গবেষণা হয়েছে । অনুসন্ধানের বিভাগের উপর নির্ভর করে, পদ্ধতিগুলি টেলিস্কোপ এবং নমুনা ডেটা বিশ্লেষণ থেকে শুরু করে যোগাযোগ সনাক্ত এবং প্রেরণের জন্য ব্যবহৃত রেডিও পর্যন্ত কাজে লাগানো হয়েছে।

গবেষণায় বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী বৈজ্ঞানিক ধারণাগুলিকে যোগাযোগ করা হয়েছে। বিভিন্ন সম্ভাবনার কল্পনা  এবং বহির্জাগতিক জীবনের প্রতি জনসাধারণের আগ্রহ ও দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে অনুসন্ধান করা চলছে। কেউ কেউ বুদ্ধিমান বহির্জাগতিক জীবনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করার জন্য আক্রমণাত্মক পদ্ধতি গুলিকে বেছে নিয়েছিল। 

বিজ্ঞানীদের ৪০ বছর অপেক্ষার পালা শেষ হতে চলেছে। শীঘ্রই ভিনগ্রহীদের থেকে একটি বার্তা পাওয়ার আশা করছেন তাঁরা। বার্তাটি জাপানি জ্যোতির্বিজ্ঞানী মাসাকি মরিমোটো এবং হিসাশি হিরাবায়াশি এমন একটি নক্ষত্রের কাছে পাঠিয়েছিলেন, যেখানে কোনও গ্রহ নেই বলে মনে হয়। মানুষ কেমন প্রাণী এবং পৃথিবীতে জীবন কীভাবে কাজ করে তা দেখানোর উদ্দেশ্যে বার্তাটি তৈরি করা হয়েছিল এবং এটি মহাকাশে পাঠানো হয়েছিল। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির একটি টেলিস্কোপ ব্যবহার করে এটি পাঠানো হয়েছিল ১৬.৭ আলোকবর্ষ দূরে। ১৫ অগস্ট, ১৯৮৩ সালে এই ঘটনাটি ঘটে। 

এখন নতুন কী হচ্ছে? হালে হিয়োগো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিনিয়া নারুসাওয়ার নেতৃত্বে এক দল একটি বড় জাপানি টেলিস্কোপ ব্যবহার করে চেষ্টা করছে কিছু বার্তার উত্তর ফেরত পাওয়া যাচ্ছে কি না। তাঁরা ২২ অগস্ট এই মহাকাশ থেকে  আসা বার্তাগুলি গ্রহণ করেছেন। এবার তার বিশ্লেষণ করে বোঝা যাবে, কোনও ভিনগ্রহীর অস্তিত্ব আছে কি না। 

শিনিয়া নারুসাওয়া বলেছিলেন, তিনি আশাবাদী যে ভিনগ্রহীরা কোথাও না কোথাও আছে এবং এই বার্তাটি সত্যিই এলিয়েনদের দিকেই পাঠানো হয়েছে। 1990 এর দশক থেকে বিপুল সংখ্যক এক্সোপ্ল্যানেট সনাক্ত করা হয়েছে, 'আল্টেয়ারের এমন একটি গ্রহ থাকতে পারে যার পরিবেশে জীবন টিকে থাকতে পারে,' এমনই জানিয়ে ছিলেন জাপানি সংবাদপত্র দ্য আসাহি শিম্বুনকে

২০০৮ সালে, হিসাশি হিরাবায়াশি স্বীকার করেছিলেন যে, মদ্যপান করতে করতেই তাঁদের দু'জনের মাথায় এই রকম একটি পরিকল্পনা আসে। কিন্তু পরে ভেবেচিন্তে দেখেন, এমন একটি বার্তা পাঠানো সত্যিই সম্ভব এবং তা থেকে বোঝা সম্ভব এই বিরাট বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে আমরা সত্যিই একা, নাকি আমাদের সঙ্গী আরও কেউ আছে। 

ইতিহাসের শুরু থেকে বারবার মানুষকে একটা প্রশ্ন কুঁড়ে কুঁড়ে খায় – এই মহাবিশ্বে আমরা কি একা? পৃথিবীর মতো আরও গ্রহ রয়েছে, যেখানে মানুষের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীরা বাস করে – এই সম্ভাবনা বরাবর মানুষকে মুগ্ধ করেছে। আমাদের প্রত্যেকের জীবনের কখনও না কখনও এই ভাবনা এসেছে। দীর্ঘ কয়েক দশকের গবেষণার পরও, এই বিষয়ে কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। জেমস ওয়েব মহাকাশ টেলিস্কোপ, বহু দূরের এমন কিছু গ্রহের সন্ধান দিয়েছে, যেগুলিতে প্রাণ থাকতেই পারে। তবে, নিশ্চিত কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, ভিনগ্রহীদের খুঁজতে বহু দূরে যাওয়ার কোনও দরকার নেই। তারা এই পৃথিবীতেই মানুষের ছদ্মবেশে মানুষের মধ্যেই বসবাস করতে পারে।

আমরা ভিনগ্রহীদের যেমন কল্পনা করি, এরা তার থেকে আলাদা। এরা অনেকটাই, দেবদূতদের মতো। মানব জগতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক প্রযুক্তিগত নয়, বরং জাদুকরি।

'আমি ভিনগ্রহীহের অস্তিত্বে বিশ্বাস করি। কিন্তু এটাও জানি, তাদের খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন,' বলেছিলেন ওই বিজ্ঞানী হিরাবায়াশি। তবে তিনি হাল ছাড়তে রাজি নন। তাঁর বক্তব্য, চেষ্টা চালালে এমন কিছুর সন্ধান পাওয়া যাবেই। আর এবার তাঁর প্রশ্নের উত্তরও তিনি পেতে চলেছেন বলে তিনি আশা করেন।

যারা ভাবছেন পৃথিবী ছেড়ে দিয়ে অন্য গ্রহে পাড়ি দেবেন তাদের জন্য সুখের খবর। বিজ্ঞানীদের হাতে এসেছে অবাক করা সুপার আর্থ। এটি পৃথিবী থেকে ১৫৪ আলোকবর্ষ দূরে রয়েছে। এর আকার পৃথিবীর প্রায় দ্বিগুণ। শুধু তাই নয় এতে রয়েছে প্রচুর জল। ফলে সেখান থেকে এই গ্রহে থাকতে বেশি সমস্যা হবে না পৃথিবীবাসীর।

নাসার শক্তিশালী টেলিস্কোপ দিয়ে এই গ্রহটিকে দেখতে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। মনে করা হচ্ছে এর বয়স ৭.২ বিলিয়ন বছর। আর এত বছর ধরে এখানে জল থাকার মানে হল এখানে প্রাণ থাকলেও থাকতে পারে। এটিকে ভিনগ্রহের প্রাণীদের আস্তানা হিসেবে চিহ্নিত করেছে নাসার বিজ্ঞানীরা। 

এই গ্রহের নাম দেওয়া হয়েছে টিওআই ১৮৪৬। এর ঝকমকে ছবি মন কেড়েছে বিজ্ঞানীদের। ঠিক মহাকাশ থেকে পৃথিবীকে যেমন উজ্জ্বল লাগে তেমনই এই গ্রহের ছবি সকলকে অবাক করে দিয়েছে। যদি এখানে জল না থাকত তাহলে এই গ্রহের এমন রূপ হত না। এই গ্রহে প্রাণ থাকার প্রায় সমস্ত পরিবেশ রয়েছে। ফলে সেখান থেকে মনে করা হচ্ছে এখানেই ভিনগ্রহের প্রাণীরা রয়েছেন।

এই গ্রহকে নাসার বিজ্ঞানীরা সুপার আর্থ বলে দাবি করছেন। যদি এখানে ভিন গ্রহের প্রাণী থাকে তাহলে তারাও হয়তো সেখান থেকে পৃথিবীকে দেখেছে। আর যদি সেটাই সত্যি হয় তাহলে এই দুই গ্রহের মধ্যে কোন নতুন সমীকরণ তৈরি হবে সেটাই এবার দেখার।

তবে এখানে খানিকটা হলেও চিন্তায় পড়েছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। তারা মনে করছেন যদি সেখানে ভিনগ্রহের প্রাণীরা থাকে আর তারা যদি পৃথিবীতে আক্রমণ করে তাহলে সেখান থেকে এখানে তৈরি হতে পারে বিরাট সমস্যা। নতুন এমন জলের গ্রহ দেখে বিজ্ঞানীরা যেমন খুশি হয়েছেন ঠিক তেমনই তাদের মাথায় এবার জুটেছে নতুন চিন্তা। তাহলে কী এবার মানুষের সঙ্গে এলিয়ানদের যুদ্ধ শুরু হবে। শেষে কে থাকবে সেটাই এবার বিরাট প্রশ্ন।

------------------------------------

শ্যামল হুদাতী 
৩৫৭/১/১৩/১, প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড 
কলকাতা - ৭০০০৬৮






No comments:

Post a Comment